• বিশেষ প্রতিবেদন
  • লিড নিউজ

শেরপুরে বিদেশি সবজি ব্রকলি চাষে সাফল্য, বাড়ছে কৃষকের আগ্রহ

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • লিড নিউজ
  • ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২২ ১৪:৩৯:১৬

ছবিঃ সিএনআই

শেরপুর প্রতিনিধিঃ কৃষি ও সবজির ভান্ডার খ্যাত শেরপুরে এবার প্রথমবারের মতো বিদেশি সবজি ব্রকলির চাষ শুরু হয়েছে। শ্রীবরদী উপজেলার তাতিহাটি এলাকায় কলেজ শিক্ষার্থী ছোবাহান আলীর করা ব্রকলি সবজির আবাদও হয়েছে ভালো। আর তা দেখে স্থানীয় কৃষকসহ অনেকেই অবাক।

স্বল্প খরচে স্বাস্থ্যসম্মত এ সবজি আবাদে লাভের মুখ দেখার সম্ভাবনায় এলাকার কৃষকদের মাঝে বাড়ছে আগ্রহ।

সবুজ রঙের বিদেশি শীতকালীন সবজি ব্রকলি দেখতে অনেকটা ফুলকপির মতো। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, ব্রকলি সিদ্ধ করে যেমন খাওয়া যায়, তেমনি স্যুপ, ভাজি, পাকোড়ায় দিলে খাদ্যের পুষ্টিমানও অনেক বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে স্বাদেও বৈচিত্র্য আসে। এতে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফোলেট ও আঁশ আছে। প্রথম দিকে ব্রকলি দেশের বড় বড় দোকানে পাওয়া গেলেও এখন এটি প্রায় সব বাজারেই মেলে। দিন দিন জনপ্রিয় হওয়া এ সবজির রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণও।

ব্যতিক্রমী ওই সবজি চাষ দেশে নতুন না হলেও শেরপুর অঞ্চলে তা প্রথমবারের মতোই হচ্ছে। আর তার চাষ শুরু করেছেন শ্রীবরদী উপজেলার শ্রীবরদী সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছোবাহান আলী। তিনি তার এক খণ্ড জমিতে ব্রকলির পাশাপাশি স্বল্প পরিসরে ক্যাপসিকামও চাষ করছেন।

সরেজমিনে গেলে কথা হয় ব্রকলির নতুন চাষি ছোবাহান আলীর সাথে। তিনি জানান, ইউটিউবে ভিডিও দেখে ব্রকলি সবজি চাষে আগ্রহী হন। প্রথমে তরমুজ চাষ করি। কিন্তু বীজ নষ্ট হওয়ায় ফসল হয়নি। পরে ইন্টারনেটে দেখে শখ জাগে ব্রকলি চাষ করার। তাই নিজের ১৩ শতাংশ জমিতে এ সবজি চাষ শুরু করি। এ জন্য খরচ হয়েছে ১০ হাজার টাকা। প্রথমবার ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। আশা করছি, খরচ বাদ দিয়ে লাভ থাকবে অন্তত ২০ হাজার টাকা। তবে ৪ দিনেই আয় হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। তিনি জানান, প্রতি ব্রকলি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা দরে।

""

এদিকে ছোবাহানকে দেখে ব্রকলি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন এলাকার অন্য চাষিরাও। স্থানীয় চাষি খলিলুর রহমান বলেন, আমগোর এলাকায় এই বিদেশি ফসল হইব, আমরা আগে চিন্তা করি নাই। কিন্তু ছোবাহান লাগাইছে। হুনছি ভালা লাভও পাইতাছে। তাই সামনের বার আমিও ছোবাহানের মতো ওই ফসল চাষ করমু ভাবতাছি।

চাষি আব্দুল মোতালেব বলেন, সবজিডা তো দেখতে ভালাই। প্রথমে আমি মনে করছি এইডা ফুলকপি। কিন্তু এহন হুনলাম এই সবজি বলে মেলা রোগ ভালা করে। আর অন্য ফসলের চেয়ে লাভও ভালা। যদি কৃষি অফিস আমগোরে চারা দেয়, তাইলে সামনের বার আমি এল্লা লাগামু।

শ্রীবরদী সদরের মামদামারী এলাকা থেকে ব্রকলি দেখতে আসা পলাশ মিয়া বলেন, আমগোর এলাকায় এই ফসল আগে দেখি নাই। কিন্তু শুনলাম নতুন ফসল চাষ হয়েছে, তাই দেখতে আসলাম। এর আগে ব্রকলি কিনে খাই নাই। আজ একটা কিন্না নিয়া খায়া দেখমু কেমন লাগে।

এ ব্যাপারে শ্রীবরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার বলেন, এ অঞ্চলে প্রথমবারের মতো বিদেশি সবজি ব্রকলি চাষে এগিয়ে আসায় উপজেলা কৃষি
বিভাগের পক্ষ থেকে তরুণ সবজি চাষি ছোবাহান আলীকে নানাভাবে সহায়তা করা হচ্ছে। আবাদ ভালো হওয়ায় সাফল্যও পাচ্ছেন তিনি। তার ওই সাফল্যে এখন এলাকার অন্যরাও আগ্রহী হয়ে উঠছে।

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, অন্য সবজির চেয়ে পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ব্রকলি চাষে ব্যয়ের তুলনায় লাভের সম্ভাবনা বেশি থাকায় আগামিতে এ অঞ্চলে তার আবাদ অনেকটাই বাড়বে।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo