• অর্থনীতি

চাটমোহরে ৩২ হাজার টন রসুন উৎপাদনের সম্ভাবনা

  • অর্থনীতি
  • ০৬ এপ্রিল, ২০২৩ ২০:২১:১১

ছবিঃ সিএনআই

তোফাজ্জল হোসেন বাবু,পাবনাঃ চলতি মৌসুমে পাবনার চাটমোহরের কৃষকেরা এখন জমি থেকে রসুন উত্তোলন করছেন। বেশির ভাগ কৃষকই ইতিমধ্যে রসুন তোলার কাজ শেষ করে ফেলেছেন। এবার ভাল দাম ও ফলন পাওয়ায় খুশি রসুন চাষীরা।

চাটমোহরে দীর্ঘ বছর যাবত সীমিত পরিসরে রসুন আবাদ হয়ে আসছিল। বিগত নব্বইয়ের দশকে এ এলাকায় বিনা চাষে রসুন আবাদের প্রচলন শুরু হয়। বিনা চাষে রসুন আবাদ শুরুর দিকে রসুন চাষীরা মসলা জাতীয় এ ফসলটির ভাল দাম ও ফলন পান। ফলে কয়েক বছরের মধ্যে বিনা চাষে রসুন আবাদ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ক্রমশই বাড়তে থাকে রসুন চাষের পরিধি। 

রসুন চাটমোহরের অন্যতম প্রধান ফসলে পরিণত হয়। রসুন চাষ করে অনেক কৃষক স্বচ্ছল জীবন যাপন করেন। কোন কোন বছর অধিক লাভ হওয়ায় এ এলাকায় রসুন সাদা সোনা হিসেবে খ্যাতি লাভ করে। সোনার মতো রসুনের দামও ওঠা নামা করে। কোন কোন বছর রসুনের দাম অকল্পনীয় ভাবে কমে যায়। তখন রসুন চাষীরা হতাশ হন। গত দুই তিন বছর রসুনের দাম কম হওয়ায় অনেক কৃষক ক্ষতির শিকার হন। আবাদ কমলেও লাভের আশায় কৃষক এখনও রসুন চাষ করছেন।  

সরেজমিন চাটমোহরের বিভিন্ন মাঠ ঘুরে চোখে পরে নারী ও পুরুষ শ্রমিকের কোলাহল। কেউ রসুন তুলছেন, কেউ ঝোঁপা বাধছেন কেউবা বিভিন্ন যানবাহনে রসুন বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। নারী শ্রমিকের  পারিশ্রমিক পুরুষের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম হলেও সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রসুন ক্ষেতে কাজ করছেন নারী শ্রমিকেরা। বাড়তি আয়ের জন্য ভোরে ঘুম থেকে উঠে খাবার তৈরী করে নিজেরা খেয়ে গৃহস্থের জমিতে রসুন তোলার জন্য বেড়িয়ে পরেন তারা। 

স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় কিছু দরিদ্র ছাত্র ছাত্রীও রসুন তুলছেন অন্যের জমিতে। রসুন চুরি রোধে খেতের মধ্যে অস্থায়ী কুঁড়েঘর তুলে রাতের বেলা পাহাড়া দেন মালিকরা। দিনের বেলায় রোদ থেকে বাঁচতে সাময়িক সময়ের জন্য শ্রমিকেরা আশ্রয় নেন সেই কুঁড়েঘর গুলোতে।

চাটমোহরের রামনগর গ্রামের রসুন চাষী ইনামুল হক সিএনআইকে জানান, এক বিঘা জমিতে রসুন চাষে বীজ, সেচ, সার, বালাই নাশক, শ্রমিক বাবদ প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না ঘটলে ৩০ থেকে ৪০ মন রসুন পাওয়া যায়। এ বছর আকার ভেদে প্রতি মন রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকায়। সে হিসেবে বিঘা প্রতি কৃষকের লাভ থাকছে প্রায় ২০ হাজার টাকার মতো। গত বছর মৌসুমের শেষ দিকে ছয়শ থেকে সাত’শ টাকা মন দরে রসুন বিক্রি হয়েছে। গত বছর লোকসান যাওয়ায় এবার অনেকে রসুন আবাদ করেননি। অনেকে কম জমিতে রসুন আবাদ করেছেন।

চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ.এ.মাসুম বিল্লাহ সিএনাইকে জানান, চলতি মৌসুমে চাটমোহরে ৩ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে রসুন চাষ হয়েছে। এ বছর আবহাওয়া রসুন চাষের অনুকূলে থাকায় ফলন ভাল হয়েছে। হেক্টর প্রতি গড় ফলন পাওয়া যাচ্ছে সাড়ে ৯ মেট্রিক টন। দামও বেশ থাকায় কৃষক লাভবান হচ্ছেন।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo