• রাজনীতি

রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে ১০ দফা সুপারিশ বিএনপির

  • রাজনীতি
  • ২৮ আগস্ট, ২০১৯ ২১:১৪:৫৪

রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে জাতীয় ঐক্য তৈরি ও বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রগুলোকে সঙ্গে নিয়ে মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগসহ সরকারকে ১০ দফা সুপারিশ দিয়েছে রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। বুধবার (২৮ আগস্ট) রাজধানীর হোটেল লেকশোরে আয়োজিত ‘প্লাইট অব রোহিঙ্গা অ্যান্ড দ্য রুল অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনার থেকে এ সুপারিশগুলো তুলে ধরা হয়। বিএনপির দেওয়া ১০ দফা সুপারিশের মধ্যে রয়েছে— জাতীয় ঐক্য তৈরি, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে তাদের নাগরিকত্ব, নিরাপত্তা, নিজের মাতৃভূমিতে অবাধ চলাচলের নিশ্চিতকরণ, বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রগুলোকে নিয়ে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ তৈরি করা, প্রত্যাবাসনের আগে ও পরে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মিয়ানমারের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে সুযোগ রাখা, রোহিঙ্গা ইস্যুকে কেন্দ্র করে যেন জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ তৈরি না হতে পারে, সে বিষয়ে সরকারের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া প্রভৃতি। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এই সরকারের কোনো নৈতিক অবস্থান নেই, তারা অনির্বাচিত সরকার। সুতরাং বিশ্বজনমত তৈরি করতে হলে সমগ্র জনগণকে সঙ্গে নিয়েই এই অভাবটা তাদের পূরণ করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘এই সেমিনারের মধ্য দিয়ে আমরা সরকারের কাছে পৌঁছাতে চাই, জনগণের কাছে পৌঁছাতে চাই, বিশ্বমানবতার কাছে পৌঁছাতে চাই। একইসঙ্গে আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে, জাতিসংঘকে, আন্তর্জাতিক বিশ্বকে আহবান জানাচ্ছি, যে অবস্থা তৈরি হয়েছে সেটাকে সমাধানের জন্য তারা তাদের ভূমিকা পালন করবে।’ ‘রোহিঙ্গাদের উসকে দিচ্ছে বিএনপি’— আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দেওয়া এমন বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবার পুরনো খেলা শুরু করেছেন, বিএনপিকে দায়ী করতে শুরু করেছেন এবং তিনি আমাকে দায়ী করেছেন যে, আমরা নাকি উসকে দিচ্ছি রোহিঙ্গাদের।’ ‘এটা সুইসাইডাল, এটা আত্মহননের কথা। আমরা মনে করি, এই ধরনের কথাবার্তা শুধু রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাধা হয়ে দাঁড়াবে, মিয়ানমারকে আরও শক্তিশালী করবে এবং সমস্যা আরও বৃদ্ধি করবে’— বলেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের স্থায়ীভাবে দেশে ফিরে জীবন-সম্পদ সম্ভ্রমে অখণ্ড নিরাপত্তা ও পূর্ণ নাগরিক অধিকার নিয়ে নিজ মাতৃভূমিতে বসবাস করতে পারে, সেই নিশ্চয়তা বিধানকল্পে বাংলাদেশসহ সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলোকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বলিষ্ঠ কূটনৈতিক উদ্যোগ নিতে হবে। জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।’ সরকারের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, ‘রোহিঙ্গাদেরকে ফিরিয়ে নিতে হলে অবশ্যই তাদের নিরাপত্তা, নাগরিকত্ব ও তাদের প্রত্যাবাসনে পরিবেশ তৈরি করতে হবে। সেটা সরকার পারেনি। এই সরকারের ব্যর্থতা, তাদের অনভিজ্ঞতা, নতজানু পররাষ্ট্রনীতি তাদেরকে যে এমন জায়গায় নিয়ে গেছে যে মিয়ানমারের ট্র্যাপের মধ্যে এই সরকার পড়ে গেছে।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের সসম্মানে দেশে ফেরার ব্যবস্থা করতে হবে। নাগরিকত্ব, নিরাপত্তা, চলাচলের স্বাধীনতা, বাড়ি-ঘর-সম্পত্তির ফিরে পাওয়ার গ্যারেন্টি চায় রোহিঙ্গারা— এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারকে শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে হবে। এজন্য দেশে একটি জাতীয় ঐক্যমত্য তৈরি করতে হবে। জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে আমাদের আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বন্ধু বাড়িয়ে মিয়ানমারের ওপর চাপ তৈরি করতে হবে।’ সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মইন খান, গণস্বাস্থ্য সংস্থার ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, সাবেক রাষ্ট্রদূত সিরাজুল ইসলাম, সাবেক সচিব এএইচএম মোফাজ্জল করীম, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী ও অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo