• অপরাধ ও দুর্নীতি

দিনাজপুরে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৬ সদস্য আটক 

  • অপরাধ ও দুর্নীতি
  • ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ১৫:৩৬:০৫

ছবিঃ সিএনআই

দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ দিনাজপুরের হাকিমপুরে একটি চাউল কলে দুধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৬ জন  আজ ২২ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে জেলা এবং থানার পুলিশের যৌথ টিম। ডাকাতদলের অন্য সদস্যদেরও গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছেন তারা।  মুখে মুখোশ এবং ছদ্মবেশে ধারন করে গত ১৫ ফেব্রুয়ারী মধ্যরাতে ডাকাত দলের সদস্যরা চাউল কলের ম্যানেজার এবং প্রহরিকে বেধে রেখে সাড়ে ৩ লাখ টাকা লুট করেছিল। জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছে ডাকাতির পরিকল্পনা আটার চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।  এব্যাপারে আজ বৃহস্পতিবার গন মাধ্যমকর্মীদের বিস্তারিত অবহিত করেছেন পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ।

হাকিমপুর থানার ইনচার্জ দুলাল হোসেন জানান, ১৫ ফেব্রুয়ারী মধ্যরাতে হাকিমপুর উপজেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী বাসুদেবপুরে গনেশ প্রসাদ সাহার ইউনাইটেড রাইস মিলে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। মিলের সিসি টিভি ফুটেজে দেখা গেছে ছদ্মবেশে মুখে মুখোশ পরে একদল ডাকাত ফিল্মী স্টাইলে ডাকাতি চালাচ্ছিল। নিজেদেরকে গোপন করার জন্য সিসিটিভি ক্যামেরার ল্যান্স বন্দ করার সময় একজনের মুখের স্পষ্ট সাদাকালো ছবি সিসিটিভিতে রেকর্ড হয়ে যায়। সেই ছবি হাকিমপুর থানা পুলিশের ফেসবুকে শেয়ার দিয়ে তার সন্ধ্যানদাতাকে পুরষ্কৃত করার ঘোষনা দেন তারা। এব্যাপারে ১৭ ফেব্রুয়ারী হাকিমপুর থানার মামলা রেকর্ড করা হয়। মামলা নং-১৩। এরই মধ্যে পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদের তত্ত্বাবধানে শুরু হয় ডাকাতদের চিহ্নিত করার অভিযান।

আজ বৃহস্পতিবার নিজস্ব কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অভিযানে সফলতার বিষয়ে গনমাধ্যমকর্মীদের বিস্তারিত তুলে ধরেন পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ। তিনি জানান, প্রথমে ক্লুলেস ছিল ডাকাতির ঘটনাটি। জড়িতদের গ্রেফতার এবং লুষ্ঠিত মালামাল উদ্ধারে তার তত্ববধানে অভিযানে সক্রিয় হন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) আব্দুল্লাহ-আল-মাসুম,  সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মোঃ জিন্নাহ আল মামুন  হাকিমপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার শরিফুল ইসলাম, হাকিমপুর থানার অফিসার ইনচার্জ দুলাল হোসেন, ডিবি পুলিশের পরিদর্শক সোহেল রানা, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক সাদ্দাম হোসেন, কোতয়ালী থানার উপ পরিদর্শক নুর আলমসহ সঙ্গীয় ফোর্স। সিসি টিভি ফুটেজ এবং তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় একে একে এসময় বেরিয়ে আসে মুল পরিকল্পনাকারি এবং জড়িতদর নাম ঠিকানা চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।

তিনি জানান,  দিনাজপুরের জেলা কারাগারে বসে ডাকাতির পরিকল্পনা আটে হাজতবাসি ডাকাত সর্দার জেলা সদরের বাসিন্দা প্রায় ৭০ বয়সি আব্দুর রহিম ওরফে পোড়া রহিম ও হাকিমপুর উপজেলার বাসুদেবপুরের বাসিন্দা ৪০ বছর বয়সি আলিম হোসেন। অন্য মামলায় হাজতবাস করছিল তারা। এসময় পরষ্পরের সাথে পরিচয় পর্ব থেকে হাকিমপুরের ওই চাউল কলে ডাকাতি ছোক তৈরি করে তারা। কারামুক্তি পেয়েই সফল ডাকাতি চালায় তারা। তবে শেষ পর্যন্ত পুলিশের জালে আটকা পড়ে দলের ৬ সদস্য, অন্যরা রয়েছে আত্বগোপনে।

ডাকাত সর্দার আব্দুর রহিম ওরফে পোড়া রহিম (৬৮) জেলা সদরের করিমুল্ল্যাপুর গ্রামের মৃত রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে আগের ৫ টি রয়েছে। আলিম হোসেন (৪০) হাকিমপুরের মধ্য বাসুদেবপুরের (মাঠপাড়া) মৃত ইমান আলী মিস্ত্রির ছেলে। তার বিরুদ্ধে ১ টি মামলা বিচারাধীন আছে। আটক অন্য ৪ জন হলো জেলা শহরের ৬ নম্বর নিউ টাউনের দুলাল মিয়ার ছেলে শামিম পরন (৩০)। তার বিরুদ্ধে  বিভিন্ন ধরনের অপারাধের ১৪ টি রয়েছে। জেলা শহরের কসবার (পুলহাট) মৃত আব্দুস জব্বারের ছেলে আব্দুস সোহাগ (৩৪)। তার বিরুদ্ধে ১০ টি মামলা রয়েছে।  চিরিরবন্দরের ভাবকি গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে ফরিদুল ইসলাম ওরফে মাসুয়া (৪৫)। তার বিরুদ্ধে ১ টি মামরা রয়েছে। শহরতলী নিমনগরের (শেখপুরা) মৃত কান্দু মাসুদের ছেলে বকুল হোসেন (৫০)। 

ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র ১টি লোহার তৈরি গ্রিল কাটার যন্ত্র, ১টি চাপাতি, ১টি স্টিলের হাতল বিশিষ্ট দেশীয় তৈরি পশুর কুড়াল,২টি টর্চ লাইট, ৩টি বাটন মোবাইল ফোন, ডাকাতির উপকরন বহনকারব ২টি ট্রাভেল ব্যাগ এবং লুন্ঠিত সাড়ে ৩ লাখ টাকার মধ্যে ৯ হাজার ৩ শত টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালানো ছাড়াও লুন্ঠিত টাকা উদ্ধারে যৌথ টিমের অভিযান চলমান রয়েছে বলে জানিয়েচেন পুলিশ সুপার।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo