
নিউজ ডেস্কঃ রাজধানীর বনানীর ‘৩৬০ ডিগি সিসা লাউঞ্জে’ আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে ব্যবসায়ী রাহাত হোসেন রাব্বি (৩১) খুন হয়েছেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুজনকে গ্রেফতারের পর এ তথ্য জানিয়েছে র্যাব। বাহিনীটি বলছে, রাহাতের সঙ্গে অভিযুক্তদের দীর্ঘদিন ধরে সিসা লাউঞ্জে আসা যাওয়া এবং লাউঞ্জের ভেতর আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। এরই জেরে রাহাতকে হত্যা করা হয়েছে বলে গ্রেফতার দুই আসামি স্বীকার করেছেন। শনিবার উত্তরা র্যাব-১-এর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
এর আগে শুক্রবার কুমিল্লা থেকে তাদের গ্রেফতার করে র্যাব। শনিবার গ্রেফতার আ. মালেক মুন্নাকে তিনদিন এবং মাকসুদুর রহমান হামজাকে একদিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। এর আগে গ্রেফতার মীর হোসেন (২২), ফজলে রাব্বি (২৪), সাব্বির আহমেদ সুমন (৩০) এবং আরাফাত ইসলাম ফাহিমকে (২৭) শুক্রবার কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
জানা গেছে, রাব্বি হত্যায় গ্রেফতার মুন্না মোহাম্মদপুর এলাকার কিশোর গ্যাং ‘পাটালি গ্রপের’ সক্রিয় সদস্য। তার বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় ছিনতাই, ডাকাতির প্রস্তুতিসহ একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে। রাব্বিকে হত্যার পাঁচদিন আগে ৯ আগস্ট সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে মুন্নাসহ ‘পাটালি গ্রুপের’ আরও কয়েকজন সদস্যকে আটক করে। ওই সময় কিশোর গ্যাং গ্রুপের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেন তিনি। পরে মুন্নাকে একটি মামলায় আদালতে পাঠানোর দুদিনের মধ্যেই জামিনে এসে বনানীর সিসা বারে হত্যার ঘটনা ঘটায়।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি আলী ইফতেখার জানান, ‘পাটালি গ্রুপের’ সদস্যর বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় মারামারি, ছিনতাইসহ একাধিক মামলা আছে। সে এ এলাকার কিশোর গ্যাং চক্রের সঙ্গে জড়িত। এর আগেও তাকে বেশ কয়েকবার বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছিল।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান জানান, আসামিদের শনাক্ত করে ১৫ আগস্ট কুমিল্লার বরুড়া থেকে হামজাকে এবং তার দেওয়া তথ্যে মুন্নাকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যে মোহাম্মদপুর থেকে হত্যায় ব্যবহৃত চাকুটি উদ্ধার করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে বনানীর ওই সিসা লাউঞ্জে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রাব্বির সঙ্গে তাদের দ্বন্দ্ব ছিল। ঘটনার দিন রাত ১টার দিকে রাব্বি মুন্নাকে লাউঞ্জ থেকে বেরিয়ে যেতে বলায় পূর্বশত্রুতার জেরে হত্যাকাণ্ডটি হয়।
র্যাব জানায়, ১৪ আগস্ট ভোরে রাব্বি তার বন্ধু নুরুল ইসলাম খোকনকে সঙ্গে নিয়ে বনানীর ওই সিসা লাউঞ্জে যান। ভোর ৫টা ২৮ মিনিটের দিকে সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় মুন্না ও হামজা তার পথরোধ করেন। কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে মুন্না তার পাঞ্জাবির পকেট থেকে চাকু বের করে রাব্বিকে উপর্যুপরি আঘাত করেন। এ সময় হামজা লাঠি দিয়ে আঘাত করে দ্রুত পালিয়ে যান। গুরুতর আহত অবস্থায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক রাব্বিকে মৃত ঘোষণা করেন।
অবৈধ সিসা বারের বিষয়ে র্যাব-১-এর অধিনায়ক বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে ঢাকায় অবৈধ সিসা লাউঞ্জগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে।
এর আগে এ ঘটনায় করা মামলায় ওই সিসা লাউঞ্জের মালিক মো. ইব্রহীম খলিলসহ (৫০) তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন- মুন্না ও মাকসুদুর রহমান হামজা। এ ঘটনায় সিসা লাউঞ্জের মালিকসহ শনাক্ত আরও একজনকে গ্রেফতারে র্যাবের অভিযান চলছে।
মন্তব্য (০)