নিউজ ডেস্কঃ ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। এই ধাপে ২৪টি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) এবং বাকি উপজেলাগুলোতে কাগজের ব্যালটে ভোট হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২১ মে) সকাল ৮টায় শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ একযোগে নিরবচ্ছিন্নভাবে চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
ইতোমধ্যে এসব উপজেলায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা এবং যান চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
এর আগে গত ৮ মে প্রথম ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই ভোটে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রত্যাশা অনুযায়ী ভোটার উপস্থিতি হননি। মোট ভোট পড়েছিল মাত্র ৩৬.১%। তবে দ্বিতীয় ধাপের ভোটে কেন্দ্রে পর্যাপ্ত ভোটার উপস্থিতি হবে বলে প্রত্যাশা করছে ইসি। সেজন্য কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি বাড়াতে এবং নির্বাচন সুন্দর ও সুষ্ঠু করতে সব ধরনের প্রস্তুতিও নিয়েছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
এদিকে গত ২ এপ্রিল দ্বিতীয় ধাপে ১৬১ উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে মঙ্গলবার ভোটগ্রহণ হচ্ছে ১৫৬টিতে।
জানা গেছে, রাউজান ও কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে সেখানে ভোটগ্রহণের প্রয়োজন হচ্ছে না। এছাড়াও বান্দরবানের রুমা ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। বরিশালের বাবুগঞ্জ, উজিরপুর ও বানারীপাড়া উপজেলার ভোট এ ধাপে থাকলেও তা পিছিয়ে চতুর্থ ধাপে নেওয়া হয়েছে।
দ্বিতীয় ধাপে ২১ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে সাতজন চেয়ারম্যান এবং সমানসংখ্যক ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান।
ইসি জানিয়েছে, দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে ১,৮২৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে চেয়ারম্যান ৬০৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান ৬৯৩ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ৫২৮ জন। এ নির্বাচনে ভোটার রয়েছেন ৩ কোটি ৫২ লাখ। ভোটারদের মধ্যে এক কোটি ৭৯ লাখ ৫ হাজার পুরুষ, এক কোটি ৭২ লাখ ৯৯ হাজার নারী এবং হিজড়া ভোটার রয়েছেন ২৩৭ জন।
এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় কোনো প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়নি আওয়ামী লীগ। নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে মাত্র চারটি দল প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে। দলগুলো হলো জাতীয় পার্টি (এরশাদ), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ এবং জাতীয় পার্টি (জেপি)। এ চারটি দল চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আটজন প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে।
এদিকে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো এ নির্বাচন বয়কট করেছে। তবে বেশকিছু উপজেলায় বিএনপি সমর্থিতরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, ১৫৬ উপজেলায় মোবাইল স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে বিজিবি মোতায়েন থাকবে ৪৫৮ প্লাটুন। ভোটকেন্দ্রে পুলিশ মোতায়েন থাকবে ৪৭,৮২৯ জন। স্ট্রাইকিং ও মোবাইল টিম হিসেবে পুলিশ থাকবে ১৯,০৫৭ জন। এলিট ফোর্স র্যাব থাকবে ২,৭৬৮ জন ও আনসার সদস্য থাকবে ১ লাখ ৯৩ হাজার ২৮৭ জন।
১৫৬ উপজেলায় মোট কেন্দ্রের সংখ্যা রয়েছে ১৩ হাজার ১৬টি। ভোট কক্ষ রয়েছে ৯১,৫৮৯। অস্থায়ী ভোটকক্ষ রয়েছে আট হাজার ৮৪১টি।
উল্লেখ্য, ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ৮ মে। দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬টি উপজেলার ভোটগ্রহণ চলছে। এরপর তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলায় আগামী ২৯ মে এবং চতুর্থ ধাপে ৫৫টি উপজেলায় আগামী ৫ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ২২টি, দ্বিতীয় ধাপে ২৪টি, তৃতীয় ধাপে ২১টি ও চতুর্থ ধাপে দুটি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইলেকশন কমিশন (ইসি)।
মন্তব্য ( ০)