• সমগ্র বাংলা

বরিশালে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে যুবকের মৃত্যুদণ্ড

  • সমগ্র বাংলা
  • ০৩ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৮:০৩:০৯

ছবিঃ সংগৃহীত

 

নিউজ ডেস্কঃ বরিশালে স্কুলছাত্রী সিমা আক্তারকে (৮) ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে আবুল কালাম আজাদ ওরফে কালু নামে (৩৫) এক যুবকের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

এছাড়াও হত্যার আগে শিশুটিকে অপহরণের দায়ে তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং হত্যার পর মরদেহ গুম করার দায়ে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি নিহত শিশুটির পরিবারকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আসামির সম্পত্তি বিক্রি করে ওই টাকা আদায়ের নির্দেশ দেয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আবু শামীম আজাদ আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন।

নিহত সিমা আক্তার বরিশাল নগরীর ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাশিপুর পশ্চিম গণপাড়া এলাকার আব্দুল জব্বারের মেয়ে ও পূর্বগণপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আবুল কালাম আজাদ ওরফে কালু গণপাড়া এলাকার মৃত আব্দুল ওহাব খানের ছেলে। তিনি পেশায় ট্রাকচালকের সহকারী (হেলপার)।

নিহত সিমার পরিবার অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল হওয়ায় তাদেরকে মামলা পরিচালনায় সহায়তা করে বেসরকারি সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন অব ভলেন্টারি অ্যাকশন ফর সোসাইটি (আভাস)। আভাসের হয়ে বাদীপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আইনজীবী মোখলেসুর রহমান বাচ্চু।

রায়ের বরাত দিয়ে তিনি জানান, সিমার গ্রামের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামে। কাজের সন্ধানে কয়েক বছর আগে সিমার পরিবার বরিশাল নগরীতে আসে। সিমার বাবা আব্দুল জব্বার ভ্যান চালান। সিমার মা মাহমুদা বেগম মানুষের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করেন। সিমা মেধাবী ছিল। সংসারে অভাব থাকলেও পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ থাকায় সিমার পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছিলেন তার বাবা-মা। ২০১৮ সালের ১১ মার্চ সকালে সিমা স্কুলের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয় সিমা। এরপর সে আর বাসায় ফেরেনি।

ওই দিন বিকেলে খোঁজাখুঁজির সময় প্রতিবেশী আবুল কালাম আজাদ ওরফে কালুর বাড়ির পাশে সিমার পায়ের জুতা পড়ে থাকতে দেখা যায়। এর দুইদিন পর অর্থাৎ ১৩ মার্চ কাশিপুর গণপাড়ার একটি পারিবারিক কবরস্থান থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় সিমার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিনই সিমার মা বাদী হয়ে প্রতিবেশী আবুল কালাম আজাদ ওরফে কালুকে আসামি করে বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন।

আইনজীবী মোখলেসুর রহমান বাচ্চু বলেন, এ ঘটনায় আবুল কালাম আজাদ ওরফে কালুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আবুল কালাম আজাদ ওরফে কালু হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। আদালতে আবুল কালাম আজাদ ওরফে কালু জানান- স্কুল বিরতির সময় সিমার পায়খানা চাপে। স্কুলের বাথরুম তালাবদ্ধ দেখে তার বাড়ির বাথরুম ব্যবহার করে সিমা। তার স্ত্রী ওই দিন বাড়ি ছিল না। সিমাকে বাথরুম থেকে বের হতে দেখতে পেয়ে পথরোধ করেন তিনি।

এরপর টেনেহিঁচরে সিমাকে তার ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করেন। লোক জানাজানির ভয়ে পরে তোয়ালে পেঁচিয়ে সিমার গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করেন। এরপর প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে সিমার মরদেহ কবরস্থানে ফেলে আসেন তিনি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগরীর বিমানবন্দর থানা পুলিশের পরিদর্শক আব্দুর রহমান মুকুল ২০১৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আবুল কালাম আজাদ ওরফে কালুকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেন। ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত পৃথক তিনটি ধারায় আজ রায় দেন।
 

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo