• বিশেষ প্রতিবেদন

চলতি মৌসুমে চলনবিলাঞ্চলে ৩০ কোটি টাকার মধু উৎপাদনের সম্ভাবনা

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ১৩ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৭:০৮:৩৩

ছবিঃ সিএনআই

তোফাজ্জল হোসেন বাবু,পাবনাঃ পাবনার চাটমোহরসহ চলনবিল অঞ্চলে এখন এক হাজার মৌচাষী বাণিজ্যিকভাবে মধু উৎপাদন ও সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে তারা চলনবিলের বিভিন্ন স্থানে মৌমাছির বাক্সসহ অবস্থান নিয়েছেন। চলতি মৌসুমে এ অঞ্চল থেকে ৩০ কোটি টাকার মধু সংগ্রহ হবে বলে আশা করছেন তারা।

জানা গেছে, চলনবিল অধ্যুষিত চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, রায়গঞ্জ, গুরুদাসপুর, সিংড়া, তাড়াশ ও উল্লাপাড়া উপজেলায় গত এক দশক ধরে রবি মৌসুমে সরিষা ফুল থেকে কোটি কোটি টাকার মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে। এবারও চাপাই নবাবগঞ্জ, রাজশাহী, বগুড়া, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, সাতক্ষীরা, পাবনা, নাটোর ও সিরাজগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলার এক হাজার মৌচাষী মধু সংগ্রহের জন্য চলনবিলের সরিষার ক্ষেতের পাশে প্রায় ১ লাখ মৌ-বাক্স বসিয়েছেন। 

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসূমে চলনবিলের ৯ উপজেলায় ১ লাখ ২০ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের সরিষার চাষ হয়েছে। এরই মধ্যে চলনবিল সরিষার ফুলে ভরে উঠেছে। আর সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহের জন্য মাসখানেক আগে থেকেই মৌচাষীরা বিলের সুবিধাজনক স্থানে অস্থায়ী আবাস গড়েছেন। 

বর্তমানে এ বিলে লাখ লাখ মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে। এতে একদিকে মৌচাষীরা মধু সংগ্রহ করে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হচ্ছেন,অন্যদিকে সরিষার ফলনও বাড়ছে। 

পাবনা জেলা ও উত্তরবঙ্গ মৌচাষী সমিতির সভাপতি চাটমোহরের জাহাঙ্গীর আলম সিএনআইকে জানান, চলতি মৌসুমে চলনবিল অঞ্চল থেকে ২ হাজার মে.টনের বেশি মধু উৎপাদন হবে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৩০ কোটি টাকা। 

তিনি জানান, তার মোট ৫০টি মৌ-বাক্স রয়েছে। যা থেকে তিনি প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৪ মণ মধু সংগ্রহ করতে পারেন। তাদের সংগৃহীত এসব মধু ৩০০ থেকে ৩৫০টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান এই চাষি। তিনি জানান, এবার মধুর দাম বেশী। ফলে ৩০ কোটি টাকারও বেশী মধু উৎপাদন হবে চলনবিল অঞ্চলে। ফরিদপুরের এরশাদ নগরে তার খামার রয়েছে।

উত্তরবঙ্গ মৌচাষী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহাদ আলী সিএনআইকে জানালেন, তার ১শ’টি মৌ-বাক্স রয়েছে। যা থেকে প্রতি সপ্তাহে মধু উৎপাদন হচ্ছে ১২ থেকে ১৫ মণ। 

চলনবিলের খাঁটি মধু সংগ্রহের জন্য প্রাণ, স্কয়ার, এপিসহ বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানির প্রতিনিধিরা ইতিমধ্যেই এখানে আসতে শুরু করেছেন। কোম্পানির প্রতিনিধিরা জানান, চলনবিলের মধুর গুণগত মান খুবই ভালো। এসব মধু সংগ্রহ করে প্রতি কেজি ৩০০ টাকা দরে বাজারজাত করা যায়। 

চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এ মাসুম বিল্লাহ সিএনআইকে জানান, যেসব সরিষার জমি থেকে মৌমাছিরা মধু সংগ্রহ করেন, সেসব জমির সরিষার ফুলে সঠিকভাবে পরাগায়ন ঘটে। 

ফলে সেসব জমির সরিষার ফলন ২৫-৩০ ভাগ বেড়ে যায়। তিনি জানান, আবহাওয়া অনুকূল থাকলে চলতি মৌসূমে চলনবিলের সরিষা ফুল থেকে বাণিজ্যিকভাবে এবং বিভিন্ন গাছ-পালায় প্রাকৃতিকভাবে তৈরি মৌচাক থেকে প্রায় ২ হাজার মেট্রিক টন মধু সংগৃহীত হবে বলে জানতে পেরেছি, যার বাজারমূল্য প্রায় ৩০ কোটি টাকা। তিনি জানান,কৃষি বিভাগও মধু সংগ্রহে বাক্স প্রদান করেছে।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo