• বিশেষ প্রতিবেদন

দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতির প্রতিবাদ ধর্মঘট

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ২১ মার্চ, ২০২২ ১৭:১২:৪৮

ছবিঃ সিএনআই

নজরুল ইসলাম রাজু রংপুর  ব্যুরো:

দ্রব্যমূল্যের দাম উর্ধগতির প্রতিবাদ,পুলিশী হয়রানী বন্ধসহ ৯ দফা দাবিতে রংপুর মহানগরীতে ব্যটারি চালিত অটো,রিকশা ও ভ্যাণ শ্রমিকদের ধর্মঘট চলছে।এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
 
সোমবার (২১ মার্চ) ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া ধর্মঘট চলবে দুপুর ১২টা পর্যন্ত।প্রথমে সকাল ৬ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত ধর্মঘট আহবান করা হলেও  অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষার কারণে ২ ঘন্টা কমিয়ে বারোটা পর্যন্ত করা হয়েছে।রিকশা,অটো ভ্যান না চলায় দুর্ভোগে পড়েছেন শিক্ষার্থী কর্মজীবি মানুষ।পায়ে হেটে  যাতায়াত করছেন তারা।যে নগরী যানজটে অস্থির থাকার কথা।সেই নগরী এখন ফাঁকা।

ধর্মঘট পালনকারীরা নগরীর ১৪ পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করছেন।সাধারণ মানুষ দুভ্যোগে পড়লেও তাদের দাবি মেনে নেয়ার আহবান জানিয়েছেন।আর নেতারা বলছেন দাবি না মানলে ৭২ ঘন্টার দর্মঘটে যাবেন এ হুমকিদেন তারা।

রংপুর জেলা জাতীয় শ্রমিক পার্টির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তোফা জানান আমরা দীর্ঘদিন থেকে ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নে আন্দোলন করে আসছি।দাবি আদায়ে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।কিন্তু কর্তৃপক্ষ আমাদের কোন দাবি আমলে নেয়নি।তাই আমরা অটো চালকদের ৬টি সংগঠন একত্রিত হয়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, পুলিশী হয়রানি বন্ধ, নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ,অটোর রিকশার নতুন নাম্বার প্লেট, আইনশৃঙ্খলা সভায় অটো চালকদের প্রতিনিধির উপস্থিতিসহ ৯ দফা দাবিতে এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।এ ধর্মঘটে কোন অটো রিকশা চলবে না।

রংপুর মহানগর ব্যাটারিচালিত রিকশাভ্যান জাতীয় শ্রমিক ঐক্যজোটের ব্যানারে শ্রমিকরা এ কর্মসূচি পালন করছে।কয়েকদিন ধরে ধর্মঘটের পক্ষে নগরীজুড়ে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছে সংগঠনগুলো।ধর্মঘটে জাতীয় পার্টিপন্থী শ্রমিক নেতারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এদিকে অটোরিকশা চালক ও শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘটে বিপাকে পড়েছেন অনার্স তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার্থীরাসহ স্কুল-কলেজগামী সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চাকরিজীবীদের। নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো নিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন অনেকে। 

নগরীর জাহাজ কোম্পানি এলাকার আবদুল কাদের বলেন দীর্ঘক্ষণ অটোরিকশার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ধর্মঘটের কারণে অটোরিকশা চালকরা গাড়ি বন্ধ রাখায় সন্তানকে নিয়ে স্কুল যেতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।এটি বড় সমস্যা।তবে তাদের দাবি সঠিক আছে।  রংপুর মহানগর জাতীয় শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বাবু বলেন,আমরা দীর্ঘদিন থেকে আট দফা দাবি বাস্তবায়নে আন্দোলন করে আসছি।দাবি আদায়ে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। আমাদের কোনো দাবি মানা হযনি।এ কারনে অটোচালকদের ছয়টি সংগঠন একত্রিত হয়ে ধর্মঘট পালন করছি।

শ্রমিকদের ৮ দফা দাবি হলো- নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে রিকশা, ভ্যান ও ব্যাটারিচালিত রিকশাভ্যানের ভাড়া বৃদ্ধি করে নগরের বিশেষ বিশেষ জায়গায় তালিকা টাঙানো, শ্রমিকদের ওপর অন্যায়ভাবে পুলিশের চাপিয়ে দেওয়া জরিমানা আদায় বন্ধ, ব্যাটারিচালিত রিকশার দুই হাজার নতুন লাইসেন্স প্রদান, নগরের শাপলা চত্বর থেকে জিলা স্কুল মোড় পর্যন্ত প্রধান সড়কে রঙ দিয়ে চিহ্নিত করে অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে পৃথক লেন, রিকশাভ্যান ও ব্যাটারিচালিত রিকশা চুরি, ছিনতাই ও প্রতারণা করে অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে বিচার এবং ফুটপাত থেকে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা।

এ বিয়য়ে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন,রংপুরে অনেক বেশি অটোরিকশা ও চার্জার রিকশা চলাচল করছে।সিটি কর্পোরেশন থেকে নিবন্ধন (লাইসেন্স) দেওয়া রয়েছে ৮ হাজার ২৪০টি ব্যাটারিচালিত চার্জার রিকশা ও অটোরিকশার।আর চলাচল করছে তা থেকেই অনেক বেশি।আন্দোলনরত শ্রমিকদের কিছু দাবি আমার এখতিয়ারে না হলেও অন্য দাবিগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo