নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জে দেবীর বোধন ও ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে উৎসব মুখর পরিবেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রাণের উৎসব, শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হয়েছে। বুধবার (৯ অক্টোবর) সকাল ৬টায় মণ্ডপে মণ্ডপে বোধন আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে উৎসবের প্রথম দিন ষষ্ঠী পূজা শুরু হয়েছে। এছাড়াও শুরু হয়েছে চণ্ডীপাঠ। শুরু হয়ে গিয়েছে বিভিন্ন মন্ডপের উদ্বোধনও। দর্শনার্থীরা ইতিমধ্যেই ঠাকুর দেখতে বেড়িয়ে পড়ছেন। উৎসবমূখর পরিবেশের মধ্যেই মায়ের দর্শন করছেন ভক্তরা।
তাদের প্রত্যাশা, ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে একক হয়ে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গোৎসব পালন করবেন এবার। লোকনাথ পঞ্জিকা অনুযায়ী, ৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠী, ১০ অক্টোবর মহাসপ্তমী, ১১ অক্টোবর মহাষ্টমী ও ১২ অক্টোবর মহানবমী। এরপর ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে সমাপ্তি ঘটবে শারদীয় দুর্গোৎসবের। এর আগে, ২ অক্টোবর শুভ মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেবীপক্ষের সূচনা হয়। এরপর বোধনের মাধ্যমে দেবী দুর্গাকে জাগ্রত করা হয়।
ঠাকুর দেখতে নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন মন্ডপে দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন।
লিটন বিশ্বাস নামের একজন বলেন, মায়ের আগমনে এবার আমরা খুব আনন্দিত। সকাল থেকে বিভিন্ন মন্ডপে মন্ডপে ঘুরেছি। ভালো লেগেছে, সব গুলো প্রতিমাই সুন্দর করে গড়া হয়েছে। তবে কিছু কিছু মন্ডপ বেশী ভালো লেগেছে।তার মধ্যে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের পঞ্চমীঘাট এলাকায় সি আইপি অমল পোদ্দারের বাড়ির পূজা মন্ডপ খুবই সুন্দর ছিলো।
কাকুলী রানী নামের একজন পূজারিনী বলেন, আমাদের প্রত্যাশা থাকবে ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে আমাদের সনাতন ধর্মের দুর্গোৎসবটা জাতে ভালো ভাবে পালন করতে পারি।আমরা চাই দেশে শান্তি বিরাজ করুক।
দূর্গা পূজার আয়োজন নিয়ে দেওভোগ আখড়ার পুরোহিত অভিজিৎ চক্রবর্তী জানান, গতকাল বোধন গিয়েছে, মানে মাকে জাগ্রত করা। এটাকে অকাল বোধনও বলা হয়। আজকে সূর্যউদয়ের পর সকাল ৮ পর্যন্ত ছিলো ষষ্ঠী পূজার তিথী। এর মধ্যে দিয়ে মাকে যথাস্থানে বসিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শুরু করলাম। রাতে আজকে দূর্গা মাকে অধিবাস করানো হবে।
জেলায় এবার ২১৪ মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপন হবে বলে জানালেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন। তিনি বলেন"এবার ২১৪টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা হচ্ছে। ৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে পূজার কার্যক্রম শুরু। ১৩ অক্টোবর দশমীর মধ্য দিয়ে উৎসব শেষ হবে।
অপ্রীতিকর কোনও ঘটনা ঘটার শঙ্কা নেই উল্লেখ করে শিখন সরকার শিপন বলেন, দুর্গাপূজা ঘিরে বিএনপি, হেফাজতে ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীসহ রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের সহযোগিতা করছে। তাদের স্বেচ্ছাসেবক প্রত্যেকটি মণ্ডপে থাকবেন। এ ছাড়া পুলিশ, র্যাব, আনসার, সেনাবাহিনীসহ গোয়েন্দা শাখার নজরদারি থাকবে। ফলে অপ্রীতিকর ঘটনার শঙ্কা নেই। কারণ ৫ আগস্টের পর এখানে মন্দিরে হামলা হয়নি।
জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার জানান, নারায়ণগঞ্জে পূজা-মন্ডপে নিরাপত্তার জন্য সকল ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পুরো জেলায় সার্বিক পরিস্থিতি খুব ভালো। পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন ফোর্স দায়িত্বে আছেন। সেই সাথে বিভিন্ন সেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এখনও ঘটেনি। উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা উৎযাপিত হচ্ছে।
মন্তব্য ( ০)