• জাতীয়

‎জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটে একমত দলগুলো, বিশেষ আদেশ জারি নিয়ে ‘মতভেদ’ ‎

  • জাতীয়

ছবিঃ সংগৃহীত

নিউজ ডেস্কঃ জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট আয়োজনের বিষয়ে সব রাজনৈতিক দল একমত হলেও, সেই গণভোটের জন্য বিশেষ আদেশ জারি করবেন কে; রাষ্ট্রপতি নাকি প্রধান উপদেষ্টা, এ নিয়ে এখনও ঐকমত্যে পৌঁছায়নি তারা। সংবিধান বিশেষজ্ঞদের মতে, অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার করা সম্ভব নয়। বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতিরও বিশেষ আদেশ জারির ক্ষমতা নেই। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, গণঅভ্যুত্থানের প্রতীক এবং জনগণের সার্বভৌম অভিপ্রায়ের প্রতিনিধিত্বের বৈধতায় ‘বিশেষ আদেশ’ জারি করার এখতিয়ার রয়েছে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের।

‎গণঅভ্যুত্থানের ১৪ মাস পর, ১৭ অক্টোবর রাষ্ট্র সংস্কারের দলিলে সই করেন দেশের বিভিন্ন ধারার রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। স্বাধীনতার পর নতুন এক অধ্যায়ের সাক্ষী হয় বাংলাদেশ। বৃষ্টিস্নাত বিকেলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা জাতির সামনে তুলে ধরেন গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার এই অঙ্গীকার।

‎জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হলেও, গণভোটের আইনি ভিত্তি, সময় ও প্রশ্ন নির্ধারণে এখনও ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি। এ কারণেই সই করেনি গণঅভ্যুত্থানের নেতাদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

‎এনসিপির দাবি, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় বিশেষ আদেশ জারি করবেন অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান, অন্যদিকে বিএনপিসহ কয়েকটি দল মনে করে, এর জন্য রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশই যথেষ্ট। গত দুই মাসের আলোচনার পরও এই বিতর্কের নিষ্পত্তি হয়নি।

‎রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘এখন রাষ্ট্রপতির বদলে প্রধান উপদেষ্টা যে কোনো আইন স্বাক্ষর করবেন—এর কোনো পদ্ধতি সংবিধানে নেই। এটা করতে হলে পুরো সংবিধান স্থগিত করতে হবে এবং প্রধান উপদেষ্টাকে নতুন করে শপথ নিতে হবে।’

‎জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম মুসা বলেন, ‘পরবর্তী জনপ্রতিনিধিরা যখন সংবিধান সংস্কার করবেন, তখন নতুন কাঠামোর সংবিধান কার্যকর হলে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদেরও নতুন করে শপথ নিতে হবে।’

‎রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের মতে, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন একটি আইন, তবে এর চরিত্র হবে অধ্যাদেশমূলক—যা পরবর্তী সংসদে অনুমোদনের মাধ্যমে আইনের মর্যাদা পাবে।

‎হাসনাত কাইয়ুম আরও বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদের আইন উপদেষ্টারা আইন প্রণয়ন করবেন, কিন্তু তা প্রচারিত হবে রাষ্ট্রপতির নামে। এই অর্ডিন্যান্সগুলো পরবর্তী সংসদে অনুমোদিত হলে তবেই তা পূর্ণ আইনি বৈধতা পাবে।’

‎সংবিধানের ৯৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সংসদ ভেঙে গেলে জরুরি প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করতে পারেন। কিন্তু জুলাই সনদ বাস্তবায়নে মৌলিক কাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হবে, যা বিদ্যমান সংবিধানের সীমা অতিক্রম করবে বলে মনে করছে এনসিপি।

‎অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম মুসা বলেন, ‘বাংলাদেশে গণভোট হতে পারে বর্তমান সংবিধানের আওতায় কেবল নির্দিষ্ট আইন অনুযায়ী। কিন্তু সংবিধান সংস্কারের জন্য গণভোটের কোনো বিধান নেই। তাই নতুন প্রক্রিয়ায় যেতে হবে, যার অনুমোদন রাষ্ট্রপতির নেই—কারণ তিনি পুরনো কাঠামোর প্রতিনিধি।’

‎তিনি আরও বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের প্রতীক ড. মুহাম্মদ ইউনূসই জনগণের অভিব্যক্তির প্রতিনিধিত্ব করছেন। সুতরাং, বিশেষ আদেশ জারি করার এখতিয়ার কেবল তারই আছে।’

‎একই মত দিয়েছেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. শরীফ ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ‘সরকার পালিয়ে যাওয়ার পর দেশে এক শূন্যতা তৈরি হয়। সেই বিপ্লবী শক্তির দাবিতে ড. ইউনূস দায়িত্ব নিয়েছেন। জনগণের সেই আকাঙ্ক্ষার প্রতীক তিনিই, রাষ্ট্রপতি নন। ফলে বিশেষ আদেশ জারির এখতিয়ারও তার হাতেই।’

‎যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশেষ আদেশের পর গণভোটে সনদ অনুমোদিত হলে এবং পরবর্তীতে সংসদকে সংস্কার সভা হিসেবে কার্যকর করে আইন পাস করা হলে, এই বিতর্ক স্বাভাবিকভাবেই শেষ হবে।

‎আগামী ৩০ অক্টোবর শেষ হচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ। এর আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে চূড়ান্ত সুপারিশ সরকারকে জানাতে চায় কমিশন।

মন্তব্য (০)





image

প্রশাসনে রদবদল নিয়ে স্পষ্ট বার্তা দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

নিউজ ডেস্ক : প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ভোটে শান্তি-শৃঙ্খ...

image

নির্বাচন নিরপেক্ষ করার জন্য যা দরকার করব, বিএনপিকে প্রধান...

নিউজ ডেস্ক : আগামী ফেব্রুয়ারিতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সরকারের প্রস্তুতি ...

image

জেলেরা কিভাবে লাভবান হবেন, জানালেন উপদেষ্টা

নিউজ ডেস্ক : দেশের মৎস্য সম্পদ রক্ষার জন্য মা মাছ ধরা বন্ধের আহ্বান জানি...

image

ভারতের সঙ্গে ১০ চুক্তি বাতিলের তথ্য সঠিক নয়: পররাষ্ট্র উপ...

নিউজ ডেস্ক : ভারতের সঙ্গে ১০টি চুক্তি বাতিল করা হয়েছে বলে যে তালিকা সামা...

image

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন বিএনপির তিন নেতা

নিউজ ডেস্ক : প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ...

  • company_logo