রংপুর ব্যুরোঃ বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলন চলাকালে গত ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে ক্যাম্পাসের পাশে নিহত হন।নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলা রংপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) বদলি করা হয়েছে।
সোমবার (১২ আগস্ট) দুপুরে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের নির্দেশে মামলাটি পিবিআইয়ে স্থানান্তর করা হয়।পুলিশ সদর দপ্তর থেকে শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব ভার দিয়েছে পিবিআিইতে।
এর আগে পুলিশের প্রাথামিক তথ্য বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হননি।বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন দিক থেকে গুলি ছুড়তে থাকে এবং ইটের টুকরো নিক্ষেপে এক পর্যায়ে এক শিক্ষার্থীকে মাটিতে পড়ে যেতে দেখা যায়,' বলা হয়েছে মামলায়।এতে আরও বলা হয়,সহপাঠীরা সাঈদকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মামলাটি তাজহাট থানায় নথিভুক্ত করা এফআইআরে সাঈদ হত্যার ঘটনায় বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।অন্যদিকে ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়,দায়িত্বরত পুলিশ তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।এর কিছুক্ষণ পরই তার মৃত্যু হয়।
রংপুর জেলা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন কালের কন্ঠকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।জাকির হোসেন জানান, পুলিশ হেডকোয়ার্টারের নির্দেশে মামলাটি তাজহাট থানা থেকে পিবিআইয়ে স্থানান্তর করা হয়েছে। এখন মামলার তদন্ত করবেন পিবিআই।
রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে গত ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে পুলিশ ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওইদিন পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদের মৃত্যু হয়।এ ঘটনায় ১৭ জুলাই তাজহাট থানায় মামলা করা হয়। মামলার বাদী ওই থানার উপপরিদর্শক ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বিভূতি ভূষণ রায়।
মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহারে উল্লেখ করা হয়,‘বেলা ২টা ১৫ মিনিটের দিকে ছাত্র নামধারী সুবিধাভোগী রাষ্ট্রবিরোধী আন্দোলনরত দুর্বৃত্তগণ বিভিন্ন দিক থেকে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল ও তাদের নিকটে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র হতে এলোপাতাড়ি গুলি শুরু করে।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশও এপিসি গাড়ির মধ্য হতে কং/ ১১৮৬ সোহেল তার নামীয় সরকারি ইস্যুকৃত শটগান হইতে ১৬৯ রাউন্ড রাবার বুলেট ফায়ার করে। পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।’
সাঈদের মৃত্যুর বিষয়ে বলা হয়, ‘বিভিন্ন দিক থেকে আন্দোলনকারীদের ছোড়া গোলাগুলি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের এক পর্যায়ে একজন শিক্ষার্থীকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। সহপাঠীরা ধরাধরি করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ২ থেকে ৩ হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।’
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মো:সায়ফুজ্জামান ফারকী জানান,এই মামলার তদন্তভার পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পিবিআইকে হস্তান্তার করা হয়েছে।মামলাটি এখন থেকে তদন্ত করবেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই)।
মন্তব্য ( ০)