• জাতীয়

৮৭৮ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে রংধনু গ্রুপের বিরুদ্ধে মামলা

  • জাতীয়

ফাইল ছবি

নিউজ ডেস্ক : রংধনু গ্রুপের বিরুদ্ধে ভুয়া কার্যাদেশ দেখিয়ে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তা আত্মসাতের অভিযোগ এনেছে  পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তারা বলছে, ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে ২৭০ কোটি টাকা ও ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে ২০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে প্রতারণামূলকভাবে আত্মসাৎ করা হয়েছে। এছাড়া ইসলামী ব্যাংক বারিধারা শাখা থেকে ভুয়া মূল্যায়ন কপি তৈরি করে অজ্ঞাতনামা আসামিদের সহযোগিতায় সম্পত্তির মূল্য দেখিয়ে ৪০০ কোটি টাকা ঋণ নেয় রংধনু গ্রুপ। ৮৭৮ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে আজ বৃহস্পতিবার গ্রুপটির বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং মামলা করেছে সিআইডি। 

আজ সিআইডির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রংধনু গ্রুপের মালিক রফিকুল ইসলাম এবং তার স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অনুসন্ধান শুরু করেছে সিআইডি। এতে উঠে আসে, রংধনু বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেড বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে থেকে জমি ক্রয় বা পাওয়ার অব অ্যাটর্নি গ্রহণ করে বিক্রয় করে। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রংধনু গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কাউসার আহমেদ অপু সমকালকে বলেন, ঋণ নেওয়ার জন্য ভুয়া মূল্যায়ন কপি তৈরি করার প্রশ্নই উঠে না। সম্পদের বিষয়ে ভেটিং করে থাকে ব্যাংক। তারাই ভেটিং করে ঋণ দিয়েছে। ঋণ নিয়ে অন্য কোথায় বিনিয়োগ করলে  সেখানে পাচারের প্রসঙ্গ আসত। উদ্দেশ্যমূলকভাবে সিআইডি এই অভিযোগ এনেছে। আমার কাছে তথ্য–প্রমাণ চাইলে সব সিআইডিকে উপস্থাপন করব।

তিনি আরও বলেন, ২০১১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডে পড়াশোনার সময় কাজ করে কিছু আয় করেছি। তখন অনেকের মতো বিট কয়েনের মাধ্যমে সামান্য লেনদেন হয়েছে। সেটি ওই সময়ের কথা হিসাব করলে এক লাখ ২০ হাজার ডলার হবে। তবে বিদেশে কোনো অর্থ পাচার করেনি। কোনো বিনিয়োগও নেই।

সিআইডি বিজ্ঞপ্তিতে বলছে, বাংলাদেশ পুলিশ অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতির কাছে রফিকুল ইসলামের ছেলে কাউসার আহমেদ অপু এবং মেহেদী হাসান দিপু ২০২২ সালের ৮ মার্চ বিভিন্ন দলিলে ৭.৫৭৫১ একর জমি বিক্রয় করে। তপশিলভুক্ত এই জমির মধ্যে ২০২২ সালের ১ জুন ৬.৩৩৭৫ একর জমি কাউসার আহমেদ অপু ও মেহেদী হাসান দিপু বিভিন্ন দলিলে বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ইস্ট ওয়েস্ট প্রোপার্টি লিমিটেডের কাছে পুনরায় বিক্রয় করে ৫ কোটি ৭৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা প্রতারণার মাধ্যমে উপার্জন করে। এছাড়াও পুলিশ অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতিতে বালি ভরাট করার ভুয়া কার্যাদেশ দেখিয়ে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে ২৭০ কোটি টাকা এবং ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে ২০০ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করে প্রতারণামূলকভাবে আত্মসাৎ করে। ইসলামী ব্যাংক বারিধারা শাখা থেকে ভুয়া মূল্যায়ন কপি তৈরি করে অজ্ঞাতনামা আসামিদের সহযোগিতায় সম্পত্তির মূল্য দেখিয়ে ৪০০ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করে। এছাড়া বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করে ঋণের টাকা পরিশোধ না করে অর্থ পাচারের মাধ্যমে ক্যারাবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের দেশ অ্যান্টিগা অ্যান্ড বারবুডার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন ২০ লাখ মার্কিন ডলার ডলার বিনিয়োগ করে। 

সিআইডি বলছে, প্রতারণা, জাল-জালিয়াতি ও অর্থপাচার, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫)-এর ২-এর শ(৫) (৬) (১৪) ধারামতে সম্পৃক্ত অপরাধ। রফিকুল ইসলাম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় আজ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করে সিআইডি। একইসঙ্গে ১৩টি ব্যাংক হিসাবের প্রায় ১৭ কোটি টাকা এবং যমুনা ফিউচার পার্কের লেভেল–২ এ থাকা এক লাখ বর্গফুটের কমার্শিয়াল স্পেস বিজ্ঞ আদালতের আদেশে ক্রোক করেছে সিআইডি।

মন্তব্য (০)





  • company_logo