• সমগ্র বাংলা

বগুড়ায় জলাবদ্ধতায় পৌরবাসীর চরম ভোগান্তি: সমাধান আটকে আছে প্রতিশ্রুতিতেই!

  • সমগ্র বাংলা

ছবিঃ সিএনআই

বগুড়া প্রতিনিধি : জলাবদ্ধতায় চরম ভোগান্তিতে পরেছে বগুড়া শহরবাসী। একটু ভারী বৃষ্টি হলেই পানিতে তলিয়ে যায় বগুড়া শহরের সড়ক থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাস পর্যন্ত। শুধু প্রধান সড়কই নয় নালার নোংরা পানি ঢুকে পড়ে বসতবাড়ি ও দোকানপাটেও। অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে কার্যকর ড্রেনেজ ব্যবস্থা গড়ে না ওঠায় জলাবদ্ধতা এখন নিয়মিত দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে শহরবাসীর জন্য।


পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, হালকা হোক কিংবা ভারী, বৃষ্টি হলেই জলমগ্ন হয়ে যায় বগুড়া শহরের অধিকাংশ এলাকা এবারো তার ব্যতিক্রম হয়নি। সড়কের পাশাপাশি প্রতিবারের মতো এবারো তলিয়ে গেছে সরকারি আজিজুল হক কলেজ ক্যাম্পাসও। খেলার মাঠ, প্রশাসনিক ভবনের চারপাশ সবখানেই পানি। আর হাঁটুপানি পার হয়েই প্রতিষ্ঠানটিতে পরীক্ষার হলে বসতে হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক, চতুর্থ বর্ষ ও ডিগ্রির পরীক্ষার্থীদের যাতে চরম বিপাকে পড়েছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।


পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের একাংশ জানায়, নালার নোংরা পানিতে পা ভিজিয়ে পরীক্ষার হলে বসতে হচ্ছে তাদের। রিক্সা নিয়ে যাওয়ারও উপায় নেই কারণ পানি জমে থাকায় কলেজ গেট থেকে ২'শ মিটার দূরত্বের একাডেমিক ভবনের ভাড়া ২০ টাকা চাচ্ছেন চালকেরা। যদিও বা কেউ যেতে চান সেই পরিমাণ যানবাহনও নেই।


বগুড়ায় আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত থেকে গেলো ৪৮ ঘন্টায় ১৪০ দশমিক দুই মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে শহরে। আর এতেই শহরের সেউজগাড়ি, জহুরুলনগর, বাদুড়তলা, চকসূত্রাপুর, খান্দার, ফুলতলা, সাতমাথা সবখানেই সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতার । অপরিকল্পিত নগরায়ন আর শহরজুড়ে ভঙ্গুর ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে আজিজুল হক কলেজ এলাকা। গেলো ৩ দিন থেকে এখনো পানিতে নিমজ্জিত ক্যাম্পাসের অধিকাংশ এলাকা।
জলাবদ্ধতা নিরসনে শিক্ষার্থীরা যখন তাকিয়ে আছে কলেজের অধ্যক্ষের দিকে তখন বারংবার কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেও সমাধান না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করলেন সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো: শওকত আলম মীর। তিনি বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ন আর কলেজের জমি কিছুটা নিচু হওয়ায় আশেপাশের ৪টি ওয়ার্ডের পানি ক্যাম্পাসে ঢুকে এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করে। বর্তমানে কলেজে ৩টি পরীক্ষা চলমান রয়েছে কিন্তু শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিতে তিনি নিজেই কষ্ট প্রকাশ করেছেন।


এদিকে জলবদ্ধতা নিরসনে গেলো দুই দশকে বগুড়ায় বাস্তবায়িত হয়নি কোন উল্লেখযোগ্য কাজ। সমস্যা যখন চরমে তখন নড়েচড়ে বসেছে পৌর কর্তৃপক্ষ দিচ্ছেন নানামুখী প্রকল্প বাস্তবায়নের আশ্বাস।


মুঠোফোনে বগুড়া পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বগুড়ার উপ-পরিচালক মাসুম আলী বেগের সাথে কথা বললে তিনি জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে ৩০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়াও পৌরসভার ড্রেনের একশটি আউটফল পরিষ্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন তারা। তিনি আরো বলেন, বগুড়া পৌরসভার পাশাপাশি জলবদ্ধতা নিরসনে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর দেড়শো কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছেন। তারা সমন্বিত উদ্যোগে এই সমস্যা সমাধানে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছেন মর্মে জানান মাসুম আলী বেগ।


তবে সাধারণ মানুষ আর কোন প্রতিশ্রুতি নয় চান দ্রুত কাজের বাস্তবায়ন। ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে পরিবর্তন ঘটবে পৌরবাসীর ভাগ্যের এমন প্রত্যাশা সকলের।
 

মন্তব্য (০)





  • company_logo