• বিশেষ প্রতিবেদন

শীতের এই আগাম বার্তায় লেপ-তোশক প্রস্তুতকারী কারিগরদের ফিরে এসেছে কর্মব্যস্ততা

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ২৫ নভেম্বর, ২০২০ ১৯:২৩:৩৭

ছবিঃ সিএনআই

সুলতান মাহমুদ চৌধুরী , দিনাজপুর: বাংলাদেশের দেশের উত্তরের জেলা আবার হিমালয়ের পাদদেশ ঘেঁষা হওয়ায় দিনাজপুরের মানুষ শীতের অনুভুতি একটু বেশি পেয়ে থাকে । কাগজে কলমে হেমন্ত কাল শুরু হলেও দিনাজপুরসহ উত্তরের জেলাগুলিতে শীত কিন্তু পড়েই গেছে । সূর্যাস্তের সাথে সাথে কিন্তু শীত পড়তে থাকে রাত যত গভীর হয় শীতের মাত্রা তত বৃদ্ধি হয় । সন্ধ্যার পর খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া তেমন কেউ বাহিরে থাকে না । ঘরে মধ্যে গরম পাওয়ার জন্য লেপ ও তোষকের মধ্যে ঢুকে যায় । শীত বৃদ্ধির সাথে সাথে কয়েকদিন ধরে লেপ তোষকের ব্যবসায়ীরা আর কারিগরেরা ব্যস্ত সময় পার করছে । শীতের এই আগাম বার্তার সঙ্গে সঙ্গে লেপ-তোশক প্রস্তুতকারী কারিগরদের ফিরে এসেছে কর্মব্যস্ততা। কম্বলের চাইতে লেপের দাম কম ও এটি বেশি আরামদায়ক হওয়ায়
ক্রেতারা লেপের দিকেই ঝুঁকছেন বেশি।

দিনাজপুর শহরের চুড়িপট্টিতে গিয়ে দেখা গেছে, কারিগররা লেপ-তোশক তৈরিতে খুব ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তাদের পাশপাশি ক্রেতা সামলাতেও হিমশিম খাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। শীত খুব বেশি পড়ার আগেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষ। দিন যতই গড়াচ্ছে শীতের প্রকোপ ততই বেশি বাড়ছে। শহর ও গ্রামের মানুষ নতুন নতুন লেপ তৈরি করছেন। বছরের অন্যান্য সময় এসবের বেচাকেনা কম হলেও শীত মৌসুমে বিক্রি কয়েক গুণ বেড়ে যায়। বাজারে কম্বলের তুলনায় লেপের দাম কম হওয়ায় চাহিদা বেশি। বছরের প্রায় আট মাস অলস সময় কাটে কারিগরদের। এ সময় তাদের কেউ কেউ ব্যস্ত হন ভিন্ন পেশায়। তবে শীত মৌসুমের শুরুতেই আবারো ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কারিগররা। এবার লেপ-তোশকের বেশি কেনাবেচায় খুশি ব্যবসায়ী ও কারিগররা। কারিগর তৈয়ব আলী জানান , কয়েকদিন ধরে খুই ব্যস্ত সময় পার করছি । কারন শীত যত বেশি পড়বে লেপ তোষকের চাহিদা তত বেশি হবে । তত আমাদের লেপ তোষক তৈরীতে ব্যবস্ত হয়ে পড়তে । একদিনে একজন কারিগর সারা দিতে ১০ থেতে ১৫ টি লেপ তোষক তৈরী করতে হয় । একটা লেপ তৈরী করতে মজুরি পেয়ে থাকি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা । লেপ তোষক কারিগর মুক্তর আলীর সাথে কথা হয় , তিনি বলেন, বছরের প্রায় আট মাস তেমন বেশি কাজ হয় না । তাই এখন শীত কাল কাজের সুযোগ বেশি আয় ইনকামও বেশি। তাই চার মাসের কাজের পারিশ্রমিক দিয়ে আমাদেরকে বাকী আট মাস চলতে হয় । এ বছর লেপের দাম কেমন হবে জানতে চাইলে মালদহপট্টি ব্যবসায়ী আজিজুল ইসলাম বলেন, রেডিমেট লেপের ক্ষেত্রে সিঙ্গেল লেপ ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা, সেমি-ডবল লেপ ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, ডবল লেপ পাওয়া যাবে ১ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে।

কথা হয় দিনাজপুর সদরের সর্দার পাড়ার ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নানের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতিটি লেপ-তোশক বানাতে মজুরি হিসেবে ২০০ টাকা করে খরচ হয়। একজন কারিগর সারাদিন কাজ করলে দিনে ১০টি লেপ তৈরি করতে পারেন। প্রতিটি ৪ থেকে ৫ হাত লেপ ১ হাজার ২০০ টাকা, তোশক ১ হাজার ৩০০ টাকা খুচরা বিক্রি করা হয়। বিরল উপজেলার বানিয়া পাড়া গ্রামের বাসিন্দা মহিদুল ইসলাম জানান, ঠান্ডা একটু একটু বাড়ছে, তাই পুরাতন লেপের তুলা বদলিয়ে নতুন কাপড় দিয়ে সেলাই করতে দিয়েছি। ঠান্ডা বাড়লে দোকানে ভিড় হবে। তাই ঝামেলা এড়াতে আগে ভাগেই লেপ- তোশক গুছিয়ে নিচ্ছি।

দিনাজপুর লেপ তোষক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আকরাম হোসেন বলেন , আমাদের লেপ তোষক দোকানে সারা বছর তেমন বেচা বিক্রি হয় না । শীতের সময় আমাদের বেচাবিক্রি বেশি হয় । আমাদের এই ব্যবসার সাথে কারিগর থাকে তাদেরকেও মজুরি দিতে হয় । এখন তুলার বিভিন্ন প্রকার ভেদ রয়েছে । তুলার প্রকার ভেদের উপর দাম কমবেশি হয়ে থাকে । শীতের সময় আমাদের ব্যবসা ভাল হয় ।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo