রংপুর ব্যুরো : রংপুরে পুলিশের পৃথক অভিযানে গত ২৪ ঘণ্টায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের চার নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।গ্রেপ্তার হওয়া নেতাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা, হত্যাচেষ্টা, নাশকতা ও সরকার বিরোধী তৎপরতার অভিযোগ রয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রায়হান আলী গোলাপ (৫০), মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. মাহমুদুল হাসান শিশির (৩২), মিঠাপুকুর উপজেলার কাফ্রিখাল ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ফুয়াদ মণ্ডল (৩৭) এবং মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মনজুরুল হক মানিক (২৮)।
বুধবার (১২নভেম্বর)সকালে রংপুর মহানগর ও জেলা পুলিশের মিডিয়া সেল থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
সম্প্রতি রংপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কয়েকজন নেতার নাম উঠে আসে।পুলিশ বলছে, এসব মামলার ভিত্তিতেই চলমান অভিযানে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে অভিযুক্তদের।
তাজহাট থানা পুলিশের একটি দল গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে নগরীর দর্শনা মোড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা রায়হান আলী গোলাপকে গ্রেপ্তার করে।পুলিশ জানায়, জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী সহিংসতায় হামলা ও হত্যাচেষ্টাসহ তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
এর আগে একই দিন ভোরে নগরীর কামাল কাছনার গুঞ্জন মোড় এলাকা থেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ডা. মাহমুদুল হাসান শিশিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।তিনি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা ও গুলিবর্ষণের মামলার আসামি।
মেট্রোপলিটন কোতয়ালি থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন,“প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিশির বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। তাকে আদালতে হাজির করলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।”
ডা. শিশির কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।তিনি রংপুর নগরীর কামাল কাছনায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।
একই রাতে মিঠাপুকুর উপজেলার বৈরাগীগঞ্জ এলাকায় (শাহ আমানত তেলপাম্পের কাছে) অভিযান চালিয়ে কাফ্রিখাল ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ফুয়াদ মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি ওই ইউনিয়নের মুরাদদর্প নারায়নপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডলের ছেলে ও স্থানীয় ইউপি সদস্য।
মিঠাপুকুর থানার ওসি নুরে আলম ছিদ্দিকী বলেন,“ফুয়াদ মণ্ডল ছাত্রশিবির নেতা আশিকুর রহমান হত্যা মামলার আসামি।দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। বুধবার দুপুরে তাকে আদালতে তোলা হয়েছে।
এর আগে নগরীর মেডিকেল মোড় এলাকা থেকে মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মনজুরুল হক মানিককে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে হামলা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা রয়েছে।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী বলেন“গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা ও নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন-গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে আরও কয়েকজনকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন,“যে বা যারাই দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট বা অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে জড়াবে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ সর্বদা সতর্ক।
মন্তব্য (০)