• বিশেষ প্রতিবেদন

১০ বছর ধরে পলিথিনে মোড়ানো ঘরে বসবাস, মাথা গোঁজার ঠাঁই চান রোকিয়া!

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ২৬ জানুয়ারী, ২০২১ ১১:০৫:২৫

ছবিঃ সিএনআই

জামালপুর প্রতিনিধিঃ জমিজমা নিয়ে বিরোধে হামলা ও মামলার শিকার হয়ে ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে ১০ বছর আগে স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে জামালপুর শহরে চলে আসেন রোকিয়া বেগম (৪৫)। কিন্তু এত বছরেও ভাগ্য তাদের দিকে ফিরে তাকায়নি। রাস্তায় ধারে স্বামী সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন রোকিয়া।

রোকিয়া বেগম সরিষাবাড়ী উপজলোর ডোয়াইল উইনিয়নরে দুলভিটি গ্রামের লোকমানের (গাদু) স্ত্রী। জানা যায়, দীর্ঘ ১০ বছর আগে লোকমানের আপন ভাইয়ের সাথে জমিজমা নিয়ে বিরোধ ও মামলা শুরু হয়। কিন্তু প্রভাবশালী ভাইয়ের সাথে লড়াই করে টিকতে না পেরে একপর্যায়ে পরিবার নিয়ে জামালপুর শহরে চলে আসেন লোকমান।

পরে ইট-পাথরে ঘেরা লাখো মানুষের শহরের মধ্যে তাদের ঠাঁই হয় ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে। রাস্তার কংক্রিট পিলারের সাথে বাঁশ লাগিয়ে পুরাতন কাপড় ও পলিথিন লাগিয়ে থাকার ছোট্ট একটি জায়গা করেছিলেন রোকেয়া। সেই ঘরেই এখন স্বামী-সন্তান নিয়ে তার বসবাস।

জায়গাটি দেখে মনে পড়ে শিল্পী মনির খানের একটি গানটির কথা,খড়কূটার এক বাসা বাঁধলাম, বাবুই পাখির মত, এই হৃদয়ের ভালোবাসা দিলাম আছে যত, একটা ময়না পাখি সেই বাসায় পুশি কত ভালোবাসায়, তারে চোখে চোখে রাখি" এই গানটির কথার সঙ্গে রোকিয়ার জীবনের যেন মিল রয়েছে।

সোমবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চার পাশে পুরাতন কাপড়ের বেড়া। এক পাশে পলিথিন দিয়ে মোড়ানো আর উপরে ও পলিথিন ও পুরাতন কাপড় দিয়ে ছাউনি। কাপড়ের বেড়ার একাধিক জায়গা ছিদ্র। নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করার মতো নয়।

কথা হয় রোকিয়া বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, এই জায়গায় প্রায় ১০ বছর ধরে আছি। খুব কষ্টেই জীবন চলে। একটা ছেলে দিন ১৫০-২০০ টাকা উর্পাজন করে। এই শীতের মধ্যে কি যে কষ্টে আছি বাবা তোমগোরে কিভাবে বলমু, একটা শীতের কাপড় নেই, রাতে বেলায় ঠান্ডা বাতাসে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসে। মনে হয় “আমরা মইরা গেলে পাশে কেউ দাঁড়াবে না.!

রোকিয়া আরও বলেন, কয়েকদিন আগে পৌরসভায় দেখি মেয়র কম্বল দিতাছে, পরে আমিও গেছি, সবাইকে কম্বল দিল কিন্তু, আমাকে দিল না….! বলল আমার কাগজ নেই।

রোকেয়ার স্বামী লোকমান মিয়া (গাদু) বলেন, আমার জমিজমা ঘরবাড়ি সবই ছিল, এক সময় বাজারে বিভিন্ন শাক সবজি বিক্রি করতাম। আমার বড় ভাই আব্দুর রহমানের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ শুরু হয়। কিছুদিন পরে ভাই মারা যাওয়ার পরে মামলা চালায় ভাতিজা শাহিনুর রহমান। আমি বিভিন্ন নেতা মাতাব্বরদের কাছে গেছি কেউ এই বিষয় নিয়ে মিল করে দেয় নাই।

তিনি বলেন, বাড়ির লোকজন এখন আমারে জমিতে যাইতে দেয় না। দুই ভাতিজা আমায় মারার হুমকি দেয়। আমি এখন বাড়িতে যাবার চাই, মাথা গোজার একটা ঠাঁই চাই, সরকারের কাছে এটাই আমার জীবনের শেষ চাওয়া।

 

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo