• বিশেষ প্রতিবেদন

টিফিনের টাকা জমিয়ে তৈরি করেছেন পাঠাগার 

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩ ১৬:০৭:৫১

ছবিঃ সিএনআই

আতোয়ার রহমান রানা, গাইবান্ধাঃ মেহেদী হাসান অর্নাস ১ম বর্ষের ছাত্র। গাইবান্ধা সদর উপজেলার টেংগরজানি গ্রামে মো হান্নান মিয়ার পরিবারে জন্ম।ছোট থেকে সে শিক্ষানুরাগী, মেধাবী সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের জন্য কাজ করে আসছে।সে জন্য  পিছিয়ে পড়া গ্রামের মানুষের মাঝে  শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে পাঠাগার তৈরির  উদ্যোগ গ্রহণ করেন। অর্থনৈতিক দিক থেকে পারিবারিক নানা সমস্যা থাকলেও স্কুলের টিফিনের টাকা জমিয়ে গ্রামেই পাঠাগার গড়ে তুলেছেন।আর সেই পাঠাগারের নাম দিয়েছেন ‘বই ঘর পাঠাগার’।

মেহেদী হাসান আয় রোজগার করা কোন মানুষ নন, সবে উচ্চ মাধ্যমিকের গন্ডি পেরিয়ে গাইবান্ধা সরকারি কলেজ এ ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ১ম বর্ষে ভর্তি হয়েছেন।তার মতো কম বয়সে যখন অন্য ছেলে মেয়েরা মোবাইল ফোনে আসক্ত তখন মেহেদী মাথায় প্রত্যন্ত গ্রামে পাঠাগার গড়ার স্বপ্ন দেখেন।সেই চিন্তা থেকেই ২০২০ সালে বই ঘর পাঠাগার তৈরি করেন।বর্তমানে তার এই পাঠাগার এ সকাল বিকাল বই পড়ায় মগ্ন গ্রামের ছেলে মেয়ে থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষ। 

মেহেদী হাসান এর সাথে কথা হলে, স্বপ্নবাজ এই তরুণ বলেন, বিভিন্ন সময় দেখা যায় পাঠাগার গুলো সাধারণত শহর কেন্দ্রিক হবার কারণে গ্রামের তরুণ প্রজন্ম অবসরে বই পড়ার সুযোগ পায় না। সেক্ষেত্রে তরুণ প্রজন্ম ডিজিটাল প্লাটফর্মে গেমস ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।সেই জন্য প্রত্যন্ত গ্রামে পাঠাগার তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করি।এছাড়া পাঠাগারটি গত ১০ সেপ্টেম্বর গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর তালিকাভুক্ত হয়।

বর্তমানে মেহেদী পাঠাগারের এক হাজারের বেশি বই আছে।বঙ্গবন্ধু আত্মজীবনী থেকে শুরু করে  সাহিত্য, ইতিহাস, জীবনী,বিজ্ঞান, শিশুদের উপযোগী বিভিন্ন বই সহ দৈনিক সংবাদপত্র স্থান পেয়েছে। শিক্ষার্থী আফরোজা আক্তার বলেন,নিজ গ্রামে পাঠাগার হবে কখনো ভাবতে পারিনি। তাছাড়া স্কুল ছুটির পর কিংবা বন্ধের দিন করে সময় পেলেই  আমরা পাঠাগারের এসে বিভিন্ন ধরনের বই পড়ি।

স্থানীয় লোকজনের কাছে মেহেদীর পাঠাগার সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলেন,পাঠাগারটি তৈরি হওয়ায় গ্রামের দৃশ্যপট অনেকটা বদলে গেছে। যে সময় গ্রামের ছেলে মেয়েরা মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত ছিল তারা এখন  নিয়মিত পাঠাগারের এসে বই পড়ে।

জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষক মোঃ নুরুল ইসলাম এর কাছে মেহেদীর পাঠাগার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রত্যন্ত গ্রামে মেহেদী নামে যে বালক পাঠাগারটি তৈরি করেছে এটা সত্যি বর্তমান সময়ে প্রসংশা পাবার যোগ্য। কেননা,তার মতো অল্প বয়সে ছেলেরা যেখানে টিফিনের টাকা দিয়ে ধুমপান ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ে ব্যস্ত সেখানে মেহেদী তরুণ হয়ে অন্য তরুণ প্রজন্মের জন্য শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে পাঠাগার তৈরি করেছে।এজন্য তাকে সাধুবাদ জানানো দরকার। 

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo