পাবনা প্রতিনিধিঃ নির্বাচনী আইন যারা মানবেন না, তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন আইনি ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা। তিনি বলেন, প্রভাবশালীরা নির্বাচনে কোনো রকম প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করলে তাদেরও ছাড় দেয়া হবে না, তিনি এমপি মন্ত্রী যেই হোক। নির্বাচন কমিশন কিন্তু এত দুর্বল নয়।
বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন নিয়ে পাবনা জেলার সব উপজেলার প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
রাশেদা সুলতানা বলেন, নির্বাচন কমিশনকে সাধারণ মানুষের কাছে হেনস্তা করবে, নির্বাচনকে কলুষিত করবে, দেশের ভাবমূর্তি যে নষ্ট করে তার বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সাংবাদিকদের কোনো কাজে বাধা দেয়া যাবে না। দিলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
তিনি বলেন, ‘দেশের নিদারুণ বাস্তবতা হলো ভোটারদের সঙ্গে প্রার্থীদের সম্পর্ক ভালো নেই। তাই ভোটার ছাড়া ভোট হয়ে যাবে ওই দিন চলে গেছে। তাই প্রার্থী যারা আছেন তারা ভোটারদের কাছে যান, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করেন। তাদের কাছে টেনে নেন। তাদের ভোটেই আপনাকে নির্বাচিত হতে হবে। নির্বাচনী আইন মেনে প্রচারণা করেন। নির্বাচন কমিশন যেকোনো মূল্যে ভালো ভোট করবে।’
রাজশাহী বিভাগীয় স্থানীয় সরকারের পরিচালক পারভেজ রায়হানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আনিসুর রহমান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিজিবির সিইও গোলাম কিবরিয়া, জেলা প্রশাসক মু. আসাদুজ্জামান ও পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী।
পাবনা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় পাবনা জেলার নয়টি উপজেলার চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় প্রার্থীরা তাদের নানা অভিযোগের কথা তুলে ধরে সমাধান দাবি জানান। সুজানগর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল ওহাব অভিযোগ করেন, ‘সুজানগর পৌরসভার বর্তমান মেয়র একটি সভায় বলেছেন ভোট দিতে হবে, না হলে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হবে। তার এমন বক্তব্যের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। আমার নির্বাচনী অফিসে হামলা হয়েছে। মোবাইলে ভোটারদের প্রতিনিয়ত হুমকি দেয়া হচ্ছে। এসব অভিযোগ তথ্য প্রমাণসহ লিখিতভাবে দেয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’
চাটমোহর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাইদুল ইসলাম চৌধুরী অভিযোগ করেন, ‘সাধারণ মানুষের কাছে প্রচার করা হচ্ছে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী দুলাল মির্জা এমপির লোক, এমপির প্রার্থী। আপনি ভোট পাবেন কিভাবে। ভোট তো ওরা সব নিয়ে নেবে।’ এসময় প্রার্থীকে এমপির লোক বলে প্রচারণা চালানো বন্ধের দাবি জানান তিনি।
ঈশ্বরদী উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ মিন্টু অভিযোগ করেন, 'দুই জন শিক্ষককে বিশেষ লোকের নাম বলে দুটি মোটরসাইকেল পাঠিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে একজন প্রার্থীর সভায় যেতে বাধ্য করা হয়েছে। নির্বাচন শুরুর আগেই তো প্রভাবশালীদের প্রভাব বিস্তার চলছে। কিন্তু দেখার কেউ নেই।'
ইভিএম কক্ষে যেন প্রভাবশালী মহল কোনো প্রার্থীর পক্ষে ভোট দিতে ভোটারদের বাধ্য করতে না পারে সে বিষয়টিও কঠোরভাবে দেখার দাবি জানান ফরিদপুর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী খলিলুর রহমান সরকার।
'কোনো ঘটনা ঘটলে বা কোনো আচরণবিধি লঙ্ঘন হলে শুধু আমরা অভিযোগ দেবো, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বা নির্বাচন কমিশনের লোকজনের কি কোনো দায়িত্ব নেই।'-এমন অভিযোগ ভাঙ্গুড়া উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মেছবাহুর রহমান রোজের।
মন্তব্য ( ০)