• বিশেষ প্রতিবেদন

বৃষ্টির অভাবে ঠাকুরগাঁওয়ে আমন খেত ফেটে চৌচির, বিপাকে কৃষক

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ২২ জুলাই, ২০২৩ ২০:০২:৪৪

ছবিঃ সিএনআই

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ আমন ধান রোপণের ভরা মৌসুম আষাঢ় মাস শেষ হয়ে এলেও ঠাকুরগাঁওয়ে বেশ কিছুদিন বৃষ্টির দেখা নেই। বৃষ্টির অভাবে মাঠের পর মাঠ ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। ফলে ধান রোপণ করতে পারছেন না কৃষক। একইভাবে বৃষ্টির অভাবে রোপণ করা ধানের চারাগুলো মরে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষক। এদিকে সেচযন্ত্র চালুর মাধ্যমে জমিতে পানি নিয়ে ধান রোপণের পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।

মোহাম্মদপুর গ্রামের কৃষক আনসার আলী বলেন, আমন ধান রোপণ করা হয় সম্পূর্ণ বৃষ্টির পানি দিয়ে। কিন্তু বেশ কিছুদিন ঠাকুরগাঁওয়ে বৃষ্টি হচ্ছে না। যে কারণে মাঠের জমিতে কোনো পানি নেই। সময় চলে যাচ্ছে কিন্তু আমরা পানির অভাবে ধান রোপণ করতে পারছি না। এছাড়া পানির অভাবে বীজতলা শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। এতে আমরা খুব বিপদের মধ্যে পড়ে গেছি। এখন আমরা কী করব, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছি। বৃষ্টির কোনো আলামত পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা যদি আবাদ করতে না পারি, তাহলে কীভাবে সংসার চালাব।

একই গ্রামের কৃষক তসলিম উদ্দিন বলেন, বীজ থেকে শুরু করে জমিতে রোপণের জন্য চারা তৈরি করে রেখেছি, শুধু বৃষ্টির অপেক্ষা। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় জমি নিয়ে বিপাকে পড়েছি। এখন পর্যন্ত এক বিঘা জমিতেও ধান লাগাতে পারিনি। সময়মতো যদি বৃষ্টি না হয়, তাহলে তো সমস্যা বেশি। আর আবাদ যদি না হয়, তাহলে সমস্যা আরো বেশি হবে। আমাদের এলাকায় শ্যালো মেশিনের কোনো পরিস্থিতি নেই। ডিপটিউবওয়েল আছে কিন্তু মালিকদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। তারা যদি ডিপটিউবওয়েল চালু করতেন, তাহলে ধান রোপণ করতে পারতাম। অনেক দিন শুকনো জমি নিয়ে বৃষ্টির অপেক্ষায় আছি।  

জালালপুর গ্রামের কৃষক লুত্ফর রহমান বলেন, মাঠের অবস্থা খুবই খারাপ। বৃষ্টি নেই, জমি ফেটে চৌচির। জমিতে প্রচুর ঘাস। বাধ্য হয়ে শুকনো জমি চাষ করে নিচ্ছি। এখন কতদিনে বৃষ্টি হবে, তারপর জমিতে ধান রোপণ করা হবে। যদি পানির ব্যবস্থা হতো তাহলে জমিতে ধান রোপণ করতে পারতাম।একই গ্রামের কৃষক মিরাজুল ইসলাম বলেন, জমিতে পানি না থাকার কারণে এখন পর্যন্ত কোনো ধান রোপণ করা যাচ্ছে না।

শোনা যাচ্ছে ডিপটিউবওয়েল চালু করে অনেকে জমিতে ধান রোপণ করছেন। কিন্তু আমাদের এলাকায় এখন পর্যন্ত এ রকম কোনো ব্যবস্থা নেই, যে কারণে ধান রোপণ সম্ভব হচ্ছে না। আর শ্রাবণ মাস শুরু চলছে কিন্তু আষাঢ় মাস চলেই জাবে। এ সময় জমিতে ধান লাগানো প্রায় শেষের দিকে হয়ে যায়। কিন্তু এবার তো আমরা জমি কেউ দুবার চাষ করেছি, কেউ চার চাষ করেছি। কিন্তু অনাবৃষ্টির কারণে সেই জমিগুলো পড়ে আছে, ধান রোপণ করা যাচ্ছে না।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানা যায়, এ বছর জেলায় আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ১শ হেক্টর জমিতে। এ পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ৮ হাজার ৬৪৪ হেক্টর জমি। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৩৫৫ মেট্রিক টন। যা গত বছরে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩৫০ হেক্টর। আবাদ হয়েছিল ১৮ হাজার ৬৪০ হেক্টর। যাতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪ লাখ ২৯ হাজার ৭১৬ মেট্রিক টন। 

 

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo