• আন্তর্জাতিক

সুইডেনে নিজের সন্তানকে ৩০ বছর ঘরে বন্দি রাখায় মা আটক

  • আন্তর্জাতিক
  • ০২ ডিসেম্বর, ২০২০ ১২:৪১:২৫

ছবিঃ সংগৃহীত

 

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ সুইডেনে নিজের ছেলেকে প্রায় ৩০ বছর ধরে ঘরে বন্দি রাখায় এক নারীকে আটক করা হয়েছে। দেশটির রাজধানী স্টকহোমের উপকণ্ঠে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে গ্রেফতার নারী ছেলেকে বন্দি রাখার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই নারী। এরপর তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। খবর পেয়ে গত রোববার ফ্ল্যাটে আসা তাদের এক আত্মীয় ছেলেটিকে বন্দি অবস্থায় পান। তাকে এখন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

স্টকহোমের হ্যানিঞ্জ এলাকার ওই ফ্ল্যাটটি তদন্তের স্বার্থে সিল করে দিয়েছে পুলিশ। সেখানে আসলে কী ঘটেছিল তা জানতে পুলিশ সাক্ষ্য-প্রমাণ খুঁজছে।

ওই আত্মীয় জানান, সর্বশেষ ২০ বছর আগে তাদের ফ্ল্যাটে এসেছিলেন তিনি। সে সময় তিনি ওই ছেলেটির ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে সবাইকে সতর্ক করার চেষ্টা করেছিলেন। ছেলেটির বয়স যখন ১১-১২ তখন স্কুলের খাতা থেকে নাম কেটে তাকে বাড়ি নিয়ে আসা হয়েছিল। তার বয়স এখন ৪০ বছর।

ছেলেটির মায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে গত রোববার তাদের ফ্ল্যাটে আসেন ওই আত্মীয়। পরে দরজা খুলে দেখেন, এটি অন্ধকার ও ধুলায় ঢাকা। সেখান থেকে ময়লা-আবর্জনার পঁচা গন্ধ আসছে। এরপর তিনি ‘হ্যালো’ বলে ডাক দেন। তার জবাবে কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। এরপর স্তুপ হয়ে থাকা জিনিসপত্রের মাঝ দিয়ে ঘরে ঢোকেন তিনি। রান্নাঘরে শব্দ শুনতে পেয়ে দেখেন, অন্ধকারে এক কোনায় একটা লোক বসা। বাইরে থেকে রাস্তার সড়ক বাতির আলোয় তাকে দেখা যাচ্ছিল। তার পা থেকে হাঁটু পর্যন্ত ঘা হয়ে গেছে।

সুইডেনের একটি সংবাদপত্রকে এই নারী জানান, লোকটি তাকে দেখে উঠে দাঁড়ান। এরপর তার নাম ধরে বারবার ডাকতে থাকেন। তার কথা ছিল অস্পষ্ট। লোকটির প্রায় সব দাঁত পড়ে গেছে।

তিনি বলেন, যেকোনো ভাবেই হোক এত বছর পরও লোকটি তাকে চিনতে পেরেছে। তবে তাকে দেখে কোনো ভয় পাচ্ছিল না। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা বিষয়টি পুলিশকে জানায়। এরপর তার মাকে আটক করা হয়।

স্টকহোমের একজন সরকারি কৌসুলি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, উদ্ধার হওয়া লোকটির শরীরে অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে। এর বেশি কিছু তিনি আর জানাননি।

পুলিশের একজন মুখপাত্র রয়টার্সকে জানান, লোকটিকে কতদিন বন্দী করে রাখা হয়েছিল, সেটি আমরা খতিয়ে দেখছি। তবে আমাদের ধারণা, দীর্ঘ একটা সময় তাকে বন্দি করে রাখা হয়েছিল।

লোকটিকে খুঁজে পাওয়া ওই নারী সুইডেনের পাবলিক টেলিভিশন নেটওয়ার্ককে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, এর আগে একটি সন্তান হারিয়েছিলেন লোকটির মা। এ ঘটনার তিনি ভেঙে পড়েন। দ্বিতীয় সন্তানের জন্মের পর তিনি আগের সন্তানের নামে নাম রাখেন। তিনি তার মৃত সন্তানকে ফিরে পেতে চাইছিলেন। আর নতুন সন্তানকে খুব বেশি আগলে রাখতে চাইতেন।
 

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo