• বিশেষ প্রতিবেদন
  • লিড নিউজ

কটিয়াদীতে ইউটিউব দেখে গোল্ডেন ক্রাউন তরমুজ চাষ, এলাকা জুড়ে তোলপাড়

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • লিড নিউজ
  • ২১ এপ্রিল, ২০২১ ১৪:৩২:৫৫

ছবিঃ সিএনআই

কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ বাজারে সাধারণত দেখা মেলে সবুজ বা গাঢ়ো সবুজ বর্ণের তরমুজ। ইউটিউবে দেখে ব্যতিক্রমী সোনালি বর্ণের বিদেশি গোল্ডেন ক্রাউন বা ‘মাল্টা ,ব্ল্যাক জাম্বু ও জেসমিন-২ জাতের তরমুজ প্রথমবারের মত চাষ করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার করগাও ইউনিয়নের দেওপাশা বাগ গ্রামের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালযের অধিনে অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্র রাকিব ভূইয়া,রহমাতুল্লাহ হাসান আঙ্গুর,বাল্যবন্ধু ফয়সাল আহমেদ আকাশ নামের তিন শিক্ষিত যুবক।

গ্রীষ্মকালীন সবজির পাশাপাশি জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে ‘গোল্ডেন ক্রাউন’ তরমুজ চাষ শুরু করেন। এক দিকে যেমন সফলতা পেয়েছেন,অন্যদিকে লাভবান হয়েছেন তারা।তিন শিক্ষিত যুবকের এই নতুন জাতের তরমুজ চাষে সফলতা দেখে উপজেলার অনেকেই এই চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গোল্ডেন ক্রাউন বা মাল্টা তরমুজ অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি সুস্বাদু ফল। সাধারণত উঁচু জমি এবং দোআঁশ মাটি এই তরমুজ চাষের জন্য উপযুক্ত। সাধারণত তরমুজ মাটিতে হলেও এটি মাচায় বড় হয়। বীজ বপনের ২৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে ফুল আসে এবং ৫৫ থেকে ৬০ দিনের মাথায় ফল কাটা শুরু হয়।এ তরমুজের আদি নিবাস তাইওয়ান।নতুন জাতের তরমুজটি উপজেলায় প্রথমবারের মতো চাষ শুরু হলেও বাজারে ভাল দামের পাশাপাশি চাহিদাও রয়েছে বেশ।

রাকিব,আঙ্গুর,ফয়সাল জানান,তারা ইউটিউবে ক্যাপসিকাম চাষ দেখে ১বিঘা জমি লিজ নিয়ে যাত্রা শুরু করেন। প্রথমে ৪০ শতাংশ জমিতে ৮০ হাজার টাকা খরচ করে চাষ করেন ক্যাপসিকাম।উৎপাদিত ক্যাপসিকাম বিক্রি করেন ৩ লক্ষ টাকা। তাদের লাভ হয় ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা।আর এ লাভকে পুজি করে আরও বড়কিছু করার স্বপ্ন জাগে।

সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার লক্ষে চুয়াডাঙ্গার কৃষি উদ্যোক্তা মোঃ খায়রুল ইসলাম সার্বিক সহযোগিতায় ও উপজেলার কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে শীতকালীন ফসল শেষ হওয়ার পরে সেই জমিতে পরীক্ষামূলক ৫ বিঘা জমিতে বীজ বপন করেন।আরও বলেন, বাজারে ভাল দামের পাশাপাশি চাহিদাও রয়েছে বেশ।বর্তমান বাজারে মান অনুযায়ী ৫০-৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে একেকটি তরমুজ। প্রতিটির ওজন ৩ থেকে ৫ কেজি। এই তরমুজ চাষে প্রায় ৫বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ৩ লক্ষ টাকা এবং বিক্রি হবে ১২ লক্ষ টাকা।৯লক্ষ টাকা লাভবান হবেন বলে আশাবাদী।

এছাড়া এ তরমুজ বাইরের জেলাগুলোতে পাঠাতে পারলে দিগুণ দাম পেতেন। কিন্তু করোনার প্রাদুর্ভাবে ঘোষিত লকডাউনের কারণে বাইরের জেলায় পাঠাতে পারছেন না তিনি। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আরও লাভের আশা দেখছেন তারা।

এছাড়া রক মেলনে ফল আসতে শুরু করেছে ।রক মেলনে সফল হলে আরও বড় পরিসরে করার চিন্তা ভাবনা রয়েছে। করগাও ব্লকের উপ-সহকারি কৃষি অফিসার জাকির হোসেন জানান,উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে এ তরমুজ চাষে প্রসারের লক্ষ্যে কৃষকদের বীজ,পরামর্শ  প্রয়োজনীয় কারিগরি সহযোগিতা দিয়ে আসছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ ।

কটিয়াদী উপজেলা কৃষি অফিসার মুকশেদুল হক বলেন গোল্ডেন ক্রাউন তরমুজ বিদেশি ফল।এই সোনালী রঙের গোল্ডেন ক্রাউন বা ‘মাল্টা তরমুজ’ চাষ ছড়িয়ে দিতে উপজেলায় বিভিন্ন চাষিদের উদ্বুদ্ধ করছে করা হচ্চে।এই তিন শিক্ষিত যুবক প্রথমবারের মতো গোল্ডের ক্রাউন জাতের তরমুজের চাষ করেছেন। আমরা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাকে সার্বিক সহযোগিতা দিয়েছি। এই জাতের তরমুজ চাষ কটিয়াদী উপজেলায় সম্প্রসারণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo