
ছবিঃ সিএনআই
বাকৃবি প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত গবাদিপশুর রোগের উৎস ও বিস্তার তদন্তে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক। তারা আক্রান্ত খামার ও পার্শ্ববর্তী এলাকা ঘুরে স্থানীয় বাস্তবতা, রোগের বিস্তারের ধরণ এবং সচেতনতার ঘাটতি বিশ্লেষণ করছেন।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) এই তথ্য নিশ্চিত করেন দলের নেতৃত্বে থাকা বাকৃবির প্যারাসাইটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সহিদুজ্জামান।
গবেষক দলে আরো রয়েছেন মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আমিমুল এহসান ও অধ্যাপক ড. আজিমুন নাহার, প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. জাহান আরা বেগম, মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন, সদস্য সচিব ড. জায়েদুল হাসান এবং সহকারী অধ্যাপক ড. সাইফুর রহমান।
সম্প্রতি গাইবান্ধা ও রংপুর অঞ্চলে অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় বাকৃবি ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. বাহানুর রহমানের উদ্যোগে এ গবেষক দল গঠন করা হয়।
অধ্যাপক ড. আমিমুল এহসান বলেন, স্থানীয়ভাবে অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণের প্রকৃত কারণ নির্ণয় এবং ভবিষ্যতে প্রতিরোধের কার্যকর উপায় বের করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য।
মাঠ পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, অনেক গ্রামে অ্যানথ্রাক্সের টিকা দেওয়া হয়নি। মৃত পশুর সঠিক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কেও কৃষকদের ধারণা সীমিত। স্থানীয়দের সাক্ষাৎকারে জানা গেছে, অসুস্থ গরু জবাইয়ের সময় সংক্রমিত রক্তের সংস্পর্শে এসে কয়েকজন মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত অন্তত ১১ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।
তদন্তে উঠে এসেছে, আক্রান্ত গরু ও ছাগলের মৃতদেহ অনেক ক্ষেত্রে অল্প গভীরে পুঁতে রাখা হয়েছে বা খোলা জায়গায় ফেলে দেওয়া হয়েছে। এতে জীবাণু বৃষ্টি ও বন্যার পানির মাধ্যমে নদী ও আশপাশের মাটিতে ছড়িয়ে পড়ছে বলে ধারণা করছে দলটি। এসব দূষিত ঘাস ও পানি গবাদিপশুর খাদ্যে ব্যবহৃত হওয়ায় সংক্রমণ আরও ছড়াতে পারে।
গবেষক দলের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, আক্রান্ত এলাকা দ্রুত কোয়ারেন্টাইনে আনা, মৃত পশুর দেহ ৬ থেকে ৮ ফুট গভীরে পুঁতে ফেলা, এবং কুইক লাইম বা পোড়াচুন দিয়ে জীবাণুমুক্তকরণই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের মূল চাবিকাঠি। একই সঙ্গে সচেতনতা ও টিকা কার্যক্রম জোরদার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
অধ্যাপক সহিদুজ্জামান বলেন, “মৃত পশুর দেহের সঠিক ব্যবস্থাপনা না থাকাই সংক্রমণের প্রধান কারণ। সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে এই জীবাণু দীর্ঘমেয়াদে মাটি ও পানিতে সক্রিয় থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।”
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. বিপ্লব কুমার রায় জানান, এলাকাজুড়ে টিকাদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তাঁর মতে, প্রতি বছর সব গবাদিপশু নিয়মিত টিকার আওতায় আনতে পারলে অ্যানথ্রাক্স পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। তবে মাঠ পর্যায়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনবল বাড়ানো জরুরি।
গবেষক দল স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে আক্রান্ত এলাকায় টিকাদান, মৃত পশু ব্যবস্থাপনা এবং সচেতনতা কার্যক্রম নিয়ে দিকনির্দেশনা দিয়েছে। তাদের মতে, এই তদন্তের ফলাফল ভবিষ্যতে জাতীয় পর্যায়ে অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে নীতিনির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
নিউজ ডেস্ক : ডেঙ্গু জ্বরে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সঙ্গ...
নিউজ ডেস্ক : গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৫ জনের মৃত্য...
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দেশে ক্যান্সার চিকিৎসায় অধিক সংখ্যক বিশেষজ...
নিউজ ডেস্কঃ সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উ...
নিউজ ডেস্ক : গত ২৪ ঘণ্টায় (শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত)...
মন্তব্য (০)