• আন্তর্জাতিক

মিয়ানমারে বোমা হামলা, পরস্পরকে দুষছে ক্ষমতাসীন জান্তা-গণতন্ত্রপন্থী শক্তি

  • আন্তর্জাতিক
  • ০১ জুন, ২০২২ ১২:৫২:০৫

ছবিঃ সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ মিয়ানমারের প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র ইয়াঙ্গুনের শহরতলী এলাকার একটি বাস স্টপে বোমা হামলা হয়েছে। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে ১ পথযাত্রী, আহত হয়েছে আরও ৯ জন।

মিয়ানমারের দৈনিক পত্রিকা দ্য গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমারের বরাত দিয়ে বুধবার এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, এখনও মিয়ানমারের কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে ক্ষমতাসীন জান্তা ও তাদের প্রধান বৈরীপক্ষ গণতন্ত্রপন্থীরা এ ঘটনার জন্য পরস্পরকে দোষারোপ করছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে ঘটা ভয়াবহ এই হামলার কিছু ছবি প্রকাশ করেছে দ্য গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার। প্রত্যক্ষদর্শী ও নিরাপত্তা বাহিনীর বরাত দিয়ে পত্রিকাটি আরও জানিয়েছে, ইয়াঙ্গুনভিত্তিক দাতব্য সংস্থা লিন লাট আহতদের হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেছে।

নিরাপত্তা বাহিনী ইতোমধ্যে এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বলেও নিজেদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে দ্যা গ্লোবার নিউ লাইট।

এদিকে, দেশটির জান্তা নিয়ন্ত্রিত সরকারি পত্রিকা তাদের প্রতিবেদনে এ বিস্ফোরণের জন্য মিয়ানমারের সশস্ত্রবাহিনী বিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠী পিডিএফকে (পিপলস ডিফেন্স ফোর্স) দায়ী করে বলেছে, ‘পিডিএফের সন্ত্রাসীরা বোমা হামলা করেছে।’

তবে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থীদের ছায়া সরকার ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের (নাগ) প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ক্ষমতাসীন সামরিক বাহিনীর দাবি নাকচ করে দিয়ে বলেছে, এই হামলার পেছনে রয়েছে জান্তা এবং নাগ এ ঘটনার পৃথক তদন্ত করবে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় ছায়া সরকারের মুখপাত্র ডা. সাসা বলেছেন, ‘হতাহতদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে যা যা করা সম্ভব, আমরা তার সবই করব।’

অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন সরকারকে উচ্ছেদ করে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের জাতীয় ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইং এ অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন।

অভ্যুত্থানের পর থেকেই দেশটিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন-বিক্ষোভ শুরু করে দেশটির গণতন্ত্রপন্থী শক্তি ও সাধারণ জনগণ। প্রথম পর্যায়ে বিক্ষোভ দমন করতে লাঠি, জলকামান, রবার বুলেট ব্যবহার করা হলেও একসময় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেয় জান্তা।

দেশটির রাজনৈতিক কয়েদিদের আইনী সহায়তা দানকারী সংস্থা অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন অব পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের (এএপিপি) তথ্য অনুযায়ী, গত প্রায় দেড় বছরে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে মিয়ানমার জুড়ে ১ হাজার ৮০০’রও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি দমনে নিরাপত্তা বাহিনী প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার শুরুর পর গণতন্ত্রপন্থী বিভিন্ন শক্তিও নিজেদের মধ্যে সংগঠিত হওয়া শুরু করে। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে মিয়ানমারে ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট নামের একটি ছায়া সরকার গঠিত হয়, যা মূলত দেশটিতে সক্রিয় বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দল ও জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীসমূহের জোট।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo