• জাতীয়

রাজধানীর নিকুঞ্জে এ্যারোনটিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

  • জাতীয়
  • ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ১২:৪১:১৪

নিউজ ডেস্কঃ রাজধানীর নিকুঞ্জে হতাশায় এ্যারোনটিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা করেছে। আত্মহত্যার কারণ হতাশা বলেই প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

গত ২১সেপ্টেম্বর রাত ৯টায় রাজধানীর নিকুঞ্জের একটি আবাসিক ছাত্রাবাসে তায়েব নামে এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। রাত ১০টায় কাঠের দরজা ভেঙে তায়েবের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তার গ্রামের বাড়ী বরিশাল। ক্ষিলক্ষেত থানায় কথা বলে জানা যায়, তায়েব এর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়েছে। তায়েব এর বন্ধু বান্ধবের সাথে কথা বলে জানা যায়, সে ২০১২ সালে উত্তরার এ্যারোনটিকাল কলেজ অব বাংলাদেশে নামে একটি অনুমোদনবিহীন কলেজে ভর্তি হয়।

সেখানে অনুমোদন আছে মর্মে, বিএসসির কথা বলে ভর্তি করানো হলেও লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যায়ে কিছু ডিপ্লোমা কোর্স করানো হয় যেগুলোতে বাংলাদেশ সরকারের কোন অনুমোদনই নেই। এই ঘটনার পর তায়েব মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে থাকে, তখন তায়েব সহ তার মতো আরও কিছু ভেঙে পড়া শিক্ষার্থীকে প্রচুর টাকার বিনিময়ে এ্যারোনটিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর লাইসেন্স করানোর কথা বলে কিছু পরীক্ষা নেয় এ্যারোনটিকাল কলেজ অব বাংলাদেশে, সেটাও ছিলো বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন এর অনুমোদনবিহীন।

তায়েব তখন অর্থাভাবে উবার চালিয়ে জীবন পার করতে শুরু করে। ধীরে ধীরে সে হতাশ হতে শুরু হয়। এসব সার্টিফিকিট অর্জনে আট-নয় বছর সময় এবং প্রচুর অর্থ দুটোই চলে গেলেও চাকুরী হয়নি কোন প্রতিষ্ঠানেই। এরকম হাজার হাজার শিক্ষার্থী উত্তরার বিভিন্ন ভূয়া প্রতিষ্ঠানে প্রতারণার শিকার হয়েছে। কেউ ব্যাবস্থা নেবার চেষ্টা করলেই হুমকি এসেছে বহুবার, বলে জানায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী।সে আরও জানায় এমন হাজারো শিক্ষার্থীর জীবন নষ্ট করেছে উত্তরার এসব প্রতিষ্ঠান, কেউ এখন দোকান করছে কেউবা উবার চালায়, অনেকেই পাগলপ্রায়।

এই ব্যাপারে উক্ত প্রতিষ্ঠানের পরিচালক, সাবেক জামায়াত ইসলামি নেতা মোসলেম উদ্দিনকে ফোন করলে তিনি জানান, "বাংলাদেশে কোন এ্যারোনটিকাল শিক্ষা ব্যাবস্থাই প্রতিষ্ঠিত নয়,সেটা বাংলাদেশ বিমান হোক কিংবা এমআইএসটি", এটি বলেই লাইন কেটে দেন মোসলেম উদ্দিন। উক্ত প্রতিষ্ঠানের দালাল আরিয়ান রিগানকে ফোন করে ফোনে পাওয়া যায় নি।

জানা যায়, গত পনের বছরে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান, বিশেষ করে উত্তরায় ভূয়া এ্যারোনটিকাল কলেজ গড়ে উঠেছে প্রায় বারোটি।

এসব বিষয়ে সিভিল এভিয়েশনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংশ্লিষ্ট কাউকে পাওয়া যায় নি। 

মামলার অগ্রগতির ব্যাপারে জানার জন্য থানার এসআই এম.এ জাহেদ এর সাথে কথা বলে জানা যায়, তায়েব এর পরিবার এই মুহুর্তে ময়নাতদন্তের জন্য অপেক্ষারত। তায়েবের বাবাকে ফোন করলে ক্রন্দনরত অবস্থায় তিনি জানান, মামলা করে তিনি ন্যায়বিচার চাইবেন। এদিকে তায়েবের বন্ধু বান্ধবরা সিভিল এভিয়েশন এবং র‍্যাবের যৌথ উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এসব অবৈধ প্রতিষ্ঠান বন্ধে সরকারের সহযোগিতা কামনা করে।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo