বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের উদ্যোগে ময়মনসিংহের ৩৫ জন কৃষককে বিনামূল্যে বিদেশী ও উন্নত জাতের গাজরের বীজ ও টমেটোর চারা বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি উপস্থিত কৃষকদের মধ্যে গাজর ও টমেটো উৎপাদনের প্রশিক্ষণও প্রদান করা হয়।
রবিবার (২৭ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় বাকৃবির উদ্যানতত্ত্ব খামারে ওই চারা ও বীজ বিতরণ এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সেন্টারের (বাউরেস) পরিচালক অধ্যাপক ড. এম হাম্মাদুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক এবং বিশেষ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো গোলাম রাব্বানী। আরও উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির স্মার্ট এগ্রিকালচারের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. সহিদুজ্জামান, আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রুস্তম আলী, স্ট্যান্ডার্ড চ্যাটার্ড ব্যাংকের সহকারী পরিচালক দেবাশীষ ভট্টাচার্য ও উদ্যানতত্ত্ব বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ।
গাজর ও টমেটো গবেষণার প্রজেক্ট ইনভেস্টিগেটর ও উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. হারুন অর রশিদ বলেন, ‘প্রতিকূল পরিবেশ, বিশেষ করে খরা বর্তমানে বাংলাদেশের একটি উদীয়মান হুমকি যা গাজর ও টমেটোর উৎপাদনশীলতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করে। বর্তমান বাজারে গাজর ও টমেটোর চাহিদা বৃদ্ধির তুলনায় কম প্রাপ্যতার কারণে দৈনন্দিন খাবারের পুষ্টিমানে ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি এর ঘাটতি থেকে যায়। সুতরাং, বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য প্রতিকূল পরিবেশে পুষ্টি—সমৃদ্ধ রঙিন গাজর ও টমেটোর উন্নয়ন ও প্রসারণই এই প্রকল্পের সামগ্রিক লক্ষ্য।’
তিনি আরো বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় দেশি—বিদেশি বিভিন্ন রঙের ৪০টি গাজরের জার্মপ্লাজম ও ২০টি টমেটোর জার্মপ্লাজম নিয়ে গবেষণা চলছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড.মো: শহীদুল হক বলেন, এই দুটি রঙিন সবজির বাজার মূল্য ও চাহিদা অত্যন্ত বেশি। এছাড়া এদের চমৎকার পুষ্টিগুণ রয়েছে। কৃষকদের এই সবজি দুইটি থেকে আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি রয়েছে। ভবিষ্যতে এমন কার্যক্রম আরো বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে ব্যাংকিং চ্যানেলগুলোকে আরো অধিকতর সহায়তা প্রদানে এগিয়ে আসতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. মো: গোলাম রব্বানী বলেন, গাজর এবং টমেটো চাষের কৃষকদের অর্থনৈতিক লাভের পাশাপাশি পুষ্টির চাহিদা মেটাতেও ভূমিকা রাখবে। এই দুইটি সবজি চাষের গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে ভবিষ্যতে এমন কর্মসূচী আরও বিস্তৃতভাবে আয়োজন করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ড.মো: হাম্মাদুর রহমান এই প্রকল্পের সফলতা কামনা করে বলেন, বেশি বেশি নতুন রঙের গাজর ও টমেটো চাষের মাধ্যমে কৃষক-কৃষাণীরা অধিক লাভবান হতে পারবে। এই ধরনের কর্মসূচীতে আরও অধিক কৃষকদের অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।
এসময় শেষ মোড় এলাকার কৃষক আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, বিনামূল্যে উন্নত জাতের গাজর ও টমেটোর বীজ ও চারা পেয়ে ভালো লাগছে। স্যারেরা চাষাবাদ সম্পর্কেও বিস্তারিতভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন। আশা করি বিভিন্ন রঙয়ের ফলন পেলে বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয় করতে পারবো।
সুপারিবাগান এলাকার কৃষাণী ছালমা আক্তার বলেন, গাজর যে এত রঙয়ের হয় সেটি জানা ছিলো না। প্রশিক্ষণে বিভিন্ন রঙয়ের গাজরের ও টমেটোর নানান ধরনের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে ধারণা পেয়েছি। আমি নিজে এগুলোর চাষাবাদ করবো পাশাপাশি অন্যদেরকে উৎসাহিত করবো।
মন্তব্য ( ০)