• অপরাধ ও দুর্নীতি

বরিশালে রোগীর স্বজনের ‘স্পর্শকাতর স্থানে’ হাত, ক্লিনিকের মালিক কারাগারে  

  • অপরাধ ও দুর্নীতি
  • ২০ আগস্ট, ২০২০ ১৯:০২:২৪

ছবিঃ সংগৃহীত

 

নিউজ ডেস্কঃ ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন এক নারী রোগীর বোনকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে বরিশালের উজিরপুরে ‘মায়ের দোয়া ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার’ এর মালিক ও ভুয়া চিকিৎসক রেজাউল করিমকে (৩০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে তাকে আদালতে তোলা হলে আদালত কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

গতকাল বুধবার গভীর রাতে উপজেলার পশ্চিম সাতলা এলাকার ওই ক্লিনিক থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। রেজাউল ওই এলাকার মৃত আদম আলীর ছেলে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রেজাউল করিমকে বরিশাল মহানগর মুখ্য হাকিমের (সিএমএম) আদালতে তোলা হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আদালতে রেজাউলের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত রেজাউল নিজেকে পল্লী চিকিৎসক পরিচয় দিলেও তিনি ভুয়া চিকিৎসক বলেই প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

রোগীর স্বজন ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরের রাজৈর থানার গোয়ালদী গ্রামের বাসিন্দা ওই তরুণীর অসুস্থ বোনকে চিকিৎসার জন্য গত ১১ আগস্ট বরিশালের উজিরপুর উপজেলার পশ্চিম সাতলা এলাকার ‘মায়ের দোয়া ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে’ ভর্তি করা হয়। সেখানে ভর্তির পর অসুস্থ বোনের সেবা-যত্নের জন্য স্বজনরা তাকে ক্লিনিকেই রাখেন।

এরপর থেকেই ওই তরুণীকে ‘মায়ের দোয়া’ ক্লিনিকের পরিচালক রেজাউল করিম নানাভাবে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করেন। এতে অতিষ্ঠ হয়ে ওই তরুণী বাড়িতে চলে যেতে চাইলে ক্লিনিকের পরিচালক রেজাউল তাতে বাধা দেন এবং অশালীন আচরণ শুরু করেন।

একপর্যায়ে ক্লিনিকের কর্মচারীদের দিয়ে ওই তরুণীকে গত রোববার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ক্লিনিকের ভেতরে আটকে রাখা হয় বলেও অভিযোগ করেন স্বজনরা।

হয়রানির শিকার তরুণী সংবাদমাধ্যমকে জানান, ক্লিনিকে অবস্থানের পরপরই পরিচালক রেজাউল তাকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করা শুরু করেন। এরই মধ্যে গত সোমবার মধ্যরাতে রোগীর ওয়ার্ডে এসে ঘুমন্ত অবস্থায় হঠাৎ তার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন রেজাউল। তখন চিৎকার দিয়ে উঠলে রেজাউল নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দেন এবং অবস্থা বেগতিক দেখে সটকে পরেন।

সর্বশেষ গতকাল বুধবার সন্ধ্যার পর তাকে (তরুণী) রেজাউল করিম তার কক্ষে ডেকে নিয়ে যৌন হয়রানি করেন। সেখান থেকে ওই তরণী কোনোভাবে বেড়িয়ে এসে তার ভাইকে বিষয়টি জানান। পরে তার ভাই উজিরপুর থানা পুলিশকে বিষয়টি জানান এবং লিখিত অভিযোগ দিলে রাতেই ক্লিনিকে অভিযান চালিয়ে রেজাউলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে থানা পুলিশ জানান, ক্লিনিকের স্টাফ ও আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রেজাউল করিম দীর্ঘদিন ধরে ওই ক্লিনিকে নারী রোগী ও তার স্বজনদের চিকিৎসা দেওয়ার নামে যৌন হয়রানি করে আসছেন। অনেকেই লজ্জায় বিষয়টি গোপন করেন। কেউ প্রতিবাদ করলে তাদের হুমকি বা টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেন ক্লিনিক মালিক রেজাউল করিম।

তবে  থানা হেফাজতে থাকাকালীন রেজাউল করিম অভিযোগগুলো অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার হাসপাতালে কোনো নারীর সঙ্গে যৌন নিপিড়নের ঘটনা কখনই ঘটেনি। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এই অভিযোগ করা হচ্ছে।’

উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল আহসান জানান, এক নারী রোগীর ছোট বোনকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে ক্লিনিক মালিক রেজাউল করিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই তরুণী বাদী হয়ে নারী নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করার পর রেজাউলকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত রেজাউল তার নামের আগে ডাক্তার শব্দটি ব্যবহার করলেও এটি ভুয়া বলেই জানা গেছে বলে জানান ওসি।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo