
ঈশ্বরগঞ্জ(ময়মনসিংহ) প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহ জেলা শহরের ছোট বাজার এলাকা থেকে ২০২২ সালে শামছুল আলমের (৬৫) ব্যাগ থেকে চার লাখ টাকা চুরির ঘটনায় দুই বছর পর মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ময়মনসিংহ জেলা। ২৯ জুলাই ঢাকার চকবাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত হান্নান মিয়া (৬২)ঢাকার কোতোয়ালী থানার মৃত আলী মিয়ার ছেলে।
ময়মনসিংহ পিবিআই সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ৯ নভেম্বর দুপুর আনুমানিক ১টায় শামছুল আলম ময়মনসিংহ নগরীর পূবালী ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে জনতা ব্যাংকে লেনদেন করেন। জনতা ব্যাংক থেকে বের হয়ে ছোট বাজার লিমা প্রিন্টিং প্রেসের সামনে আসার পর অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তার কাপড়ে ময়লা ছিটিয়ে দেয় এবং একজন তাকে জানায় তার কাপড়ে ময়লা লেগে আছে। শামছুল আলম তখন তার পাশে ব্যাগে থাকা ৪ লাখ টাকা রেখে কাপড় পরিষ্কার করতে শুরু করলে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা ব্যাগসহ টাকা চুরি করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় তিনি কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। কোতোয়ালী থানা পুলিশ আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করলে আদালতের নির্দেশে পিবিআই ময়মনসিংহ মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে এবং এসআই মোহাম্মদ বিল্লাল মিয়া তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে তদন্ত শুরু করেন।
অ্যাডিশনাল আইজিপি পিবিআই মোস্তফা কামাল এবং পিবিআই ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার রকিবুল আক্তারের তত্ত্বাবধানে মামলাটির রহস্য উদঘাটনে একটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়। এই টিম ঘটনার তারিখ ও সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে চোরের চেহারা শনাক্ত করে। তথ্য-প্রযুক্তি ও এআই-এর সহায়তায় সিসি ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পিবিআই ময়মনসিংহের অভিযানিক দল মঙ্গলবার রাতে চুরির ঘটনায় জড়িত মোঃ হান্নানকে ঢাকার চকবাজারের ৯৬ নম্বর নাজিম উদ্দিন রোডস্থ বাসা থেকে গ্রেফতার করে।
পিবিআই-এর জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী হান্নান ৪ লাখ টাকা চুরির বিষয়টি স্বীকার করেন। পরে ৩০ জুলাই তাকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে তিনি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় নিজের অপরাধের দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
এ বিষয়ে পিবিআই ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার মোঃ রকিবুল আক্তার জানান, প্রকাশ্যে দিবালোকে জনবহুল এলাকায় অভিনব কায়দায় চুরির এই ঘটনাটি সিসি টিভি ফুটেজের মাধ্যমে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছিল। জনাকীর্ণ এলাকায় সংঘটিত হওয়ায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে প্রকৃত চোরকে শনাক্ত করা কঠিন ছিল। প্রায় দুই বছর ধরে সিসি টিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এবং তথ্য-প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আসামী হান্নান মিয়াকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী ৪ লাখ টাকা চুরি করার কথা স্বীকার করেছে। জানা গেছে, আসামী আন্তঃজেলা চোর দলের সদস্য এবং সে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জেলায় একই কায়দায় চুরি করে থাকে। তার নামে পূর্বের একাধিক মামলাও রয়েছে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, "আসামী হান্নান বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে, ন্যায়বিচার নিশ্চিতের লক্ষ্যে আমরা সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব নিয়ে কাজ করছি। মামলার তদন্ত অব্যাহত আছে, ঘটনার সাথে অন্য কেউ জড়িত আছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।"
মন্তব্য (০)