• কূটনৈতিক সংবাদ
  • লিড নিউজ

যুক্তরাষ্ট্র শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতাকে সমর্থন করে: ম্যাথিউ মিলার

  • কূটনৈতিক সংবাদ
  • লিড নিউজ
  • ২৫ জুলাই, ২০২৪ ১৪:২২:০৬

ছবিঃ সংগৃহীত

নিউজ ডেস্কঃ বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও বিক্ষোভ এবং তাদের ওপর হামলা, সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আবারও নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। 

দেশটি বলছে, যুক্তরাষ্ট্র শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতাকে সমর্থন করে। এছাড়া বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সব সহিংসতার আবারও নিন্দা করেছে দেশটি। স্থানীয় সময় বুধবার (২৪ জুলাই) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।

তিনি বলেছেন, আমরা চাই বাংলাদেশের জনগণ তাদের মৌলিক স্বাধীনতা প্রয়োগ করতে পারুক। এছাড়া ঢাকায় অবস্থানরত মার্কিন কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়েও এদিন কথা বলেছেন তিনি। 

এদিনের ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং তাদের ওপর হামলা-সহিংসতার জেরে সৃষ্ট পরিস্থিস্থির বিষয়ে জানতে চান। তিনি বলেন, আপনি ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশকে লেভেল ফোরের সবচেয়ে বিপদজনক অঞ্চল বলে ঘোষণা করেছেন। ক্ষমতাসীন সরকারের দেখামাত্র গুলি চালানোর আদেশের কারণে ব্যাপক নৃশংসতা ঘটছে, মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ২০০ ছাড়িয়েছে। ছাত্ররা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চালাচ্ছেন। নিরীহ ছাত্র ও জাতিকে এই সরকারের হাত থেকে বাঁচাতে যুক্তরাষ্ট্র কোনও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে?

জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, প্রথমত, আবারও আমরা বাংলাদেশের চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের উদ্বেগ স্পষ্ট করেছি। ঢাকায় আমাদের কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সমস্ত বিকল্প অনুসন্ধানের বিষয়েও আমরা জানিয়েছি। আমরা ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসে অ-জরুরি কর্মীদের এবং পরিবারের সদস্যদের স্বেচ্ছায় প্রস্থান করার অনুমতি দিয়েছি। বাংলাদেশে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের কনস্যুলার ও অন্যান্য সেবা প্রদানের জন্য দূতাবাস খোলা রয়েছে। যেকোনও আমেরিকান নাগরিকের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার ব্যাপারে স্পষ্টতই এটি আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার এবং নিজেদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন মার্কিন নাগরিকদের যেকোনও বিষয়ে আলোচনা করতে আমাদের দূতাবাসে যোগাযোগ করতে আমরা উৎসাহিত করছি। 

ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস পূর্ণাঙ্গরূপে চালু আছে কিনা; সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে মিলার বলে, এটা (দূতাবাস) চালু আছে।

পৃথক প্রশ্নে আরেক সাংবাদিক বলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ইতোমধ্যে গত সাতদিন ধরে আমরা এখানে কথা বলছি। একসময় বাংলাদেশ ছিল জেএমবি, হরকাতুল জিহাদের মতো সন্ত্রাসী সংগঠনের নিরাপদ আশ্রয়স্থল। মার্কিন সরকারের সহায়তায়, বাংলাদেশ সরকার সন্ত্রাস দমনে ব্যাপক অগ্রগতি করেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক দিনগুলোতে জঙ্গিরা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সরকারি এবং ইনস্টিটিউটসহ সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করেছে এবং বর্তমান সরকারকে পতনের পরিকল্পিত পরিকল্পনার পাশাপাশি শুধুমাত্র নিরপরাধ মানুষই নয়, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সদস্যদেরও নির্মমভাবে হত্যা করেছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয়গুলোর মধ্যে একটি ঘটনায় – এছাড়াও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ – যে, তারা একটি বড় কারাগারে আক্রমণ করেছে এবং তাদের জঙ্গি সংগঠনের নয়জন দোষী সাব্যস্ত নেতাকে ছাড়িয়ে নিয়ে গেছে। তারা বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের থিংক ট্যাংক এবং মস্তিষ্ক বলে পরিচিত ছিল। সাম্প্রতিক সহিংস কার্যকলাপের পরিপ্রেক্ষিতে – যেখানে জঙ্গিরা এবং সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো উল্লেখযোগ্য ধ্বংসযজ্ঞ ঘটিয়েছে – স্টেট ডিপার্টমেন্ট কি বিশ্বাস করে যে, এই ধরনের ঘটনা বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদকে আরও বাড়িয়ে দেবে? এবং বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার এবং এই সন্ত্রাসী হুমকি মোকাবিলার প্রচেষ্টার জন্য যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে বাংলাদেশ সরকারকে আবারও সমর্থন করার পরিকল্পনা করছে? 

জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এই মুখপাত্র বলেন, আমি গত কয়েকদিনে বলেছি: আমরা বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সব সহিংসতার নিন্দা জানাই। আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতাকে সমর্থন করি। যারা তাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার পালন করতে চেয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা সহিংসতার নিন্দা করছি। এবং আমরা যেকোনও প্রতিবাদকারীরও সহিংসতার নিন্দা করি যারা তাদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ-বিক্ষোভের সুযোগকে কেবল সহিংসতার অজুহাতে পরিণত করেছে। আমরা সব ক্ষেত্রেই সহিংসতার নিন্দা জানাই।

ম্যাথিউ মিলার আরও বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশের জনগণ তাদের মৌলিক স্বাধীনতার অধিকার প্রয়োগ করতে সক্ষম হোক। একইসঙ্গে এটি আমরা সারা বিশ্বের মানুষের জন্যই চাই যে – তারা তাদের মৌলিক স্বাধীনতাগুলো পালন করতে সক্ষম হোক। সহিংসতা থেকে বিরত থাকার জন্য আমরা প্রতিবাদকারী, নাগরিক এবং সরকার সবাইকেই অনুরোধ করছি।

এসময় জঙ্গি সংগঠনের নয়জন সাজাপ্রাপ্ত নেতার কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ওই প্রশ্নকারী মন্তব্য জানতে চাইলে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এই মুখপাত্র বলেন, এ বিষয়ে তার কোনও নির্দিষ্ট মন্তব্য নেই।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo