• আন্তর্জাতিক
  • লিড নিউজ

গাজায় জাতিসংঘের স্কুলে হামলা: ইসরায়েলকে স্বচ্ছ হওয়ার আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের

  • আন্তর্জাতিক
  • লিড নিউজ
  • ০৭ জুন, ২০২৪ ২১:৪২:৫৬

ছবিঃ সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ফিলিস্তিনের গাজার মধ্যাঞ্চলে জাতিসংঘের স্কুলে বিমান হামলায় অন্তত ৩৫ জনের মৃত্যুর ঘটনায় ইসরায়েলের কাছ থেকে আরও বেশি স্বচ্ছতার আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

শুক্রবার (৭ জুন) ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। 

স্থানীয় সাংবাদিকরা বিবিসিকে জানিয়েছেন, নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের ওই স্কুলের উপরের তলার শ্রেণিকক্ষে একটি যুদ্ধবিমান দুটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।

ইসরায়েল দাবি করেছে, স্কুলটিতে হামাসের একটি কম্পাউন্ড ছিল। ৭ অক্টোবরের হামলার সঙ্গে জড়িত যোদ্ধারা সেখানে ছিল। তাই হামলা চালিয়ে তাদের হত্যা করা হয়েছে; যে হামলাটি আট মাস ধরে চলমান এই যুদ্ধের সূচনা ঘটিয়েছিল।

ইসরায়েলের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন গাজার হামাস পরিচালিত সরকারের তথ্য দফতরের পরিচালক ইসমাইল আল-থাওয়াবেত। 

এই হামলায় ইসরায়েলে যেসব হামাস যোদ্ধাকে হত্যার দাবি করেছে, তাদের পরিচয় প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েল অবশ্য নিহত নয়জন হামাস যোদ্ধার নাম প্রকাশ করেছে।

হামাসের লক্ষ্যবস্তুতে নিশানা করে ইসরায়েল প্রায়ই সেসব জায়গায় বিমান হামলা চালায়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এমন আহ্বান জানানোর ঘটনা বিরল।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘ইসরায়েল আমাদেরকে জানিয়েছে, হামাসের ২০ থেকে ৩০ জনকে তারা টার্গেট করেছে এবং যাদের হত্যা করেছে বলে তারা বিশ্বাস করে তাদের নাম প্রকাশ করবে। তারা নাম প্রকাশ করবে বলে জানিয়েছে। আমরা আশা করি, তারা প্রকাশ করবে, পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচনা করবে।

এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি হামলায় নিহত নয় হামাস ও ইসলামিক জিহাদি যোদ্ধার নাম প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, তথ্য যাচাই শেষে আরও চিহ্নিত করা হবে। 

ওয়াশিংটনে মিলার বলেন, বৃহস্পতিবারের ওই হামলায় ১৪ শিশু নিহত হয়েছে। আর গাজার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, ১৪ শিশু ও ৯ নারীসহ ৪০ জন নিহত এবং ৭৪ জন আহত হয়েছে।

স্থানীয় সাংবাদিক ও বাসিন্দারা বলছেন, স্থানীয় সময় বুধবার রাতে নৃশংস এ হামলা চালানো হয়। শরণার্থী শিবিরের স্কুলটি পরিচালনা করে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ)। হামলার সময় স্কুলটিতে বাস্তুচ্যুত অনেক ফিলিস্তিনি অবস্থান করছিলেন।

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে বিধ্বস্ত ক্লাসরুম ও মর্গের সামনে পড়ে থাকা লাশের সারি দেখা গেছে। সেখানে আহত এক নারী চিৎকার করে বলছিলেন, ‘অনেক যুদ্ধ হয়েছে! আমরা অসংখ্যবার উচ্ছেদ হয়েছি। আমার সন্তানেরা যখন ঘুমাচ্ছিল তখন তারা তাদের হত্যা করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা হামলার পর ধ্বংসযজ্ঞের একটি দৃশ্যের বর্ণনা দিয়েছেন। উদয় আবু ইলিয়াস নামে ওই স্কুলের বাসিন্দা বিবিসিকে বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ আমরা বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাই এবং ভবনের কাচ ও ধ্বংসাবশেষ আমাদের ওপর পড়ে। ধোঁয়ায় বাতাস ভরে গেল এবং আমি কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না। জীবিত বের হব ভাবিনি।

ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, ওই সময় ৬ হাজার বাস্তুচ্যুত মানুষ স্কুল কমপ্লেক্সে আশ্রয় নিয়েছিল।

এদিকে, এই হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

গাজার রাফা শহরে ইসরায়েলি হামলায় ৪৫ জন নিহত হওয়ার মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে সর্বশেষ এই হামলার ঘটনা ঘটল। প্রায় আট মাস ধরে চলা এই যুদ্ধের সময় বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া ১৭ লাখ মানুষ অনেক স্কুল ও জাতিসংঘের অন্যান্য স্থাপনাকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রায় আট মাসের লড়াইয়ে গাজায় অন্তত ৩৬ হাজার ৪৭০ জন নিহত হয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালিয়ে হামাস প্রায় ১২০০ মানুষকে হত্যা ও ২৫১ জনকে জিম্মি করে। এরপর থেকেই গাজায় চলছে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo