• সমগ্র বাংলা

তিস্তার জমিতে অবৈধভাবে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো গড়ে উঠছে, বাপার উদ্বেগ

  • সমগ্র বাংলা
  • ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১৭:৩৭:৪৬

ছবিঃ সিএনআই

রংপুর ব্যুরোঃ রংপুর বিভাগের বাসযোগ্য পরিবেশ প্রতিবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা। সংগঠনটির নেতাদের অভিযোগ, সরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে উত্তরের প্রাণ প্রকৃতি আজ হুমকির মুখে।

অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, দখল ও দূষণের কারণে এ অঞ্চলের নদ-নদী, খাল-বিল, পুকুর-জলাশয়, খেলার মাঠসহ বাসযোগ্য খোলা জায়গাগুলো দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। ফলে নগর-বন্দর হচ্ছে দূষিত, বসবাসের অযোগ্য এবং সমস্ত প্রাণ প্রকৃতি হুমকিতে পড়ছে।  

রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রংপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপার কেন্দ্রীয় সভাপতি নুর মোহাম্মদ তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম ফরিদ, রংপুর জেলা বাপার সমন্বয়ক সরোয়ার জাহান ও সংগঠক রশিদুস সুলতান বাবলু প্রমুখ।

লিখিত বক্তব্যে বাপার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম ফরিদ বলেন, উত্তরের প্রাণ-প্রকৃতি নদীনির্ভর। অথচ প্রসাশনের নাকের ডগায় তিস্তা, ঘাঘটসহ অনেক নদীর ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন হচ্ছে ৷এভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর পানি প্রবাহের গতিপথ পরিবর্তন হয়ে ভাঙন প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষ ভিটামাটি হাড়িয়ে নিঃস্ব হচ্ছে। কৃষিনির্ভর তিস্তা অববাহিকার জমি হারানোর সাথে সাথে মানুষ কর্মসংস্থানও হারাচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, ১৯৯৮ সালে ভারত গজলডোবায় বাঁধ (ব্যাবেজ) নির্মাণ করে তিস্তা নদীর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। বিগত কয়েক বছর থেকে তিস্তরে বাম তীরে সরে যাওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তিস্তা ব্যারেজের আপ স্টিম ছাতনাই কলোনি, কিংবা থগাখড়িবাড়ি থেকে কুড়িগ্রামের বজরা পর্যন্ত ব্যাপক ভাঙন প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

এই ভাঙন প্রবণতাকে উৎসাহিত করছে শুকনো মৌসুমে অবৈধ বালু উত্তোলন। ডান তীরে তালপট্টি, হরিণচড়াসহ বেশ কিছু স্থানে ভাঙনের মুলে রয়েছে অবৈধ বালু উত্তোলন। আসছে শুকনো মৌসুমে বালু উত্তোলন প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে। এখন থেকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের না করলে তিস্তা গতিপথ পরিবর্তন করবে এবং ব্যাপক ভাঙন প্রবণ হয়ে উঠবে।

বাপার এই সংগঠক বলেন, তিস্তার জমি অবৈধভাবে দখল করে বাইশপুকুরে রহিম আফরোজের নির্মাণাধীণ সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প, শৌলমারীতে ইন্টারকো পাওয়ার লিমিটেড গড়ে উঠেছে। 

এ সব প্রকল্পের উন্নয়ন করতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এর ফলে নদীর গতিপথ পরিবর্তনের সঙ্গে বাড়ছে ভাঙন প্রবণতা। এসব বিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তোলা হয়েছে বাণিজ্যিক স্বার্থে নয়তো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীগত স্বার্থে। এ পরিস্থিতিতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করার পাশাপাশি টেকসই পরিবেশ বান্ধব উপায়ে ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি করছি।

ফরিদুল ইসলাম বলেন, শ্যামা সুন্দরী খাল নগরীর ১৫টি ওয়ার্ডের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং স্থানভেদে ৬০ থেকে ১২০ ফুট প্রস্থ খালটি হাজারের উপর দখলদারদের দখলে। খালটি এখন ১০ থেকে ১২ ফুট প্রস্থ একটি নালা। শ্যামাসুন্দরী খাল এক সময় রংপুর শহরের লাইফলাইন ছিল। অবৈধ দখল, গৃহস্থালির বর্জ্য ফেলা ও যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, প্রশাসনের উদাসীনতা, রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে প্রাচীনতম এই খাল এখন সরু নালায় পরিণত হয়েছে। মশা নিধন ও রোগবালাই দূর করার লক্ষ্যে যে খাল খনন করা হয়েছিল এখন তা মশা উৎপাদনের মেশিনে পরিনত হয়েছে। একই অবস্থা কেডি খাল, খোকসা ঘাঘট ও ঘাঘটের। আমরা অবিলম্বে শ্যামা সুন্দরী খাল খনন, দখল ও দূষণমুক্ত করে বাসযোগ্য রংপুর শহর গড়ে তোলার দাবি জানাচ্ছি।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo