• বিশেষ প্রতিবেদন

ধ্বংসের পথে ঐতিহাসিক মজিদবাড়িয়া শাহী জামে মসজিদ

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ২৭ জানুয়ারী, ২০২১ ১৬:৩৯:২২

ছবিঃ সিএনআই

পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ প্রাচীন মুসলিম স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন ৫০০ বছর আগে সুলতানি শাসন আমলে স্থাপিত পটুয়াখালী জেলায় মির্জাগঞ্জ উপজেলার ঐতিহাসিক মজিদবাড়িয়া শাহী জামে মসজিদ। পটুয়াখালী শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দক্ষিণ- পশ্চিমে এবং বরগুনা জেলা শহর থেকে ১২ কিলোমিটার পূর্বে মসজিদবাড়িয়া মসজিদ অবস্থিত। এই পুরাকীর্তিটি কাগজ-কলমে সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধীনে থাকলেও চরম অযত্নে অবহেলায় বর্তমানে নষ্ট হবার পথে। দীর্ঘ দিন সংস্কারের অভাবে দরজা-জানালা কপাট ও পিলারগুলোর অস্তিত্ব বিলীনের পথে। 

জানা যায়, সুলতানি শাসন আমলে ৫০০ বছর আগে স্থাপিত হয় এ শাহী মসজিদটি। এ মসজিদের নামানুসারে এলাকার নাম হয়েছে মসজিদবাড়িয়া। সংস্কারের অভাবে বর্তমানে মসজিদটির সৌন্দর্য ও ঐতিহ্য হারাতে বসলেও ঐতিহাসিক এ মসজিদটি দেখতে প্রতিদিন শত শত নারী-পুরুষ আসেন। ১৪৬৫ সালে মির্জাগঞ্জ থানার মজিদবাড়িয়া গ্রামে ইলিয়াছ শাহী বংশের রুকনুদ্দীন শাহ বাকলা নামে স্বাধীন সুলতান এক গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ নির্মাণ করেন। পরে মসজিদটিতে উজিয়ল নামে এক মিস্ত্রি নির্মাণকাজ করেন। মসজিদে তিনটি দৃষ্টিনন্দন কারুকার্যখচিত মেহরাব, পূর্ব দিকে তিনটি খিলান পথ, ছয়টি আট কোণার মিনার, একটি বারান্দাযুক্ত পূর্ব-উত্তর ও দক্ষিণ দিকে দু’টি করে জানালা রয়েছে। মসজিদের ভেতরের দিকে রয়েছে বিভিন্ন কারুকার্যখচিত মুসলিম স্থাপত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন। মসজিদ-সংলগ্ন একটি বড় দিঘি রয়েছে। মুসল্লিরা এখানে ওজু ও গোসল করেন। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের মনে ধারনা অন্যরকম। তাদের ধারনা মসজিদটি মাটির নিচ থেকে অলৌকিকভাবে গজিয়ে উঠেছে। 

মসজিদের দক্ষিণ প‚র্ব পাশেই রয়েছে দুটি কবর। এখানে শায়িত আছেন পরগনার ইয়াকিন শাহ ও কালাশাহ। প্রতিবছর ৩০ কার্তিক বাৎসরিক মাহফিল আয়োজন করে এন্তেজামিয়া কমিটি। মাহফিলে দেশবরেণ্য বিভিন্ন আলেম-ওলামা ওয়াজ করেন। স্থানীয় বাসিন্দা জাহিদ হাসান বলেন, মসজিদটি বর্তমানে প্রত্নত্তত্ব 
বিভাগের আওতায় রয়েছে। তবে দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে মসজিদের অনেক রূপ-সৌন্দর্য হারিয়ে গেছে। দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ না নিলে অবশিষ্ট সৌন্দর্যও
হারিয়ে যেতে পারে।

এ ব্যাপারে মির্জাগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বলেন, দ্রুত সংস্কার করলে মসজিদটি আরো দৃষ্টিনন্দন ও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। বাংলাদেশে মুসলিম শাসনের ইতিহাস-ঐতিহ্য, ইসলামি স্থাপত্যশিল্প হিসেবে টিকে থাকবে বহুদিন।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo