
ছবিঃ সিএনআই
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: কারও মৃত্যুর সংবাদ কানে এলেই খোন্তা, কোদাল, ছুরি, করাত, দা, ছেনিসহ বিভিন্ন সহায়ক যন্ত্রপাতি নিয়ে কবরস্থানে ছুটে যাওয়া কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি আলগাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা গোরখোদক মনু মিয়া ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
শনিবার (২৮ জুন) সকাল ১০টা ২০ মিনিটে তার নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে মনু মিয়া গত (১৪ মে) ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসার নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরেছিলেন। এদিকে মনু মিয়ার মৃত্যুর খবরে এলাকাসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পরম যত্ন আর অপার ভালোবাসা দিয়ে তৈরি করেন মুসলিম সম্প্রদায়ের শেষ আশ্রয়স্থল ‘কবর’। মানুষের শেষ বিদায়ের একান্ত সঙ্গী হয়ে সাদা কাপড় পরানো থেকে শুরু করে আতর-গোলাপ মাখিয়ে পাশে থাকেন কবরে মাটি দেওয়া অবধি। হাওর অধ্যুষিত কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় শেষ বিদায়ের এই পরম সঙ্গীর নাম এই ছিলো গোরখোদক মনু মিয়া। গোর খুঁড়ে তিনি পার করে দিয়েছেন তার ৬৭ বছরের জীবনের সুদীর্ঘ ৪৯টি বছর। কোনো ধরনের পারিশ্রমিক কিংবা বখশিস না নিয়ে এ পর্যন্ত খনন করেছেন ৩ হাজার ৫৭টি কবর।
জানা যায়, দুই ভাই ও তিন বোনের সংসারে মনু মিয়া ছিলেন তৃতীয়। কবর খোঁড়ার কাজে বাহন হিসেবে এ পর্যন্ত তিনি চৌদ্দটি ঘোড়াও কিনেছেন। আর এ জন্য বিক্রি করতে হয়েছে তার পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি। পৈত্রিক অন্য সম্পত্তি বন্ধক দিয়েই চলছিল নিঃসন্তান মনু মিয়ার সংসার ও কবর খোঁড়ার কাজ। দ্রুততম সময়ের মধ্যে কবর খোঁড়ার কাজ করতে খুন্তি-কোদাল, দা, চাকু, স্কেল আর করাত ইত্যাদি ভর্তি বস্তাসহ হাওরের বন্ধুর পথে ঘোড়ায় চড়ে পৌঁছে যেতেন তিনি। কবর খোঁড়ার সেই নিখুঁত কারিগর আজ তার নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একজন সুদক্ষ গোরখোদক হিসেবে মনু মিয়ার সুনাম রয়েছে দুর্গম হাওর উপজেলা ইটনা, মিঠামইন, শাল্লা, আজমিরীগঞ্জসহ পাশের এলাকায়। এ ছাড়া রাজধানীর বনানী কবরস্থানসহ দেশের নানা প্রান্তে তাঁর সুনাম রয়েছে। শুধু কবর খনন করেই ক্ষান্ত হন না মনু মিয়া। এ পর্যন্ত যাঁদের কবর খুঁড়েছেন তিনি, তাঁদের মৃত্যুর দিন–তারিখ সব লিখে রাখেন নিজের ডায়েরিতে।
জয়সিদ্ধি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান বাহাউদ্দিন ঠাকুর গোরখোদক মনু মিয়র মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঘোড়ার মৃত্যুর পর থেকেই মনু মিয়া শারীরিকভাবে আরও দুর্বল হয়ে পড়েন। চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে এলেও আর আগের মতো হয়ে ওঠেননি। তার মৃত্যুতে আমরা একজন দয়ার সাগর, নিঃস্বার্থ মানুষকে হারালাম। এমন মানুষের অভাব কখনো পূরণ হওয়ার নয়।
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের উলিপুরে ‘প্রোগ্রাম অন অ...
গাজীপুর প্রতিনিধিঃ গাজীপুরের কালীগঞ্জ পৌরসভায়...
বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ায় ড. এনামুল হক আর্ট এন্ড কালচারাল একাডেমি ও টিএমএস...
গাজীপুর প্রতিনিধিঃ গাজীপুরের কালীগঞ্জে এ...
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলাকে প্রাথমিক শিক্ষায় স্কুল...
মন্তব্য (০)