• শিক্ষা

‎বিনামূল্যে প্রাথমিকের পাঠ্যবই, ছাপার দায়িত্বে থাকছে না এনসিটিবি

  • শিক্ষা

ছবিঃ সংগৃহীত

নিউজ ডেস্কঃ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) আইন-২০১৮ সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আইন সংশোধন হলে ২০২৭ শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের বই ছাপানোর দায়িত্ব পাবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সিআর আবরার বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এনসিটিবির আইন সংশোধন করে বই ছাপানোর একটি প্রস্তাব দিয়েছে। আমরা সেটির যাচাই-বাছাই করছি।

‎এর আগে ২০২৩ সালে বই ছাপানোর জন্য গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের সারসংক্ষেপে সম্মতি দিয়েছিল পতিত আওয়ামী সরকার। কিন্তু জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের কারণে শেষ সময়ে এসে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি এনসিটিবি আইন কাটছাঁট করে অধ্যাদেশের মাধ্যমে বই ছাপার কাজ অধিদপ্তরকে দিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন করতে সর্বসাধারণের মতামত চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ভেতর-বাইরে ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।

‎জানা যায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একমাত্র বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান হিসাবে কাজ করছে এনসিটিবি। নতুন শিক্ষাবর্ষের প্রাক-প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যের পাঠ্যবই তুলে দেয় এই প্রতিষ্ঠান। বই বিতরণের আগে শ্রেণিভিত্তিক শিক্ষাক্রম প্রণয়ন, পাঠ্যসূচি-পাঠ্যবই তৈরিসহ মুদ্রণ ও প্রকাশনার মতো গুরুত্বপূর্ণ সব কাজও শেষ করতে হয় তাদের।

‎সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মূল কাজ হলো প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো নিয়ন্ত্রণ, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষার মানোন্নয়ন করা। বর্তমানে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা ঠিকমতো বাংলা-ইংরেজি পড়তে পারে না। এছাড়া গ্রামীণ স্কুলে শিক্ষার্থী সংকট এবং অভিভাবকদের সরকারি প্রাথমিকের বদলে কিন্ডারগার্টেন বা ইংলিশ মিডিয়ামে সন্তানদের পাঠানোর প্রবণতা বেশি। এসব গুরুতর সমস্যার সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ না নিয়েই অধিদপ্তর এখন বই ছাপানোর দায়িত্ব নিতে আগ্রহী। তাছাড়া শিক্ষা ক্যাডারের যোগ্যতাসম্পন্ন মেধাবী শিক্ষকরা এনসিটিবিতে কাজ করে আসছেন। তাদের শ্রেণিতে পাঠদানের অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং উচ্চতর শিক্ষা রয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও নেপ-এর কর্মকর্তারা বাংলাদেশ কর্মকমিশন কর্তৃক মেধা ও যোগ্যতা বিবেচনায় প্রথম শ্রেণির ক্যাডার সার্ভিসে নিয়োগপ্রাপ্ত নন। এ ধরনের উদ্যোগ শিক্ষার মানোন্নয়নের কার্যক্রম ব্যাহত করতে পারে।

‎প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, বই ছাপানোর জন্য বাজেট বরাদ্দ তাদের মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে এনসিটিবিকে পরিশোধ করতে হয়। তাই সরাসরি এ কাজ করলে অর্থ সাশ্রয় হবে। এছাড়া এনসিটিবি শিক্ষার্থীদের যথাসময়ে বই সরবরাহ ও কাগজের মান ঠিক রাখতে পারছে না। এ বিষয়টি ডিপিই করলে নির্দিষ্ট সময়ে মানসম্পন্ন বই পাওয়া নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

‎শিক্ষা খাতের সাংবাদিক শরিফুজ্জামান পিন্টু বলেন, এনসিটিবি থেকে প্রাথমিক স্তরে বই ছাপানোর কাজ অন্য কোথাও দেওয়াটা যৌক্তিক বলে মনে হচ্ছে না। এনসিটিবির এতদিনে যে অভিজ্ঞতা বা ক্যাপাসিটি অর্জন করেছে, সেটি অন্য কোথাও আছে কি না, তা আগেই যাচাই করে দেখা উচিত। যদিও প্রাথমিকের কাজ অন্য কোথাও দিলেও এনসিটিবির ওপর নির্ভরশীলতা থেকে যাবে। কারণ, সিলেবাস তৈরি এবং শিক্ষা কারিকুলাম তাদেরই করতে হবে।

‎তিনি বলেন, ছাপার দায়িত্ব অন্য কোথাও দিলে গুণগত পরিবর্তন কতটা আসবে, সেটাও বলা মুশকিল। এখন বলা হচ্ছে, এনসিটিবি সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি, অন্য কোথাও সিন্ডিকেট হবে না সেই আশঙ্কা থেকে যায়।

‎শিক্ষাবিদদের মতে, এনসিটিবির কাজে ঘাটতি থাকলে প্রতিষ্ঠানটিকে পুনর্গঠন ও আধুনিকীকরণের উদ্যোগ নেওয়া উচিত। প্রয়োজনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে কারিকুলাম প্রণয়ন ও বই প্রকাশনায় যুক্ত করা যেতে পারে।

‎প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান বলেন, প্রাথমিক স্তরের বই ছাপানোর জন্য আমাদের যথেষ্টা অভিজ্ঞ জনবল রয়েছে। এটি আমাদের অধিদপ্তরের কাজ। এতে কোনো ধরনের সমস্যা হবে না।

‎এনসিটিবি আইন সংশোধনের উদ্যোগ : ১৯৮৩ সালে এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে বর্তমান এনসিটিবি প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তী সময়ে ২০১৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর অধ্যাদেশ বাতিল করে ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড আইন, ২০১৮’ বিলটি পাশ হয়। আইন অনুযায়ী শ্রেণিভিত্তিক শিক্ষাক্রম প্রণয়ন, পাঠ্যসূচি ও পাঠ্যবই তৈরিসহ মুদ্রণ ও প্রকাশনার সব কাজ করে এনসিটিবি। মাধ্যমিক স্তরের বই ছাপার ব্যয়ভার শিক্ষা মন্ত্রণালয় আর প্রাথমিক স্তরের ব্যয়ভার গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বহন করে। নানা মতবিরোধের কারণে দীর্ঘদিন ধরেই প্রাথমিকের বই ছাপার কাজ নিজেদের কাছে নিতে চাইছিল গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

‎এ বিষয়ে এনসিটিবির সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) অধ্যাপক ড. রিয়াদ চৌধুরী বলেন, এনসিটিবি একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান। এখানে কারিকুলাম তৈরি করা হয়। এছাড়া প্রাথমিক স্তরের জন্য স্বতন্ত্র একটা উইং রয়েছে। বই ছাপানোর সময় কোনো অসংগতি দেখা দিলে এটি সঙ্গে সঙ্গে সমাধান করা সহজ হয়।

মন্তব্য (০)





image

‎২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন, রোডম্যাপ প্রকাশ

নিউজ ডেস্কঃ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদের (জকস...

image

‎এবার চাকসুতে লড়বেন সাদিক কায়েমের ছোট ভাই

নিউজ ডেস্কঃ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হল সংসদ (চাকসু) নি...

image

‎রংপুর বিভাগের শ্রেষ্ঠ গুণী প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হলেন ...

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রাম জেলার শ্রেষ্ঠ গুণী প্রধা...

image

ডাকসুতে ভোট কারচুপির অভিযোগে সিসিটিভি যাচাই, বেরিয়ে এলো য...

নিউজ ডেস্কঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন...

image

‎রাকসু নির্বাচন ঘিরে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ

নিউজ ডেস্কঃ আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রাজশাহী ...

  • company_logo