• বিশেষ প্রতিবেদন

ভাঙ্গা কুঁড়ে ঘরে দিন কাটছে অসহায় ফুলমতির, ভাগ্যে মেলেনি সরকারি সহায়তা

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ২৯ মে, ২০২১ ১১:৫৯:০৫

ছবিঃ সিএনআই

জামালপুর প্রতিনিধিঃ জামালপুরে মেলান্দহ উপজেলায় পলিথিনের ঘরে থেকেও অসহায় বিধবা ফুলমতি (৫৯) ভাগ্যে জোটেনি নেই সরকারি সহায়তা অনাহারে দিন কাটে ফুলমতি। 

স্থানীয় মেম্বারের দ্বারে দ্বারে ঘুরে অনেকটাই ক্লান্ত এ বিধবা নারী। উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের ছবিলাপুর গ্রামের মৃত ফজল উদ্দিনের স্ত্রী ফুলমতি। এক ছেলে এবং এক মেয়ে থাকলেও কেউ খোঁজ রাখেননি, স্বামীকে হারিয়েছেন ২ বছর আগে।

মাকে ফেলে ছেলে শাহাবুদ্দিন স্ত্রী সন্তান নিয়ে আলাদাভাবে সংসার করছেন। তার এমন বিপদে এগিয়ে আসেননি জনপ্রতিনিধিরাও। এখন পর্যন্ত তার ভাগ্যে জোটেনি বিধবা ভাতা, ভিজিডি কার্ড কিংবা মাথা গোঁজার মতো একটা ঘর। 

বৃহস্পতিবার (২৭মে) বিধবা ফুলমতির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কোনো রকমে পলিথিন দিয়ে তৈরি ছোট একটি ঝুপড়ি ঘরে থাকেন। নেই ঘরের বেড়া,যেদিন রাতে বৃষ্টি আসে সেদিন বিছানার এক কোণে বসে রাত কাটান তিনি। বৃষ্টির পানিতে সব কিছু ভিজে যায়। 

বর্তমানে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। জানতে চাইলে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বিধবা ফুলমতি বলেন, আমার খোঁজখবর নিয়ে কি হবে, ৮ বছর অসুখে থাইকা মারা গেছে স্বামী। শুধুমাত্র বসত ভিটা টুকু ছাড়া অন্য কোনো সহায়-সম্পদ রেখে যাননি।

একমাত্র ছেলেটাও আমার খোঁজ রাখে না, অন্যের বাড়িতে কাজ-কাম কইরা বাইচা আছি। এই একটা ঈদ গেলো কোন মেম্বার চেয়ারম্যান এক পয়সা টাকাও দিয়ে সহযোগিতা করেনি। করোনার জন্য ২৫০০ করে টাকা পাইসে সবাই। গত বছরে মেম্বারের কাছে গিয়ে কত বলছি আমার একটা নাম দিতে, কিন্তু আমি মেম্বার আমার নাম দেয় নাই।

প্রতিবেশী আলম মিয়া জানান, বৃষ্টি-বাদলের দিন খুব কষ্ট হয় এই বিধবা। ফুলমতি অতি দরিদ্র হলেও তার ভাগ্যে জোটেনি বিধবা ভাতা ও একটা সরকারি ঘর। স্থানীয়রা জানায়, টাকার বিনিময়ে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা কার্ড দিচ্ছে। সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ লুটেপুটে করে খাচ্ছে চেয়ারম্যান ও মেম্বার নেতারা। গরীব অসহায় মানুষগুলো সরকারি কোনো সহায়তা পাচ্ছে না।

ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার কাছে এসেছিলে একবার, তখন আমি তার আইডি কার্ড নিয়ে বিধবা ভাতার কার্ডের জন্য অনলাইনে আবেদন করেছিলাম। যাদের বিধবা ভাতার কার্ড হয়েছে পর্যায়ক্রমে তাদের নগদ একাউন্ট খোলা হচ্ছে। বিধবা ভাতার জন্য যাদের আবেদন করা হয়েছে তাদের কার্ড হবে পর্যায়ক্রমে।

ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান বলেন, যেহেতু বিষয়টি অবগত হয়েছি এখন খোঁজখবর নিয়ে তার জন্য ভাতার ব্যবস্থা করব। প্রথমে আমার কাছে আসলে তার কার্ডের ব্যবস্থা করে দিতাম আগেই। এবং ঘরের একটি ব্যবস্থা করে দিতাম।

এ ব্যাপারে মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ শাফিকুল ইসলাম বলেন, নতুন ঘরের বরাদ্দ আসলে একটি ঘর দেয়া হবে। এখন আমরা ফুলমতির জন্য ঢেউটিনের ব্যবস্থা করব। সেই সঙ্গে ভাতার জন্য আবেদন করে থাকলে সেটা করে দেওয়ার ব্যবস্থা করবো।

 

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo