• শিক্ষা

ছাত্রলীগের লাগামহীন গতি টেনে ধরতে ভিপি নুরুলের আহ্বান

  • শিক্ষা
  • ২৩ জানুয়ারী, ২০২০ ১৫:৪০:০৫

সিএনআই ডেস্ক: ছাত্রলীগের ‘বেপরোয়া ও লাগামহীন গতি’ টেনে ধরতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক সমাবেশে ডাকসু ভিপি নুরুল হক এসব কথা বলেন৷ নুরুল হক বলেন, ছাত্রলীগকে দিয়ে দুঃশাসন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে গণজাগরণ ও গণসচেতনতাকে দাবিয়ে রাখা যাবে না। ছাত্রলীগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে আপনাদের কপাল ভালো, অন্যথায় ছাত্রলীগই আপনাদের গদি ছাড়ার কারণ হবে। সময় থাকতে ছাত্রলীগের ‘বেপরোয়া ও লাগামহীন গতি’ টেনে ধরেন। গত মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের চার ছাত্রকে রাতভর নির্যাতনের প্রতিবাদে প্রক্টরের পদত্যাগসহ ৪ দফা দাবি এবং ২০১৮ সালের ২৩ জানুয়ারি নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার দুই বছর পূর্তি স্মরণে ১২ ছাত্রসংগঠনের জোট সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্রঐক্যের ব্যানারে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিলের আগে এই সমাবেশ করা হয়৷ সমাবেশে ডাকসুর ভিপি নুরুল হক অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রলীগের অপকর্মের সহযোগীর ভূমিকা পালন করে। হলগুলো থেকে অছাত্র-বহিরাগত উচ্ছেদে দীর্ঘদিন প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছি, আলোচনা করেছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত প্রশাসন কিছুই করেনি। তিনি বলেন, অসংখ্য ঘটনা ঘটেছে। ঘটনা ঘটার পর গণমাধ্যমসহ সর্বত্র আলোচনা তৈরি হয়, প্রশাসন লোকদেখানো তদন্ত কমিটি করে, সেই তদন্ত বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আলোর মুখ দেখে না। ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে দাসপ্রথা কায়েম করেছে। ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম করলে হলে থাকা যায়, প্রোগ্রাম না করলে থাকা যায় না—এই দাসপ্রথা সরকার পরিবর্তন হলেও নতুন যারা আসবে তাদের ছাত্রসংগঠনও হয়তো চালু রাখবে। সরকারের উদ্দেশে ভিপি নুরুল বলেন, আপনারা যদি ভেবে থাকেন যে আপনাদের সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগকে দিয়ে ছাত্রসমাজকে থামিয়ে দেবেন, স্বৈরাচারী শাসন দীর্ঘায়িত করার জন্য ছাত্রসমাজকে নিশ্চুপ রাখবেন, আপনারা ভুল করবেন। সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্রঐক্যের পক্ষ থেকে চার দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এগুলো হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ‘জঘন্যতম ও ব্যর্থতম’ প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানীর পদত্যাগ, প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলে বৈধ সিট দেওয়া ও অছাত্র-বহিরাগত বিতাড়ন করে হলগুলোতে ছাত্রলীগের সন্ত্রাস-দখলদারি বন্ধ করা, ২২ ডিসেম্বর ডাকসু ভবনে ছাত্রলীগ-মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের হামলা-ভাঙচুর ও গত মঙ্গলবার রাতে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার এবং নিরাপদ ও গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস বিনির্মাণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে গত মঙ্গলবারের নির্যাতনের ঘটনা তুলে ধরে সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্রঐক্যের নেতা নুরুল হক বলেন, জহুরুল হক হলের চারজন শিক্ষার্থীকে মেরে রক্তাক্ত করে হল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দলকানা প্রশাসনের প্রক্টরিয়াল বডির মাধ্যমে ছাত্রলীগ থানায় দিয়েছে৷ ওই চার ছাত্রের কোনো অপরাধ ছিল না। ছাত্রলীগ তাদের মারল আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের থানায় দিল। ছাত্রলীগ বলেছে, ওই চার ছাত্রশিবির করে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে আমরা জানতে পেরেছি যে ছাত্রলীগের মিছিল-মিটিং-প্রোগ্রামে নেতারা ক্যাম্পাসে র‌্যাকেট খেলেন, চা খান, সেই প্রটোকলে না আসায় শিবির অজুহাত দেখিয়ে তাদেরকে অমানবিকভাবে মারধর করেছে। ছাত্রলীগ যে ভিন্নমতের শিক্ষার্থীদের ওপর বিভিন্ন সময়ে হামলা চালায়, নানা অপবাদ দিয়ে মারধর করে, এটি নতুন কোনো ঘটনা নয়।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo