
নিউজ ডেস্কঃ বর্ণাঢ্য আয়োজনে শুরু হলো আধ্যাত্মিক, সেবামূলক ও কল্যাণধর্মী সংগঠন বাংলাদেশ মুসলিম কাউন্সিলের পথচলা। দেশ-বিদেশের খ্যাতিমানদের উপস্থিতিতে ৩১৩ জন বাংলাদেশি আলেমের জীবনীগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন, আলোচনা সভা ও কমিটি ঘোষণার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ মুসলিম কাউন্সিলের আত্মপ্রকাশ হলো।
শনিবার (২৬ জুলাই) নয়াপল্টনের পলওয়েল ভবন জোনাকী কনভেনশন হল মিলনায়তনে এ উপলক্ষে আয়োজিত কনফারেন্সে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মুসলিম কাউন্সিলের সভাপতি মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ আইয়ূবী। কনফারেন্সে জেলা প্রতিনিধিসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম-উলামা, মসজিদের খতিব, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, লেখক ও ওয়ায়েজসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিত্বশীল ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আফম খালিদ হোসাইন বলেন, জুলাই বিপ্লব ওলামায়ে কেরামের সামনে একটি অবারিত সুযোগ এনে দিয়েছে। এই সুযোগ যেন হাতছাড়া না হয়ে যায়।
তিনি বলেন, সরকার, প্রশাসন ও বিচারবিভাগসহ রাষ্ট্রের প্রতিটি সেক্টরে ওলামায়ে কেরামকে অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করার জন্য নিজেদেরকে যোগ্যরূপে গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই আমরা এদেশে কোরআন-সুন্নাহর আদর্শ বাস্তবায়ন করতে পারব।
ড. খালিদ আরও বলেন, আমাদের সভ্যতা-সংস্কৃতি ও ইতিহাস-ঐতিহ্যের ভিত্তিতে এই দেশে আইন প্রণীত হতে হবে। সেক্ষেত্রেও ওলামায়ে কেরামের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তারা যত সংঘবদ্ধ এবং শক্তিশালী হবেন, তত বেশি সমাজ তাদের দ্বারা উপকৃত হবে।
‘ইসলাম, দেশ ও মানবতার কল্যাণে’ নিবেদিত আধ্যাত্মিক, সেবামূলক ও কল্যাণধর্মী সংগঠন ‘বাংলাদেশ মুসলিম কাউন্সিল’-এর আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে ‘৩১৩ মাশায়েখে বাংলাদেশ’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন ও ‘মাশায়েখে বাংলাদেশ-এর অবদান ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক জাতীয় কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন— পাকিস্তানে বিখ্যাত আলেম মুফতি তারেক মাসউদ, হাটহাজারী মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা খলিল আহমেদ কোরাইশি, মাওলানা সালাউদ্দিন পীর সাহেব নানুপুর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী পীর সাহেব দেওনা, হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান, বেফাকের মহাসচিব মুফতি মাহফুজুল হক, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমীন, মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, মুফতি জসিমউদ্দিন হাটহাজারী, মুফতি কেফায়েতুল্লাহ হাটহাজারী, মুফতি হারুন ইজহার, মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা লোকমান মাজহারী, মুফতি মুনির হোসাইন কাসেমী, মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী, মাওলানা হাসান জামিল, জাগ্রত কবি মুহিব খান, মাওলানা রশিদ বিন ওয়াক্কাস, সৈয়দ এসাহাক মোহাম্মদ আবুল খায়ের, মুফতি রেজাউল করিম আবরার, মুফতি মাসউদুল করিম ও মুফতি কেফায়েতুল্লাহ আজহারি প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবীকে সভাপতি, মাওলানা আহমদ আলীকে সিনিয়র সহ-সভাপতি ও মুফতি লুত্ফুর রহমান ফরায়েজীকে সাধারণ সম্পাদক করে বাংলাদেশ মুসলিম কাউন্সিলের ২২৭ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ইসলামি জীবনব্যবস্থার ব্যাপক প্রচার-প্রসার ও ইসলামি সমাজব্যবস্থার গুরুত্ব তুলে ধরে জীবনের সর্বস্তরে দ্বীন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জনগণকে সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করা। এর বাইরে মুসলিম উম্মাহর পরস্পরের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব ও সুসম্পর্ক তৈরি, মানবসেবা ও সামাজিক উন্নয়নমূলক কার্যক্রম গ্রহণ, এতিমদের যৌতুকবিহীন বিয়ে, নলকূপ স্থাপন, বিনামূল্যে বা কমখরচে চিকিৎসা ক্যাম্প, বৃক্ষরোপণ, নিরক্ষরতা দূরীকরণ, বয়স্ক শিক্ষা, বন্যার্ত, শীতার্ত, দুর্গত মানুষের সহায়তা দান ইত্যাদি সামাজিক ও মানবসেবামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা। এ লক্ষে একদল চিন্তাশীল দূরদর্শী আলেমের অভিজ্ঞতা নিংড়ানো ভাবনা থেকেই এ সংগঠনের পথচলা।
মন্তব্য (০)