নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর জনজীবনে আস্তে আস্তে স্বাভাবিকতা ফিরতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যই জেলার বিভিন্ন উপজেলায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরেছে সাধারণ মানুষরা। রাস্তা-ঘাটে বেড়েছেমানুষ ও যানবাহনের চলাচল। বিশেষ করে সেনাবাহিনী ও বিজিবির টহল জনজীবনে অনেকটাই স্বস্তি এনেছে। এছাড়া জেলার বিভিন্ন থানা পাহারায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে বিএনপির নেতৃবৃন্দদেরও দেখা গেছে। আর কিছু দিনের মধ্যেই নওগাঁর পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা পুরোদমে মাঠ
পর্যায়ে ফিরবে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক।
শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় যে, জেলার রাণীনগর থানার বন্ধ প্রধান ফটকের সামনে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে বিএনপির নেতৃবৃন্দরা পুলিশ সদস্য ও থানার নিরাপত্তা প্রদানে পাহারায় রয়েছেন এবং সার্বক্ষণিক তারা নজর রেখে চলেছেন। গত ৫আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে রাণীনগর থানা ও থানায় কর্মরত সকল পুলিশ সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ব্যাপক ভ’মিকা রেখেছেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় বাসিন্দারা। দেশের এমন ক্রান্তিকালে সরকার পরিবর্তনের এমন সুযোগে কতিপয় দুর্বৃত্তরা সুযোগ পেয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠান, থানা প্রাঙ্গন, ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান ও বাসায় হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালানোর চেস্টা করলে তা কঠোর হাতে দমন করা হয়েছে বলে জানান উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বান মোজাক্কির হোসেন।
জ্যেষ্ঠ এই বিএনপি নেতা আরো বলেন আমরা যখনই সময় পাচ্ছি পুলিশ সদস্যদের খোঁজ-খবর নিচ্ছি। এছাড়া সার্বক্ষণিক নজরদারীতো অব্যাহত রেখেছি। এই দেশ আমাদের সকলের। দেশের প্রতিটি সম্পদ আমাদের। প্রতিটি স্থাপনা দেশের সাধারণ মানুষদের অর্থের মাধ্যমেই নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি মানুষের জানমালের নিরাপত্তা প্রদান করা আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। প্রতিহিংসার আগুনে কাউকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মারা অবশ্যই ভালো কাজ নয়। তাই আমরা বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের সকল নেতৃবৃন্দদের এমন অরাজকতা মূলক কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে এবং উপজেলার প্রতিটি এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে এবং কতিপয় দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে কাজ করতে কঠোর হুশিয়ারী প্রদান করেছি। আমি আশাবাদি সকলের প্রচেষ্টায় আমাদের উপজেলায় দ্রæতই শান্তিপূর্ণ স্বাভাবিক জীবন-যাপন ফিরে আসবে।
উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মোস্তফা ইবনে আব্বাস বলেন ক্ষমতার পালাবাদল হবেই। আর এই পালাবদলের মানে এই নয় যে যারা অন্যায় ও অত্যাচার করেছে তাদের প্রতি জুলুম করা। আমাদের নবীজির কাছে সকল মানুষই নিরাপদ ছিলেন। তাই গণঅভ্যুত্থানের পরই কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক উপজেলার সকল স্থানে শান্তি বজায় রাখতে মাঠ পর্যায়ের সকল নেতৃবৃন্দদের নির্দেশনা প্রদান করেছি।
ইতোমধ্যই আমরা দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার বিষয়ে মতবিনিময় করেছি। আমি আশাবাদি আমাদের সকলের প্রচেষ্টায় উপজেলার সকল স্থানে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় আছে এবং আগামীতেও থাকবে। রাণীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু ওবায়েদ বলেন আমরা স্থানীয়দের সহযোগিতায় নিরাপদে আছি। এখন পর্যন্ত কোন সমস্যার সৃষ্টি হয়নি।
থানার নিরাপত্তা প্রদানে ইতোমধ্যই ২০সদস্যের একটি সেনাবাহিনীর দল নিযুক্ত করা হয়েছে। আমরা পুলিশ সদস্যরা সেনাবাহিনীর সঙ্গে যৌথ টহলের মাধ্যমে উপজেলার শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার কাজ শুরু করেছি। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলেই পুরোদমে মাঠে নামবো। জেলা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক বলেন শুরু থেকেই নওগাঁয় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রয়েছে।
এখন পর্যন্ত জেলার কোন থানায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ইতোমধ্যই জেলার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সকল উপজেলার পুলিশ বাহিনী সেনাবাহিনীর সঙ্গে যৌথ টহল ও নানাবিধ কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছে। আস্তে আস্তে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করার প্রস্তুতি শুরু করেছে। আমি আশাবাদি আর কয়েকদিনের মধ্যেই পুরো দেশের সঙ্গে নওগাঁর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিও স্বাভাবিক হবে।
মন্তব্য ( ০)