• অর্থনীতি

গাইবান্ধায় সূর্যমুখী ফুলের চাষ আশাব্যাঞ্জক

  • অর্থনীতি
  • ১৩ মার্চ, ২০২১ ১১:১০:৩৮

ছবিঃ সিএনআই

 

গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধা সদর উপজেলার কুপতলার বেড়াডাঙ্গা গ্রামের উঁচু জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ শুরু হয়েছে। এ আবাদের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। তৈল জাতীয় ফসল সূর্যমুখী চাষে সফলতা পেলে এ জেলায় আগামীতে কৃষক পর্যায়ে সূর্যমুখীর চাষ আরো সম্প্রসারণ ঘটবে বলে মনে করেন স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

বিভিন্ন ফসলের পাশাপাশি সদর উপজেলার কুপতলা ইউনিয়নের বেড়াডাঙ্গা গ্রামের কৃষকরা প্রথম বারের মত তৈল জাতীয় ফসল আরতি-২৭৫ জাতের সূর্যমুখীর চাষ শুরু করেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় কৃষকরা স্বল্প পরিসরে এর আবাদ করেছেন। নভেম্বর-ডিসেম্বরে লাগানো সূর্যমুখীর ফলন পাওয়া যাবে এপ্রিল ও মে মাসের মাঝামাঝিতে। উৎপাদিত সূর্যমুখীর আশানুরুপ ফলন ও কাঙ্খিত বাজার দর আশা করছেন কৃষকরা। অন্যান্য ফসলের চেয়ে সূর্যমুখী চাষে বেশি লাভের প্রত্যাশা করছেন তারা। গুগোল তথ্য সূত্রে জানা যায়, ‘সূর্যমুখীর বীজ থেকে যে তেল উৎপন্ন হয় তা স্বাস্থ্যসম্মত ও মানসম্পন্ন। অলিভ ওয়েলের পরেই সূর্যমুখী তেলের অবস্থান। সোয়াবিন ও সরিষা ভোজ্য তেলের ঘাটতি পুরণ করবে সূর্যমুখী তেল।’

সূর্যমুখী ফুলের বাগানে ভীড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন কৃষক সৈয়দ আলী। দর্শনার্থীরা ছবি তুলতে গিয়ে নষ্ট করছে ফুলের গাছ, কেউ কেউ চুরি করছে ফুল। বাধ্য হয়ে দিনেরাতে পাহাড়া দিতে হচ্ছে। ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে সাইনবোর্ড, ফুল ছেড়া থেকে বিরত থাকবেন।

সূর্যমুখী ফুলের চাষ করলে ফুল থেকে তেল, খৈল ও জ্বালানি পাওয়া যায়। প্রতি কেজি বীজ থেকে কমপক্ষে আধা লিটার তৈল উৎপাদন সম্ভব। প্রতি বিঘাতে ৭ মণ থেকে ১০ মণ বীজ উৎপাদন হয়। প্রতি লিটার তেলের বাজার সর্বনিম্ন বাজার মূল্য ২৫০ টাকা। এ ফসলের রোগবালাই কম তাই প্রতি বিঘাতে জমিতে খরচ হয় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা ব্যয় আর উৎপাদিত ফসল বিক্রি হবে ১৮ থেকে ১৯ হাজার টাকা।

সদর উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের মিষ্টি রানী বলেন, সূর্ষমুখী ফুলের বাগান দেখতে এসেছি। খুব ভালো লাগছে। ছবি তুললাম, এর আগে এ ধরণের বাগান দেখা হয়নি। গাইবান্ধা শহর থেকে ফুলের বাগানে ছবি তুলতে যাওয়া মিলন মিয়া বলেন, সত্যিই অসাধারণ সূর্ষমুখী ফুলের বাগান। প্রতিটি ফুল সূর্ষের দিকে মাথা উচুঁ করে তাকিয়ে আছে।

ফুলের বাগান দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা জাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ১৫০-২০০ জন দর্শনার্থী সূর্ষমুখী ফুলের বাগান দেখতে আসছে। বাগানে ঘুরে বেড়াচ্ছে, ছবি তুলছে। আবার চলে যাচ্ছে। কেউ কেউ ফুল ও গাছ নষ্ট করছে। আবার অনেকেই লুকিয়ে ফুল ছিড়ে নিয়ে যাচ্ছে।

সূর্যমুখী চাষী সৈয়দ আলী জানান, ফুলোত থিকি বিচি হবে, বিচিটাত থিকি তেল হবে। এটা কৃষি অফিস থেকে বীজ পেয়েছি, এ কারণে এই প্রথম চাষ করেছি। তিনি বলেন, এই প্রথম ২৭ শতক জমিতে সূর্যমুখী ফুল চাষ করতে খরচ হয়েছে প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার বেশি।

এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো: মাসুদুর রহমান বলেন, জেলার এ বছর ৫শ’ হেক্টর জমিতে নতুন ফসল সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছি। কৃষকদের সূর্যমুখী বীজ বিক্রি করতে আমরা সহযোগিতা করবো। মাঠ পর্যায়ে চাষিদের আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ও পরামর্শ সেবা দেওয়ার কারণে সূর্যমুখী চাষে কৃষকরা ঝুঁকে পড়েছে। সূর্যমুখীর চাষ লাভজনক। আগামীতে আরো বেশি জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হবে বলে প্রত্যাশা করছি।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo