• বিশেষ প্রতিবেদন

অসময়ে বন্যা, কপালে চিন্তার ভাঁজ চরাঞ্চলের পাটচাষিদের

  • বিশেষ প্রতিবেদন

ছবিঃ সিএনআই

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ঘেঁষে জেগে ওঠা চর-দ্বীপ চরগুলোতে পাট চাষে প্রান্তিক কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। গতবছরের তুলনায় এবার প্রায় ৬০ হেক্টর জমিতে চাষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে আগাম ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়ায় অনেক পাটক্ষেত তলিয়ে গেছে। এতে ভালো ফলন পাওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা গেছে কৃষকদের মাঝে।

জানা গেছে, গেল বছর নদীভাঙনের কবলে পড়ে উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের প্রায় ১ হাজার একর কৃষিজমি বিলীন হয়েছে। এ বছরও ভাঙন শুরু হয়েছে নদীতীরবর্তী এলাকাগুলোতে। আবহাওয়া ও জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এমনকি নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে তীরবর্তী চরগুলোতে ভাঙনের ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। এ ছাড়াও অসময়ে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এসব নানা প্রতিকূলতায় প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষকরা বিভিন্ন কৃষিপণ্য উৎপাদন করে নিজেদের স্বাবলম্বী ও সচ্ছল রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। চলতি মৌসুমে আগাম ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়ায় অনেক পাটক্ষেত তলিয়ে গেছে। এতে করে পাট চাষের জমির সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে অনেক কৃষককে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী দুদিন পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদের পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে, তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

 

কৃষি বিভাগ বলছে, আগাম বন্যা হলে বীজতলা নষ্ট হয়ে গেলে আপদকালীন হিসেবে ভাসমান বীজতলা করতে পারে। এ ছাড়া পানিতে আবাদ নিমজ্জিত থাকার পর জমি পরিষ্কার করতে হবে। বন্যার সময় পাটচাষিরা বিএসদের থেকে পরামর্শ নিতে পারেন। যে কোনো সমস্যা হলে তারা বিএসদের অবগত করলে তাৎক্ষণিক পরামর্শ দেবেন। যদি কোনো কৃষক চায় তাহলে হটলাইন ১৬১২৩ নম্বরে কল করে সরাসরি পরামর্শ নিতে পারবেন।

 

চিলমারী ইউনিয়নের মোনতোলা গ্রামের রবিউল ইসলাম বলেন, আগাম বন্যা এবং নদীভাঙনে এবার পাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সময় মতো নিড়ানি এবং সার দিতে পারিনি। এর মধ্যে আবার নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। বিশারপাড়া গ্রামের জহুরুল ইসলাম বলেন, খরার কারণে সেচের পানি দিয়ে পাট আবাদ করছি। পাট বড় হতে না হতেই বৃষ্টি। বৃষ্টির জন্য নিড়ানি দিতে পারিনি। অসময়ে বন্যা এসে বিশারপাড়া গ্রামের ৫০টি বাড়ি নদীতে চলে গেছে। পাটের জমি পাটসহ নদীতে ভেঙে যাচ্ছে। লোন করে পাট চাষ করেছি, এখন পুরোটাই লোকসান।

 

চিলমারী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এ বছর উপজেলাজুড়ে পাট চাষ হয়েছে ৩ হাজার ৩০৫ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে তোষা জাত ৩ হাজার ৩০০ হেক্টর ও ৫ হেক্টর জমিতে কেনাফ জাতের পাট চাষ করেছেন কৃষকরা। গতবছরে চাষের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ২৪০ হেক্টর।

চিলমারী উপজেলা কৃষি অফিসার কুমার প্রণয়ন বিষাণ দাস জানান, চিলমারী উপজেলায় ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে ৩ হাজার ৩০৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। গত বছরের থেকে এবার ৬৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ বেড়েছে। পাটের অনূকূল আবহাওয়া, রোগবালাই কম হওয়ায় ও কৃষি অফিস থেকে পরামর্শ দেওয়ায় পাটের অবস্থা বর্তমান ভালো আছে। ফসল কাটার সময় পাটের দাম থাকলে কৃষকরা বেশ উপকৃত হবে। তিনি বলেন, আগাম পানি বাড়ায় যেসব পাট পানিতে নিমজ্জিত হয়েছিল সেসব কৃষকের তালিকা করা হয়েছে। পরে প্রণোদনার আওতায় আনা হবে।

মন্তব্য (০)





image

ঠাকুরগাঁওয়ে তিল চাষ বিলুপ্তির পথে আগ্রহ হারাচ্ছে কৃষক

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ গ্রামীণ অর্থনীতিতে যারা কৃষি কাজ করে, তাদের কাছে অতি প্র...

image

কড়ই গাছের ভেতরে জ্বলছে আগুন, নেভাতে ব্যর্থ ফায়ার সার্ভিস!

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের চিলমারীতে একটি কড়ই গাছের ভেতরে জ্বলছে আ...

image

ঠাকুরগাঁওয়ে বিলুপ্ত পথে ছাতা মেরামতের কারিগর

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁয়ে ছাতার ব্যবহার এক দিনেই হয়ে উঠেনি। মানব সৃষ্টি...

image

অবশেষে মেরামত হচ্ছে নওগাঁ পৌরসভার বেহাল সড়কগুলো

নওগাঁ প্রতিনিধি: গত ৫আগস্টের পর দেশের সকল পৌরসভার ন্যায় নওগাঁ পৌরসভাতেও জেলা ...

image

উলিপুরে তিস্তার তীরে বাদামের হাট, ক্রেতা না থাকায় চিন্তিত...

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের উলিপুরে তিস্তার তীরে অস্থায়ী কাঁচা বাদা...

  • company_logo