দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ দিনাজপুরের সংসদীয় আসন ১ এর (বীরগঞ্জ- কাহারোল) সাবেক এমপি মনোরঞ্জন শীল গোপাল এবং আরো ২৭জন নেতাকর্মীর নামসহ শতাধিক জনের বিরুদ্ধে জোড়া হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। শিবির আখ্যা দিয়ে গত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সালাহ উদ্দিন এবং আসাদুল ইসলাম নামে কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল।
হত্যাকান্ডের ১০ বছর পর গতকাল ২৯ সেপ্টেম্বর রবিবার ওই বীরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন বীরগঞ্জের মোহনপুর ইউনিয়নের ভগিরপাড়া গ্রামের আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী মোছাম্মদ জহুরা খাতুন। তার কিশোর ছেলে সালাহ উদ্দিন এবং ছেলের বন্ধু আসাদুল ইসলামকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল অভিযুক্তরা।
মামলার বিবরনে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ৪ জানুয়ারী বিকেল ৪টার দিকে বাদীনি মোছাম্মদ জহুরা খাতুনের কিশোর বয়সী ছেলে সালাউদ্দিন (১৬) একই উপজেলার গনপৈত গ্রামে তার খালু দেলোয়ার হোসেনের বাড়ীতে বেড়াতে যায়। পরদিন ৫ জানুয়ারী সকালে নিজবাড়ীতে ফিরতি পথে তার বন্ধু সাহাডুবি উত্তরপাড়া গ্রামের আলিম উদ্দিনের আসাদুলের বাড়ীতে গিয়েছিল। দুপুর ১২টার দিকে দুই বন্ধু হাটাপথে বাড়ী উদ্যেশ্যে রওয়ানা দেয়। দুপুর ১টার দিকে শিবরামপুর ইউনিয়নের ভেলাপুকুর বাবুরহাট নামক স্থানে পৌছা মাত্রই তাদের পথরোধ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। শিবির শিবির চিৎকার করে তাদের উপর হামলা চালায় তারা। এসময় বেধড়ক পিটুনি এবং ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে দুই বন্ধু সালাউদ্দিন এবং আসাদুল ইসলাম। এসময় দুজনকে টেনে হিচড়ে আওয়ামী লীগ নেতা প্রিয় নাথের বাড়ীর সামনে রাস্তার উপর উভয়কে ফেলে রাখে হামলাকারীরা। স্থানীয় লোকজন উভয়কে মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে দেন। শারিরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন চিকিৎসক। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫ জানুয়ারী বিকাল ৫টার দিকে সালাউদ্দিন এবং পরদিন ৬ জানুয়ারী সকাল ৭টার দিকে প্রাণ হারায় আসাদুল ইসলাম।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, অভিযুক্ত প্রধান আসামি ক্ষমতাসীন দলের এমপি এবং অন্যান্যরা একই ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীর পদে থাকায় ন্যায় বিচার প্রাপ্তিতে অনিশ্চয়তা এবং মামলার করার মতো কোন অনুকুল পরিবেশ না থাকায় সময়মত মামলা করতে পারেনি ফরিয়াদি। বর্তমানে অনুকুল পরিবেশ থাকায় ন্যায় বিচার প্রাপ্তির আশায় বীরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলায় সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল এবং আরো ২৭জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৯০ থেকে ১০০জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
বীরগঞ্জ থানার ইনচার্জ মজিবুর রহমান জানান, এজাহার নামীয় আসামীদের মধ্যে বীরগঞ্জের সাতোর ইউনিয়নের প্রাণনগর গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে জাহের আলী (৩৫) কে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেছেন তারা।
মন্তব্য ( ০)