বগুড়া প্রতিনিধিঃ জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন কল পেয়ে বগুড়ার গাবতলীতে এক নারী নৃত্য শিল্পী ও তিন আলোকচিত্রকরকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় চার অপহরণকারীকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন, গাবতলী উপজেলার রামেশ্বাপুর পাঁচকাতুলী গ্রামের সাফিন মিয়া (২২), আব্দুস ছালাম (২০), মামুনুর রশিদ (২০) ও মোস্তাকিম (১৯)। বুধবার ভোর সোয়া ৫ টার দিকে ওই গ্রামের বুড়িতলা মোড় থেকে তাদের গ্রেপ্তার ও অপহৃতদের চারজনকে উদ্ধার করা হয়। পরে অপহৃত আলোকচিত্রকর মোন্তাসির শিশির বাদী হয়ে গাবতলী থানায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। আজ বিকেলে আদালতে সোপর্দ করা হলে জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতের বিচারক মির্জা শায়লা গ্রেপ্তারদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বুধবার বিকেলে গাবতলী থানা পুলিশ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, বুধবার ভোরে বগুড়া সদর থানা এলাকার বাসীন্দা এক ব্যক্তি ‘জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯’-এ ফোন করে জানান তার বোন নৃত্য শিল্পী সামিয়া পপিসহ চারজনকে গাবতলী থানার রামেশ্বাপুর গ্রামে অপহরণ করে রাখা হয়েছে। অপহরণকারীরা তার বোনের ব্যবহত মুঠোফোন নম্বর থেকে মুক্তিপণ হিসেবে ২ লাখ টাকা দাবি করেছে। ৯৯৯ থেকে কলারের সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করে উদ্ধার অভিযানে নামে পুলিশ। তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় রামেশ্বরপুরের পাঁচকাতুলী বুড়িতলা মোড়ে আরিফুল ইসলাম রাঙ্গা নামে এক ব্যক্তির পরিত্যক্ত গোডাউনে অভিযান চালানো হয়। সেখানে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আরিফুলসহ বেশ কয়েকজন অপহরণকারী পালিয়ে যায় ও হাতেনাতে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই সময় পুলিশ একটি চাপাতি ও চাকুসহ মাদক সেবনের সরঞ্জামাদি উদ্ধার করে। এছাড়াও ঘটনাস্থল থেকে অপহৃত চারজনকে উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ আরও জানায়, মামলার বাদী মোন্তাসির ও তার দুই বন্ধু অর্কো এবং জয় পেশায় আলোকচিত্রকর। মঙ্গলবার রাতে বগুড়া শহর থেকে রামেশ্বাপুরের পাঁচকাতুলী গ্রামে একটি বাড়িতে নৃত্য শিল্পী সামিয়াসহ তারা অনুষ্ঠানে অংশ নিতে যান। রাত ১০ টার পর অনুষ্ঠান শেষে সিএনজি চালিত অটোরকিশাযোগে শহরে ফেরার পথে ওই গ্রামের বুড়িতলা মোড়ে আরিফুল নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে ৮ থেকে ১০ জন যুবক তাদের গতিরোধ করে কাছে থাকা ১৩ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে তাদের অন্য তিনটি অটোরিকশায় উঠিয়ে আরিফুলের পরিত্যক্ত গোডাউনে আটকে রেখে মারধর ও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। সামিয়ার ব্যবহত মুটোফোন নম্বর দিয়ে তার এক ভাইয়ের কাছে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। এই সময় টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আরিফুল একটি ইট দিয়ে সামিয়ার মাথায় গুরুতর আঘাত করে। উদ্ধারের পর তাকে গাবতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
গাবতলী মডেল থানা পুলিশের ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, আরিফুল অপহরণকারী চক্রটির মূলহোতা। তাকেসহ পলাতক বাকীদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা অব্যাহত আছে।
মন্তব্য ( ০)