রংপুর ব্যুরোঃ রংপুর কারমাইকেল কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থী রাইসা আত্নহত্যার প্ররোচনাকারী আনজুম চৌধুরীর(২৬)এর বিচার ও ফাসির দাবিতে ফুসে উঠেছে সহপাঠি ও শিক্ষকরা।এর প্রতিবাদে কলেজ প্রাঙ্গনে পালন করা হচ্ছে মিছিল মিটিং ও বিভোক্ষসহ মানববন্ধন করছেন কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।
রাইসার হত্যাকারীর বিচারের দাবিতে গতকাল সোমবার রংপুর কারমাইকেল কলেজ প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করেন শতশত শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।এই মানববন্ধনে কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক ও অনার্স বর্ষের ৩-৪শ শিক্ষাথী বিভোক্ষ ও মানববন্ধনের অংশ নেন।প্রতিদিন শিক্ষার্থীরা হত্যার বিচারের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসুচি পালন করছেন তারা।
এসময় রাইসা আত্নহত্যার প্ররোচনাকারীর বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখেন,রাষ্ট্রবিঙান বিভাগের শিক্ষক এমএ রউফ খান,ধরিত্রী সরকার,ফারিয়া তাসনিম,ফাহমিদা এনাম,রাইসার মা,মোছা.পারভীন বেগম,বোন রাবেয়া বুশরাসহ অনেকে।
বক্তারা এসময় বলেন-রাইসাকে প্রেমের ফাদে ফেলে প্রতারক আনজুম মেয়েটির জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন।গোপন বিয়েকে পারিবারিক স্বীকৃতি দিতে রাইসার কাছে কয়েক লাখ টাকার দাবি করেছিল প্রতারক আনজুম চৌধুরী।টাকা দিতে না পারলে অন্যথায় রাইসাকে আত্নহত্যা করতে বলেন।
মানসিক আঘাত সইতে না পেরে রাইসা আত্নহত্যা করতে বাধ্য করেন প্রতারক আনজুম।বক্তারা আরও বলেন প্রতারক যুবক আনজুমের মত প্রতারকের ফাসি না হলে এমন হাজারো রাইসার জীবন অকালে ঝরে যাবে।আনজুমের অতিদ্রুত ফাসির রায় ঘোষনা দাবি করছি আমরা শিক্ষার্থীরা।
রংপুরে মিঠাপুকুরে উপজেলার মাঝগ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে রাইসা(২০)মহানগরীর চারতলা মোড় এলাকায় একটি ফ্লাটে থেকে কারমাইকেল কলেজে রাষ্ট্রবিঙ্গান বিভাগে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে লেখাপড়া করতেন।কলেজ পড়ার সময় মিঠাপুকুর উপজেলার জায়গীর হাটের শিমুল চৌধুরীর ছেলে ঢাকার ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আনজুম চৌধুরী(২৬)এর সাথে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে।একপর্যায়ে গোপনে বিয়ে করেন।
বিয়ের কিছুদিন আনজুম রাইসার কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন।অন্যথায় তাদের বিয়ে আনজুমের পরিবার মেনে নেবে না বলে জানায়।টাকা দিতে না পারলে আনজুম রাইসাকে বিষ কিংবা গলায় রশি দিয়ে আত্নহত্যার কথা বলে দাবি নিহত রাইসার পরিবারের।
২০২৩ সালের ২৮ নভেম্বর দুপুরে রাইসার মা নগরীর চারতলা মোড়ের ফ্লাটে এসে দেখতে পায় রাইসা অসংলগ্ন কথাবার্তঅ বলছে।এমন অবস্থার বিষয়ে মেয়েকে জিঞ্চাসা করলে রাইসা জানায়,আনজুমকে টাকা ম্যানেজ করে দিতে না পারলে সে আত্নহত্যা করে মরে যাবেন।এজন্য সে প্রচুর পরিমান ঘুমের ওষুধ খেয়েছে।এ সময় রাইসার মা মানুষের সহযোগিতায় রাইসাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।২৯ নভেম্বর রাতে রাইসা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।এ ঘটনায় আত্নহত্যার প্ররোচনাকারী হিসেবে আনজুমকে আসামী করে রাইসার বাবা-রফিকুল ইসলাম বাদি হয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।এঘটনায় পুলিশ আনজুমকে গ্রেফতার করে।চলতি বছরের ২৭ মার্চ আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠান।
রাইসার বড় ভাই পলাশ প্রামানিক জানান,রংপুর কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থী রাইসা আত্নহত্যার প্ররোচনাকারী আনজুম চৌধুরীর এই ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত।আত্নহত্যার প্ররোচনা করে আমার বোনকে মেরে ফেলা হয়েছে।আমি ও আমার পরিবার এর বিচারে দাবি করছি।
মন্তব্য ( ০)