• অর্থনীতি
  • লিড নিউজ

রংপুরে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে কোটি টাকা লোকসান

  • অর্থনীতি
  • লিড নিউজ
  • ৩০ আগস্ট, ২০২০ ১৬:৪৬:২২

ছবিঃ সিএনআই

নজরুল ইসলাম রাজু রংপুর ব্যুরোঃ রংপুরে চল্লিশটির উপরে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কলকারখানা গড়ে উঠেছে। এবার করোনা কালীন সময়ে চল্লিশটি কুটির শিল্প থেকে লোকসান গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের প্রায় কোটি টাকার উপর।এসব কুটির শিল্প বাসাবাড়ি ও বিভিন্ন স্থানে গড়ে তোলা হয়েছে।শিল্প উদ্যোক্তারা জানালেন,রংপুরের বিভিন্ন এলাকায় চল্লিশটির উপরে হাতের তৈরি ক্ষুদ্র কুটির শিল্প গড়ে উঠায় কর্মসংস্থান হয়েছে হাজারো লোকের।কুটির শিল্প গুলো এই মহামারী সময়ে ভেস্তে বসতে চলছে।করোনার কারনে মালিকদের ব্যবস্থা বন্ধ হওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে কোটি টাকা।

ক্ষুদ্র কুটির শিল্প উদ্যোক্তা ফ্যাশান গার্ডেন বুটিকসের মালিক মিসেস শৈবাল রহমান গিনি জানান,৪৫জনের উপরে কারি গর তার কারখানায় কাজ করছিলেন।কিন্তু এখন চারজন কারিগর কাজ করছে।যে চারজন কাজ করছেন তাদের বেতন দিতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানান তিনি।বেচাকিনা একদম নেই হাতের তৈয়ারী এই ক্ষুদ্র কুটির শিল্প।

আর এই হাতের তৈয়ারী ক্ষুদ্র কুটির শিল্পে কাজ করে জীবিকা নির্ভর করছেন ৪৫ জন কর্মচারীর প্রায় ২শ পরিবার।তিনি আরও জানান,নগরীতে পাঁচ মাস থেকে বন্ধ ৪০টি ক্ষুদ্র কুটির শিল্পের প্রায় ২হাজার কর্মচারীর ১৫ হাজার পরিবার।আর এসব কর্মচারীরা মানবতার জীবন যাপন করছেন।একদিকে হাতের তৈয়ারী বিভিন্ন ধরনের কাপড় মার্কেটে বেচাকেনা বন্ধ,অন্যদিকে করোনা ভাইরাসের সময়ে এসব কুটির শিল্প বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

রংপুর নগরীর সাহেব বাজার এলাকার ক্ষুদ্র কুটির শিল্প উদ্যোক্তা তহিদুল ইসলাম জানান,গত কয়েক মাস ধরে হাতের তৈয়ারী করা কাপড় বাজারে আমদানি করা বন্ধ।করোনার কারনে বন্ধ রয়েছে ৫ মাস থেকে।বন্ধ থাকার কারনে লোকসান গুনতে হচ্ছে লাখ লাখ টাকা মালিকদেরকে।যেসব কর্মচারী এর সাথে জড়িত তাদের বেতন কিছুতেই দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।আর যারা কারিগর রয়েছে অর্থের অভাবে তারা মানবতার জীবন-যাপন করছেন।

তবে মালিকদের দাবি সব মিলে ৪০টি ক্ষুদ্র কুটির শিল্পে প্রায় এক কোটি টাকা লোকসান হবে।সরকারিভাবে সহযোগিতা করা হলে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন তারা।
রংপুর নগরীর মুন্সিপাড়ার জান্নাতুল ফেরদৌসী জানান,দীর্ঘদিন ধরে হাতের তৈয়ারী কুটির শিল্প গড়ে তেলেন তিনি।তার কারখানায় বিভিন্ন রকমের পণ্য সামগ্রী তৈরি করা হতো,গত কয়েক মাস ধরে করোনার জন্য বন্ধ থাকার কারণে তাকে লোকসান গুনতে হচ্ছে প্রায় ১০লক্ষাধিক টাকা।

তিনি আরো জানান,প্রতিবছর এই সময়ে অনেক স্থানে মেলা করতেন তিনি,এ বছর মেলা বন্ধ হওয়ায় ব্যবসায় অনেক বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।আর কোনো সুযোগ নেই মার্কেটগুলোতে বেচাকেনার।এসব ক্ষুদ্র কুটির শিল্পের পণ্য সে কারণেই লোকসান গুনতে হচ্ছে।বন্ধ হয়ে গেলে বড় অংকের ক্ষতিতে পড়তে হচ্ছে তাদের।

রংপুর চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট রেজাউল করিম মিলন জানান,উদ্যোক্তারা ক্ষুদ্র কুটির শিল্পের বিভিন্ন রকমের পণ্য তৈরি করতেন।এসব পণ্য বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশে রপ্তানি করা হত,৫মাস ধরে বন্ধ থাকার কারণে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এসব ব্যবসায়ীরা।তিনি বলেন,করোনার কারণে দেশে শিল্প গড়ে তোলা এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখেন।

এসব প্রতিষ্ঠানের রংপুরে ১৫ হাজার শ্রমিক কাজ করতেন।এসব শ্রমিক পাঁচ মাস ধরে কারখানা বন্ধ থাকার কারণে মানবতার জীবন যাপন করছেন। করোনাকালীন সময়ে কয়েক কোটি টাকা লোকসান হয় অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তবে ক্ষুদ্র কুটির শিল্প গড়ে তোলার পর রংপুরসহ সারাদেশে এ পণ্য রপ্তানি করা হতো তবে গত কয়েক মাস ধরে করোনা কালিন সময়ে বন্ধ থাকার পর ব্যবসায় লোকসান গুনতে হচ্ছে।সরকারী ভাবে প্রণোদনার দাবি করেন এই নেতা। প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট রেজাউল করিম মিলন আরও জানান,ক্ষুদ্র কুটির শিল্প পণ্য রপ্তানি করা বন্ধ থাকার কারণে ব্যবসায় ধ্বস নেমেছে।তবে এই করোনা যতদিন থাকবে ততদিন এসব ক্ষুদ্র কুটির শিল্পে পণ্য তৈরি করা ও রপ্তানি করা সম্ভব নয়। রপ্তানী করতে পারলে দেশের জন্য অর্থনৈতিক লাভজনক হবে বলে তিনি জানান,তবে ছোট ক্ষুদ্র কুটির শিল্প গড়ে ওঠায় হাজারো লোকের কর্মসংস্থান হবে।করোনার কারনে বন্ধ কয়েক মাস ধরে এসব কারখানা।শ্রমিকরা মানবতার জীবন যাপন করছেন বলে জানান তিনি।

রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসান জানান,ক্ষুদ্র কুটির শিল্প গড়ে তোলা এসব উদ্যোক্তাদের সাথে কথা হয়েছে।তাদেরকে সরকারি ভাবে সহযোগিতা করার জন্য তালিকা করে পাঠানো হয়েছে শিল্প মন্ত্রানালয়ে।অতিদ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।এসব ক্ষুদ্র কুটির শিল্প মালিকদের সাথে বৈঠক করা হয়েছে।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo