• জাতীয়
  • লিড নিউজ

কেনা মূল্যেই গ্রাহকদের গ্যাস নিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

  • জাতীয়
  • লিড নিউজ
  • ১৯ জানুয়ারী, ২০২৩ ০৯:৩২:৪৪

ছবিঃ সংগৃহীত

নিউজ ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গ্যাস যে মূল্যে কেনা হবে সেই মূল্য গ্রাহককে দিতে হবে, সে ক্ষেত্রে দাম বাড়তে পারে। তিনি আরও বলেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ালেও মূল্যস্ফীতি আমরা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছি। তাতে আমরা সফলও হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন ৪০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত হবে। বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে মুজিবুল হক চুন্নু এবং এম আব্দুল লতিফের পৃথক দুটি প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধিশীল রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে। আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে সরকার জোর দেওয়ার কারণে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় উন্নয়নে সবচেয়ে এগিয়ে আছে। এর আগে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর নিয়ে আইএমএফের ঋণের শর্তে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উত্থাপন করে বলেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ফলে মূল্যস্ফীতির চাপ সরকার কীভাবে সামলাবে। জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আইএমএফ তখনই ঋণ দেয় যখন দেশ ঋণ পরিশোধের যোগ্যতা অর্জন করে। এখানে আমরা তেমন কোনো শর্ত দিয়ে ঋণ নিইনি।

তিনি আরও বলেন, আমরা তো বিদ্যুতে ভর্তুকি দিচ্ছি, গ্যাসে ভর্তুকি দিচ্ছি। আমার প্রশ্ন হলো পৃথিবীর কোন দেশ গ্যাস আর বিদ্যুতে ভর্তুকি দেয়। কেউ দেয় না। আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়েছি। বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়িয়েছি। কিন্তু বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাইকে সাশ্রয়ী হতে হবে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পর ইংল্যান্ডে ১৫০ ভাগ বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। আমরা তো মাত্র পাঁচ শতাংশ আজ বাড়ালাম আর বাল্কে কিছু গ্যাসের দাম। এলএনজি আমরা যেটা ৬ ডলারে স্পট প্রাইসে কিনতাম, সেটা এখন ৬৮ ডলারে। কত ভর্তুকি দেবে সরকার? সরকার যে ভর্তুকিটা দেবে সেটা তো জনগণেরই টাকা। আর দ্রব্যমূল্য আজ সারা বিশ্বেই বৃদ্ধি পেয়েছে।

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, যারা বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ী আছেন। এখানেও (সংসদে) আছেন তাদের আমি তো স্পষ্ট বলেছি, গ্যাস আমি দিতে পারব, কিন্তু যে মূল্যে গ্যাস আমরা বাইরে থেকে কিনে নিয়ে এলাম সেই মূল্য যদি আপনারা দেন আমরা গ্যাস দিতে পারব। আমরা বাল্কের যেটুকু বাড়ানোর বাড়িয়েছি। তারা যদি নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ চায় তাহলে যে মূল্যে কিনে আনব সেই মূল্য তাদের দিতে হবে। এখানে ভর্তুকি দেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। শেখ হাসিনা আরও বলেন, এটা ভুলে যাবেন না ভর্তুকির টাকা তো জনগণেরই। বিদ্যুতের দাম কম থাকলে আমাদের বিত্তশালীরা লাভবান হন। যারা সাধারণ মানুষ তারা ঠিকমতো বিল দেয়। বিত্তশালীরা আরাম-আয়েশ করবে। আর স্বল্পমূল্যে পাবে তা কী করে হয়? সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা আমাদের পরিকল্পনা নিচ্ছি।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের জন্য টিসিবির ফেয়ার প্রাইস কার্ড দিয়ে দিয়েছি। যেখানে ৩০ টাকা কেজিতে চাল কিনতে পারে। তেল, চিনি, ডাল সীমিত আয়ের মানুষ ন্যায্যমূল্যে কিনতে পারে। সেই ব্যবস্থাটা করে দিয়েছি। এর থেকে যারা নিম্নআয়ের তাদের জন্য আমরা ১৫ টাকায় চাল দিচ্ছি। সেই সঙ্গে তেল, ডাল ও চিনিও দেওয়া হচ্ছে। আর একেবারে হতদরিদ্র যারা কিছুই করতে পারে না তাদের বিনা পয়সায় খাদ্য সরবরাহ করছি। স্বল্প আয়ের মানুষ যাতে কষ্টে না পড়ে সেদিকে দৃষ্টি রেখে এই ব্যবস্থা করছি। কৃষিতে আমরা ব্যাপকভাবে ভর্তুকি দিচ্ছি।

এর আগে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীকে একটি প্রশ্ন করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সে পর্ব তো শেষ হয়ে গেল। এখন তো আর উত্তর পাওয়ার বা প্রশ্ন করার সুযোগ নেই। এ সময় স্পিকার বলেন, আপনি পরে কোনো একদিন বলবেন। চুন্নু বলেন, আমি পয়েন্ট অব অর্ডারে বলছি, এখন কিন্তু দুটি বিষয় খুব আলোচনায় এসেছে। প্রথমত, ৪৫০ কোটি ডলারের আইএমএফের যে ঋণ সে ঋণের বিষয়টা, এটা পাওয়ার জন্য কয়েকটি শর্ত পূরণ করতে হচ্ছে, একটি হলো যে ওই ঋণের কারণে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে, অবিলম্বে গ্যাসের দাম বাড়ানো হবে, এর ফলে কৃষিপণ্যে যেটা উৎপাদন করে তার সামগ্রিক উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাবে। যদি বেড়ে যায় তার ফলে আমাদের অর্থনৈতিক যে চাপ আছে তা বাড়বে, ফলে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাবে, সরকারের ওপর চাপ বাড়বে। কীভাবে সরকার এর মোকাবিলা করবে?

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে একজন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী লু আমাদের দেশে এসেছিলেন, তিনি যখন পাকিস্তানে যান, উনি পাকিস্তান সফরের পর (পিটিআই) পাকিস্তান ইনসাফ যে দল, সে দল ক্ষমতাচ্যুত হয়ে যায়। এই ভদ্রলোক আসার পর অনেকে মনে করেছিল এ দেশেও কিছু একটা হয়ে যাবে। তবে উনি যাওয়ার পর সরকারকে বেশ একটু খুশি খুশি লাগছে আর অন্য দলটিও দেখছি বেশ খুশি। তবে আমরা জাতীয় পার্টি ওইভাবে নিচ্ছি না, স্বাভাবিকভাবে নিচ্ছি। তবে উনার সফর নিয়ে রাজনৈতিকভাবে একটা গুঞ্জন আছে। অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে কিছু একটা হয় কিনা?

২০৪১ সালের মধ্যে দেশ স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত হবে : এর আগে প্রশ্নোত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্স’ এখন থেকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ টাস্কফোর্স’ হিসেবে কাজ করবে। মো. হাবিবর রহমানের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের সফলতার ধারাবাহিকতায় ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo