কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রেল লাইনের ধারে ও জনবসতি এলাকায় গড়ে উঠেছে অবৈধ ইটভাটা। র্দীঘদিন থেকে অবৈধ ভাবে ভাটাগুলো পরিচালিত হয়ে আসলেও কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন অজ্ঞাত কারনে নিরব ভুমিকা পালন করায় জনমনে সৃষ্টি হয়েছে নানা প্রশ্ন। অবলম্বন করা হচ্ছে কৌশল সরকারী আইনকে দেখানো হচ্ছে বৃদ্ধা অঙ্গুল। আর ফসলি জমির প্রাণ পোড়ানো হচ্ছে ইট ভাটায়। নিয়ম নীতি না মেনেই জনবসতি ও ফসলি জমিতে অবৈধ ভাবে ইটভাটা নির্মান। পুড়ছে কৃষকের স্বপ্ন, উৎপাদনে রয়েছে ধস নামার আশঙ্কা। নজর নেই প্রশাসনের। চারটির অনুমোদন নেই জানিয়ে চিলমারীতে একটির অনুমোদন আছে বলে জানান, পরিবেশ অধিদপ্তর কুড়িগ্রাম।
জানা গেছে, কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় সরকারী আনইকে তোয়াক্কা না করেই জনবসতি গ্রামের মাঝে এবং দুই ও তিন ফসলি জমিতে অবৈধ ইটাভাটা নির্মান এছাড়াও ইটভাটা আইন লঙ্ঘন করে ফসলি জমির মাটি দিয়ে ইট তৈরি করা হচ্ছে। সাধারণ কৃষককে নগদ টাকার লোভ দেখিয়ে সংগ্রহ করছে আবাদি জমির উপুরি ভাগের (টপ সয়েল) মাটি। দালালদের খপ্পরে পরে কতিপয় জমির মালিক ইটভাটায় মাটি বিক্রি করছেন। এদিকে আইন থাকলেও প্রশাসন তা প্রয়োগ করছে না অজ্ঞাত কারনে। তাই অবাধে চলছে জমির উপরিভাগের মাটি বিক্রি।
এতে জমির উর্বরতা শক্তি কমে যাচ্ছে। আর ধিরে ধিরে ইটভাটার আগুনে পুড়ে যাচ্ছে ফসলি জমির প্রাণ। জমির শ্রেণী পরিবর্তন করে এক শ্রেণীর দালাল দীর্ঘদিন ধরে এ ব্যবসা করে আসছে। এতে এক দিকে যেমন জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে, অন্য দিকে ট্রাকটর ও ট্রলি দিয়ে ইটভাটায় মাটি নেয়ায় নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ কাঁচা-পাকা সড়ক। শুধু তাই নয় রেল লাইনের ধারে, স্কুল সংলগ্ন, জনবসতি ও ফসলি জমিতে ইটভাটা নির্মান করায় এর প্রভাব ফসলের উপর পড়ার সাথে সাথে পড়ছে শিক্ষার্থী ও মানুষের উপরও পড়ছে। উপজেলার মাছাবান্দা এলাকার নুরুল, শরিফেরহাট এলাকার রাসেল, ব্যাপারী বাজার এলাকার আশরাফুল সহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, ইটভাটায় ইট তৈরির জন্য মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে কৃষিজমি থেকে। স্বার্থান্বেষী দালালরা জমির মালিকদের মাটি কাটার জন্য ভুল বুঝিয়ে অনুমোদন ছাড়াই এসব মাটি কেটে নিয়ে ইটভাটায় সরবরাহ করছে। চিলমারী উপজেলায় পাঁচটি চলমান ও উপজেলা সীমান্ত ঘেঁষে বেশ কয়েকটি ইটভাটা রয়েছে। প্রতিটি ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে আবাদি জমি ও জনবহুল এলাকায়। নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এসব ইটভাটার মালিকেরা একের পর এক ফসলি জমির প্রাণ ধ্বংস এবং গাছপালা কেটে পরিবেশকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আবাদি জমির টপ সয়েল কেটে ট্রাক্টরে ভর্তি করা হচ্ছে। মাটি বিক্রয়কারী কয়েকজন কৃষক জানান, পাশের জমির মালিকেরা গত বছর মাটি বিক্রি করায় তাদের জমি নিচু হয়ে গেছে, তাই সমস্যা হওয়ায় তারাও মাটি বিক্রি করছেন। ভাটা মালিকেরা এক ফুট পর্যন্ত ওপরের মাটি কেটে নেয়ার কথা বললেও সুযোগ বুঝে দেড় ফুট এবং অনেক সময় এর চেয়েও বেশি কেটে নিচ্ছে।
সরেজমিন ব্যাপারির বাজার, মাছাবান্দা, বালাবাড়িহাট ও টিএনটি এলাকায় ঘুরে দেখা যায় উক্ত এলাকায় নির্মিত ভাটাগুলো সরকারী নিয়ম নীতিকে তোয়াক্কা না করেই জনবসতি ও দুই, তিন ফসলি জমিতে নির্মান করা হয়েছে। এস.টি ব্রিকেসের মালিক আলহাজ্ব মাহফুজার রহমান মন্জু বলেন, গত বছর পর্যন্ত অনুমতি ছিল এবারেও আবেদন করা হয়েছে, সরকার যেভাবে বলবেন এবং আইন আছে তা মেনে নেব। তবে বাকি ভাটার মালিকেরা এ ব্যাপারে কথা বলতে নারাজ। এইস আর বি ভাটার অনুমতি আছে জানিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর কুড়িগ্রাম সহকারী পরিচালক মোঃ রেজাউল করিম বলেন, বাকি মেসার্স এন.এস ব্রিকস, মেসার্স ওয়ারেছ ব্রিকস, এস.টি ব্রিকস, ওসমান সাফ্ফাত ব্রিকস অনুমোদন নেই, তিনি আরো জানান, অভিযান চলছে এবং তা অব্যাহত রয়েছে। কৃষি জমির মাটি ইট ভাটায় ব্যবহার করা নিষিদ্ধ এবং চিলমারীতে কোন ভাটার অনুমোদন নেই জানিয়ে চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুজ কুমার বসাক বলেন, মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্য (০)