• আন্তর্জাতিক

নিরাপত্তা ত্রুটির দায়ে বোয়িংকে জরিমানা

  • আন্তর্জাতিক
  • ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২১ ১১:৩১:০০

ছবিঃ সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংকে তার বিমানের গুণগতমান ও সুরক্ষা তদারকির ব্যর্থতা নিয়ে চলা কয়েক বছরের অভিযোগ নিষ্পত্তিতে মার্কিন নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে ৬৬ লাখ ডলার জরিমানা গুনতে হবে।

বোয়িং এর ৭৮৭ ড্রিমলাইনার জেট বিমান ত্রুটিমুক্ত করার মাধ্যমে যা কমানোর সুযোগ ছিল। প্রতিষ্ঠানটি এখন তার পার্কিংয়ে থাকা কমপক্ষে ৮৮টি এই মডেলের বিমানের ত্রুটি সারাতে প্রাণান্ত চেষ্টা চালাচ্ছে বলে শিল্পসংশ্লিষ্ট এক সূত্রে জানা গেছে। সূত্রটি বলছে, একেকটি বিমানের ত্রুটি অনুসন্ধান এবং তা সারাতে এক মাসের মতো সময় লাগবে। সব মিলিয়ে বোয়িংয়ের লোকসান কত মিলিয়ন কিংবা বিলিয়ন ডলার ছাড়াবে? তা নির্ভর করছে কতগুলো বিমানে ত্রুটি পাওয়ার পর। 

নিরাপত্তা চুক্তি ২০১৫ পরিপালনে ব্যর্থতার দায়ে বোয়িংকে ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের জরিমানা করার খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম রয়টার্সে প্রকাশের পরই পুঁজিবাজারে দিনের শেষভাগে সাড়ে পাচ শতাংশের বেশি দাম পড়ে যায় শেয়ারটির।  ৫৪ লাখ ডলার জরিমানা করা হয়েছে  চুক্তি ভঙ্গের জন্য, যেখানে বোয়িং তাদের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন বিষয়ের উন্নতি করা এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। বাকি ১২ লাখ দশ হাজার ডলার জরিমানা করা হয়েছে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় থাকা আরো দুটি মামলাকে এগিয়ে নিতে। 

ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের কর্মকর্তা স্টিভ ডিকসন এক বিবৃতিতে বলেন, এফএএ বোয়িং কে আরো জবাবদিহিতার আওতায় আনতে অতিরিক্ত জরিমানা করা হয়েছে।  এর আগে বোয়িং ২০১৫ সালেও বোয়িং মামালা নিষ্পত্তির অংশ হিসেবে এক কোটি ২০ লাখ ডলার জরিমানা দিয়েছে। 

প্রতিষ্ঠানটির এক মুখপাত্র ইমেইল বার্তায় বলেন, জবাবদিহির মাধ্যমে আমরা সর্বোচ্চ মানের সুরক্ষা নিশ্চিত চাই। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পর্যায়ের পরিচালন বিভাগ শক্তিশালী করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, পূর্বঘোষিত শাস্তির বিষয়টি ইতিবাচকভাবে নিষ্পত্তি হয়েছে। সুরক্ষা ও গুণগত বিষয়ে চলমান উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে। 

জানা যায়, বোয়িং এর প্রকৌশলীরা ত্রুটি অনুসন্ধান এবং কোনো রকম ঝুঁকি ছাড়াই জেটগুলো যাতে উড়তে পারে তা নিশ্চিতে কাজ করছেন। তবে বোয়িং কোনো এয়ারলাইন্সকেই জানায়নি কতগুলো বিমানে এমন ত্রুটি আছে। বিধ্বস্ত হওয়া ডাবরির ধ্বংসাবশেষে ত্রুটি খোঁজার পাশাপাশি যারা সুরক্ষার বিষয়টি দেখভালের দায়িত্বে থাকাদের এফএএর পক্ষ থেকে জেরা করা হয়েছে বলে জানান মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন। 

২০২০ সালের আগস্টে বোয়িং এফএএকে তাদের সর্বশেষ ত্রুটি (বিমানের ভেতরের অংশের কাঠামোর এক জায়গায় কুচকে যায়। যেখানে বিমানের হালকা ওজন গড়তে ব্যবহৃত কার্বন-কম্পোজিট ব্যারেল জুড়ে দেয়া হয়।) এই ত্রুটি মাসের পর মাস বা বছরজুড়ে লক্ষ করা যায়নি। কেননা স্বয়ংক্রিয় নিরাপত্তাব্যবস্থা যেখানে সুরক্ষা ত্রুটির সব তথ্য উঠে আসে তা এটা খোঁজার উপযুক্ত নয় বলে জানায় একটি সূত্র। 
 
উৎপাদন পর্যায়ের এ ত্রুটির কারণে বোয়িংকে গত বছরের অক্টোবর থেকে তার ৭৮৭ মডেলের বিমান সরবরাহ বন্ধ রাখতে হয়েছে। যদিও করোনা মহামারির থাবায় নগদ অর্থ বা তারল্য সংকটে ভুগছে প্রতিষ্ঠানটি। জ্বালানি সাশ্রয়ী এই মডেলের বিমান অ্যাভিয়েশন খাতে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ১ হাজার ৮৮২টি বিমানের বিক্রয়াদেশ পেয়েছে বোয়িং, যার অর্থমূল্য ১৫০ বিলিয়ন বা ১৫ হাজার কোটি ডলার। কিন্তু অত্যাধুনিক উৎপাদন ব্যবস্থা ও বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইন কয়েক বছরব্যাপী সমস্যার মুখে পড়েছে।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo