
নিউজ ডেস্কঃ নিউ ইয়র্ক কনস্যুলেটে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর হামলার ঘটনায় লিখিতভাবে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের নাম উল্লেখ করে ভিডিও ফুটেজসহ নিউ ইয়র্ক পুলিশ, সিক্রেট সার্ভিস ও স্টেটস ডিপার্টমেন্ট জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তোজা। আজ (শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন।
ফেসবুক পোস্টে গোলাম মোর্তোজা লেখেন, ‘নিউ ইয়র্ক কনস্যুলেটে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী হামলার বিষয়টি নিয়ে যার যেমন ইচ্ছে তেমন মন্তব্য করছেন। আমার নাম উল্লেখ করেও কেউ কেউ বলছেন, একটা মামলা হয়েছিল। আমি নাকি আওয়ামী লীগের সঙ্গে আপোষ করে ফেলেছি। আমরা মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। ভিত্তিহীন তথ্যহীন অসত্য মত প্রকাশ করলে আমার কিছু করার থাকে না। শুধু সত্য টা মানুষকে জানাতে পারি। সেই হিসেবে কয়েকটি সত্য তথ্য জানাই।’
তিনি লেখেন, ‘প্রথমত, ঘটনা ঘটেছে নিউ ইয়র্ক কনস্যুলেটে। আমার দায়িত্ব বাংলাদেশ দূতাবাস ওয়াশিংটন ডিসিতে। আমি অতিথি হিসেবে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের অনুষ্ঠানে গিয়েছি, অংশ নিয়েছি,আয়োজনে সহায়তা করেছি।’
তিনি আরও লেখেন, ‘দ্বিতীয়ত, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী হামলার পুরো বিষয়টি নিউ ইয়র্ক কনস্যুলেট লিখিতভাবে, সন্ত্রাসীদের নাম উল্লেখ করে ভিডিও ফুটেজসহ নিউ ইয়র্ক পুলিশ, সিক্রেট সার্ভিসকে জানিয়েছে। ওয়াশিংটন দূতাবাসের পক্ষ থেকে স্টেটস ডিপার্টমেন্ট এবং সিক্রেট সার্ভিসকে একইভাবে জানানো হয়েছে । দূতাবাস এবং নিউ ইয়র্ক কনস্যুলেট প্রতিনিয়ত বিষয়টির খোঁজ রাখছে। নিউ ইয়র্ক ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি উইং, নিউ ইয়র্ক মেয়র অফিসের সঙ্গে সমন্বয় করে তদন্ত করছে।’
একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে প্রেস মিনিস্টার লেখেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সরকারে পক্ষ থেকে সবশেষ সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে নিউ ইয়র্ক কনস্যুলেটকে সংখ্যা উল্লেখ না করে জানানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়াটি এখনও তদন্তাধীন।’
উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর হামলার তদন্তের বিষয়ে গোলাম মোর্তোজা লেখেন, ‘তৃতীয়ত, তদন্ত সম্পন্ন হলে নিউ ইয়র্ক কনস্যুলেট ও দূতাবাসকে সুনির্দিষ্ট করে জানাবে যুক্তরাষ্ট্রের তদন্ত সংস্থা। তদন্তে যে অভিযোগ পাওয়া যাবে তার ওপর ভিত্তি করে মামলা করতে হবে। এখনও পর্যন্ত কোনো মামলা হয় নাই, অভিযোগ জানানো হয়েছে। এটাই যুক্তরাষ্ট্রের আইনি প্রক্রিয়া। মামলা করার পর্যায় আসে নাই।’
তিনি লেখেন, ‘২৪ আগস্টের ঘটনা, আজ ১৮ সেপ্টেম্বর। এত সময় লাগছে কেন? এই প্রশ্ন করছেন কেউ কেউ। যুক্তরাষ্ট্রের তদন্ত প্রক্রিয়া সাধারণভাবে সময়সাপেক্ষ। কারও প্রভাবে ‘দ্রুত’ তদন্ত হয় না। তদন্ত চলাকালীন কলস্যুলেট বা দূতাবাসের পক্ষ থেকে মন্তব্য করাটাও শোভনীয় নয়।’
আওয়ামী লীগের সঙ্গে আপোষের বিষয়ে পরিষ্কার করে লেখেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত, বাংলাদেশে কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত মানবতাবিরোধী অপরাধী আওয়ামী লীগের সঙ্গে আপোষের কোনো ঘটনা ঘটে নাই, কারও সেই সুযোগ নাই, আমার তো নাই-ই। আমি বা অন্য যে কারও পক্ষে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে তদন্তাধীন বিষয়ে অভিযুক্ত সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আপোষ করার বা তদন্তকারীদের প্রভাবিত করার কোনো সুযোগ নাই, এটা বাংলাদেশ নয়-ভিত্তিহীন অসত্য মন্তব্য করার ক্ষেত্রে আমরা সম্ভবত তা ভুলে যাচ্ছি।’
তদন্তের সবশেষ তথ্যসহ নিউ ইয়র্ক কন্যুলেটের পক্ষ থেকে বিষয়টি পরিষ্কার করে জানানো হবে। এখানে আপোষ বা গোপনীয়তার কোনো সুযোগ নেই।
মন্তব্য (০)