• গণমাধ্যম
  • লিড নিউজ

দিনাজপুরে ১৮০টি খাসপুকুর ইজারার বাইরে;তহশিলদারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

  • গণমাধ্যম
  • লিড নিউজ
  • ২০ অক্টোবর, ২০২২ ০০:১৭:৩৭

ছবিঃ সিএনআই

সালাহ উদ্দিন আহমেদ,  দিনাজপুর:  দিনাজপুরের জেলা সদরে কমলপুর ইউনিয়নের তহশিলদারের খাস পুকুর ইজারা দেওয়া নিয়ে অনিয়ম-দূর্ণীতির অভিযোগ উঠেছে। অনিয়মের ১৮০টি পুকুর সরকারী ইজারার তালিকায় রাখেননি বলে অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এতে সরকার হারাচ্ছে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব। অন্যদিকে যেসব পুকুর ইজারা বা খাস গ্রহনের জন্য দেয়া হয়েছে সেখানেও মানা হয়নি সরকারী নিয়ম। ইউএনওর নির্দেশের অজুহাতে ওই তহশিলদার এসব কার্যক্রম করলেও তার বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি প্রশাসন। 

আজ বুধবার দুপুরে দিনাজপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ এনেছেন কমলপুর ইউনিয়নের বড়গ্রাম এলাকার বাসিন্দা আব্দুল আজিজের ছেলে আরিফুল ইসলাম।

লিখিত বক্তব্যে তিনি দাবি করেছেন, কমলপুর ইউনিয়নে প্রায় ২০০টি খাস পুকুর রয়েছে। সরকারী নিয়মে এসব পুকুর প্রতিবছর ইজারা দেয়ার কথা। কিন্তু তহশিলদার সুলতান মাহমুদ অনিয়ম করে এসব পুকুরের তালিকা সরকারীভাবে প্রকাশ করেননি । মাত্র ২০টির মতো পুকুর সরকারীভাবে ইজারা দেয়া হয়েছে। বাকী ১৮০টির মত পুকুর তিনি গোপনে বিভিন্ন জনকে ভোগ দখল করতে দিয়েছেন। বিনিময়ে মাসোহারা আদায় করে পকেটে পুরছেন তহশিলদার। আড়াল করতে সামান্য কিছু অর্থ জমা দিয়েছেন সরকারী কোষাগারে । অন্যদিকে সরকার হারাচ্ছে মোটা অংকের রাজস্ব।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, সরকারী নিয়মের তোয়াক্কা না করে অর্থের বিনিময়ে গত ১৩ অক্টোবর শাহাপুকুর নামের এক একর ৩২ শতকের একটি সরকারী পুকুর ইজারা বা খাস গ্রহনে দিয়েছেন। এই প্রক্রিয়ায় সরকারী নিয়মনীতি মানা হয়নি। ওই পুকুরটির বরাদ্দেরআদেশ বাতিল করার পাশাপাশি সকল পুকুর সরকারীভাবে লীজের ব্যবস্থা গ্রহন এবং এসব অন্যায়, দুর্ণীতি-অনিয়মের সঠিক তদন্ত করে তহশিলদারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানানো হয়েছে।

তিনি বলেন, সরকারী নিয়ম হলো যদি কোন সরকারী পুকুর ইজারা না দেয়া হয় তাহলে কেউ যদি আবেদন করেন তাহলে তাকে দেয়ার নিয়ম রয়েছে। যদি আবেদন একের অধিক হয় তাহলে ডাক দেয়ার নিয়ম রয়েছে। সেই হিসেবেই গত ১৪ সেপ্টেম্বর শাহাপুকুরটি সরকারী নিয়ম মোতাবেক ১৪২৯ সালের একসনা খাস আদায়ের জন্য দিনাজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে আবেদন করেছিলেন অভিযোগকারি। ইউএনও পুকুরটি একসনা খাস আদায়ের আবেদনের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ২৫ সেপ্টেম্বর তহশিলদারকে লিখিতভাবে নির্দেশ দেন। এরপর তহশিলদার বিষয়টি জবরদখলকারী কামরুজ্জামানকে অবহিত করে তার কাছ থেকেও একটি আবেদনপত্র গ্রহণ করেন। অবৈধভাবে জবর দখলকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তহশিলদার উল্টো আবেদন গ্রহন করে তাকে সহযোগিতা করেন। যা একটি অনিয়ম। পরে তহশিলদারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান যে, যেহেতু দুইটি আবেদন পড়েছে তাই এই পুকুরটি উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে ডাক দেয়া হবে। এরপরও তহশিলদারের কথা মোতাবেক আমরা পুকুরটি ডাকের জন্য অপেক্ষা করি। কিন্তু তহশিলদার বারবার সময় ক্ষেপন করছিলেন। পরে তহশিলদার জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুকুরটি কামরুজ্জামানকে দেয়ার জন্য বলেছেন। কিন্তু এ ব্যাপারে কোন লিখিতভাবে কাগজ দেখাতে পারেননি তিনি। পরে ১৩ অক্টোবর পুকুরটি কামরুজ্জামানকে দিয়ে দেন অভিযুক্ত তহশিলদার।

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, একাধিক আবেদন থাকার পরও সরকারী নিয়ম না মেনেই পক্ষপাতমূলকভাবে একজনকে পুকুর দেয়া হয়েছে। আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে তহশিলদার এই পুকুরটি অবৈধভাবে আরেকজনকে দিয়েছেন। তহশিলদার বারবার ইউএনওর নির্দেশে পুকুরটি কামরুজ্জামানকে দিয়েছেন বলেছেন। ফলে এর দায় কোনভাবেই ইউএনও এড়াতে পারেন না। যদি তাই না হয়, তাহলে যে অনিয়মটি হয়েছে তার জন্য অবশ্যই ইউএনও ব্যবস্থা গ্রহণ করতেন।

এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মর্তূজা আল মুঈদ জানান, সরকারী নিয়ম মোতাবেক পুকুর লীজ বা ইজারার ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে তহশিলদারকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে । নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তিকে পুকুরটি দিতে বলা হয়নি। 

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে তহশিলদার সুলতান মাহমুদের  ( ০১৭৩৩৩০১১০৬) নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা হলেও ফোন রিসিভ করেননি তিনি। 

 

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo