রংপুর ব্যুরোঃ পৌষ মাসের প্রথম থেকে শীতের তীব্রতা্ ও দাপট বেড়েছে।উত্তরের জেলাগুলোতে শীতের দাপটে কাবু জনপদ।ঘন কুয়াশার সঙ্গে বইছে হিমেল বাতাস।দিনের বেশির ভাগ সময় সূর্যের দেখা মিলছে না।এতে ভোগান্তিতে পড়ছে শ্রমজীবী ।ও নিম্ন আয়ের মানুষ।
শীত উত্তরের জেলাগুলোতে আরো তিন-৪দিন থাকতে পারে ঠান্ডা বলছেন রংপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে জানানো গেছে।আগামী সপ্তাহে তাপমাত্রার উন্নতি হলেও ফের মৃদু শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস দিয়েছে অধিদপ্তর।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান বলেন,“ঘন কুয়াশা ও বাতাসের আর্দ্রতা বৃদ্ধির কারণে উত্তরের জেলাগুলোতে ঠান্ডার বেড়েছে।এছাড়া, দিনের বেশির ভাগ সময় সূর্যের দেখা মিলছে না।
তিনি বলেন,‘রংপুরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উত্তরাঞ্চলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে পঞ্চগড়ের তেতুলিয়ায় ৮দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস।এছাড়া ও ঠাকুরগা্ও -৯দশমিক ০ ডিগ্রী,দিনাজপুরে ১০দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস,নীলফামারীর ডিমলায় ১০ ডিগ্রী,কুড়িগ্রামের রাজার হাটে ৯দশমিক ৫ ডিগ্রী,সৈয়দপুরে ১০দশমিক ১ ডিগ্রী ও গাইবান্ধায় ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস।আরো তিন-৪দিন এই অঞ্চলে তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।’
তীব্র শীতে বেশি ভুগছে শ্রমজীবী ও খেটে খা্ওয়া মানুষ।কুয়াশা এবং হিমেল বাতাসে জীবনযাত্রা প্রায় অচল করে দিয়েছে। গ্রাম-চরাঞ্চলের অবস্থা আরো খারাপ।বেশি ভাগ মানুষ দুভোগে পড়ছে।
রংপুর নগরীতে আসা অটোচালক বলেন, “গত তিন দিন ধরে রংপুরে তীব্র শীত যাত্রী নেই বলে চলে।রাতে বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ে। পরিবারের নিয়ে অনেক কষ্টে দিন যাপন করতে হচ্ছে। তবে, রাস্তায় মানুষ কম থাকায় আয় তেমন হচ্ছে না।’
এদিকে কনকনে ঠান্ডায় সর্দি,কাশি,শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ধারণক্ষমতার তিন গুণ বেশি রোগী ভর্তি রয়েছে।এছাড়া, গত এক সপ্তাহে দেড় হাজারের মতো শিশু ও বয়স্ক রোগী ঠান্ডাজনিত রোগের চিকিৎসা নিয়েছেন।
চিকিৎসা সেবা নিতে আসা শফিকুল ইসলাম বলেন,“শিশু ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি এর ফলে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমসিম পেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের।আবার রোগির চাপ বেশি এ কারনে অনেকে বারান্দায় বা করিডোরে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা.এস এম নুরুন্নবী বলেন, “শীতের প্রকোপ বেশি থাকায় ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়ে শিশু ও বয়স্করা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।গত সপ্তাহ থেকে রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে।সাধ্যমত সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।”
এদিকে, শীত নিবারণে আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ রোগীর সংখ্যা বেড়েছে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। বর্তমানে ৪১ জন দগ্ধ রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর বেশির ভাগ আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়েছেন।গত এক মাসে আগুন পোহাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ২ জন রোগি।
রংপুর জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল বলেন, “জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রায় ১৯ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে।তবে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। শীতের প্রকোপ বাড়ায় এ কার্যক্রম আরো জোরদার করা হবে।আর ২৭ লাখ টাকা বরাদ্দ পা্ওয়া গেছে।এই টাকা দিয়ে শীতবস্ত্র ক্রয় করা হয়েছে।
মন্তব্য (০)